ঢাকা : একজন মুমিনের জন্য রমজান মাসের প্রস্তুতি গুরুত্বপূর্ণ। যারা রমজানের তাৎপর্য সম্পর্কে সচেতন, তারা শাবান মাসের শুরু থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এমনকি তাদের কেউ কেউ শাবান মাসের আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। রমজান কড়া নাড়ছে। শাবানের শেষ সময় চলছে। রমজানকে সামনে রেখে নিজেকে প্রস্তুত করে নেওয়া ভালো।
একনিষ্ঠভাবে তওবা করা : তওবা করা সব সময় ওয়াজিব। তবে ব্যক্তি যেহেতু এক মহান মাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাই অনতিবিলম্বে নিজের মাঝে ও স্বীয় রবের মাঝে যে গুনাহগুলো রয়েছে এবং নিজের মাঝে ও অন্য মানুষের মাঝে অধিকার ক্ষুণ্ণের যে বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলো থেকে দ্রুত তওবা করে নেওয়া উচিত। যাতে করে সে পূত-পবিত্র মন ও প্রশান্ত হৃদয় নিয়ে এ মোবারক মাসে প্রবেশ করতে পারে এবং আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদতে মশগুল হতে পারেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আর হে মুমিনগণ তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তওবা কর; যাতে করে সফলকাম হতে পার। (সুরা আন-নুর, আয়াত: ৩১)
[219287]
বেশি বেশি করে দোয়া করা : অনেক আলেম ওলামা আছেন, তারা ৬ মাস আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন- যেন আল্লাহ তাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছান। রমজানের পর পাঁচ মাস দোয়া করতেন যেন আল্লাহ তাদের আমলগুলো কবুল করে নেন। তাই একজন মুসলিম তার রবের কাছে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া চাইবেন, যেন আল্লাহ তাআলা তাকে শারীরিকভাবে সুস্থ রেখে রমজান পর্যন্ত হায়াত দেন। তিনি আরও দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাকে নেক আমল করার জন্য সাহায্য করেন।
কোনো ওয়াজিব রোজা থাকলে তা থেকে মুক্ত হওয়া : আবু সালামাহ্ হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমি আয়েশাকে (রা.) বলতে শুনেছি যে, ‘আমার ওপর বিগত রমজানের রোজা বাকি থাকলে শাবান মাসে ছাড়া আমি তা আদায় করতে পারতাম না।’ (বুখারি, হাদিস : ১৮৪৯; মুসলিম, হাদিস : ১১৪৬)। হাফেজ ইবনে হাজার রাহিমাতুল্লাহ বলেন, ‘আয়েশার (রা.) শাবান মাসে কাযা রোজা আদায় পালনে সচেষ্ট হওয়া থেকে বিধান গ্রহণ করা যায় যে, রমজানের কাযা রোজা পরবর্তী রমজান আসার আগেই আদায় করে নিতে হবে।’ (ফাতহুল বারি : ৪/১৯১)
[219281]
রোজার মাসয়ালা-মাসায়েল জেনে নেওয়া এবং রমজানের ফজিলত অবগত হওয়া। যে কাজগুলো রমজান মাসে একজন মুসলমানের ইবাদত বন্দেগিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, সেগুলো দ্রুত সমাপ্ত করার চেষ্টা করা। স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসে রমজানের মাসয়ালা-মাসায়েল আলোচনা করা এবং ছোটদেরও রোজা পালনে উদ্বুদ্ধ করা।
কোরআন তেলাওয়াত করা : সালামাহ ইবনে কুহাইল বলেছেন, ‘শাবান মাসকে তেলাওয়াতকারীদের মাস বলা হতো’। শাবান মাস শুরু হলে আমর ইবনে কায়েস তার দোকান বন্ধ রাখতেন এবং কোরআন তেলাওয়াতের জন্য অবসর নিতেন। শাবানের যে কদিন বাকি আছে প্রতিদিন অল্প করে হলেও, কোরআন তেলোয়াত করার অভ্যাস করতে পারেন।
এমটিআই