ঢাকা : অত্যন্ত বরকতময় মাস রমজান। এ মাস ইবাদতের মৌসুম। এ পুণ্যময়ী মাসের শেষ দশকের বেজোড় রজনীতে রয়েছে এমন একটি রাত যা খুবই মহামূল্যবান। খুবই দামি। সেটি হলো লাইলাতুল কদর বা শবেকদর। কোরআনের ভাষায় যা হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আপনি কি জানেন, শবেকদর কী? শবেকদর হাজার মাস থেকে উত্তম।’ -(সুরা কদর ২-৩)
শবেকদর কোনো দিনের জন্য নির্দিষ্ট নয়। যদিও বর্তমানে আমাদের দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ছাব্বিশে রমজান দিবাগত রাতে জাঁকজমকের সঙ্গে শবেকদর পালন করা হয়। কিন্তু এভাবে দিনতারিখ নির্ধারণ করে শবেকদর পালনের বিষয়টি হাদিসে নেই। বরং হাদিসে উল্লেখ আছে যে, ‘এটি রমজান মাসের শেষ দশকের যেকোনো বেজোড় রজনীতে হবে। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা রমজান মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করো।’ -সহিহ বুখারি, হাদিস ২০১৭
[220339]
অবশ্য কোনো কোনো হাদিসে দিনতারিখ সম্পর্কে কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তবে নিশ্চিত করে বলা হয়নি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা তা (লাইলাতুল কদর) রমজান মাসের শেষ দশ দিনে অনুসন্ধান করো। লাইলাতুল কদর (শেষ দিক থেকে হতে গণনায়) নবম, সপ্তম বা পঞ্চম রাতে অবশিষ্ট থাকে।’ (সহিহ বুখারি ২০২১)
শবেকদরের ফজিলত। যে রাত হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ইবাদতের প্রতিদান কী পরিমাণ সেটা মহান আল্লাহই ভালো জানেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ইমানের সঙ্গে ও সওয়াব লাভের আশায় রোজা পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়। -সহিহ বুখারি, হাদিস ২০১৪
মহান আল্লাহ আমাদের সবার ভাগ্যে শবেকদর নসিব করুন। যেন আমরা ওই দিনের আমল দ্বারা ইহকাল ও পরকালের জীবনে উপকৃত হতে পারি।
এমটিআই