ঢাকা : কয়েক বছর আগেও কেউ তেমন চিনত না এলাকাটি। জানত না এখানকার অবস্থা। এখন এই এলাকাকেই বিশ্ববাসী জানছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গেম চেঞ্জার হিসেবে। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার এই দ্বীপের একটি ইউনিয়ন মাতারবাড়ী বর্তমানে খুবই পরিচিত নাম। এখানেই হচ্ছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প।
কক্সবাজারের একটি দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী। এখানকার একটি ইউনিয়ন মাতারবাড়ী, যা মূল উপজেলা থেকেও বিচ্ছিন্ন। এখানেই আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, যা যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। এতে গতি বাড়বে দেশের অর্থনীতির।
এখনো পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু না হলেও প্রকল্পটি ইতোমধ্যে আলো ছড়াতে শুরু করেছে দুর্গম অঞ্চলটিতে।
প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ কাজ করছে বিদ্যুৎ প্রকল্পে। বদলে যাচ্ছে এখানকার জীবনযাত্রা। একটা সময় ছিল না কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। পাওয়া যেত না চায়ের দোকান। বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর সেখানেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য খাবার হোটেল। পিছিয়ে পড়া অঞ্চলটিতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। বিদ্যুৎ প্রকল্পের পাশাপাশি এই দ্বীপ অঞ্চলেই নির্মাণ হচ্ছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর, যা মাতারবাড়ীর উন্নয়নের গতি আরো বাড়ি দিয়েছে।
একটা সময় কক্সবাজার থেকে দীর্ঘ সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে যেখানে যেতে হতো, সেখানেই হবে চার লেনের রাস্তা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েহটি বড় বড় রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। অত্যন্ত দুর্গম মাতারবাড়ী ইউনিয়নে প্রায় ৮০ হাজার লোকের বসবাস।
এর পূর্ব পাশে কোহেলীয়া নদী, উত্তরে উজান টিয়া নদী এবং পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর। লবণ ও মাছ চাষই ছিল এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের চিত্র ছিল ভয়াবহ। শিক্ষা-দীক্ষায় দেশের অন্যান্য জনপদ থেকে ছিল ব্যাপক পিছিয়ে। অন্ধকারাচ্ছন্ন সে এলাকায় এখন দিন-রাত দেখা যাচ্ছে আলোর ঝলকানি।
মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাতারবাড়ীর উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছেন। এখানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে। রাস্তাঘাটের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। আগে এখানে এক কাপ চাও পাওয়া যেত না, এখন আমাদের এখানকার বাসিন্দারা হোটেলে বসে আয়েশ করে কফি খায়। সবই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর।
দুর্গম অঞ্চলটিতে চলমান দুই মেগা প্রকল্পের মধ্যে মাতারবাড়ী ২৬০০ মেগাওয়াট আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। পাশাপাশি বাস্তবায়নাধীন এই দুই মেগা প্রকল্পের কিছু অংশ মাতারবাড়ীর সঙ্গে ধলঘাটা ইউনিয়নেও পড়েছে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্যোগ নিলে এ অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে। পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (ইআইএ) প্রতিবেদন অনুমোদন হয় পরের মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন পায় ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ প্রকল্প অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নের ১৬০৫ একর জমির ওপর চলছে ১২০০ মেগাওয়াটের আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের মহাযজ্ঞ।
দেশের বাইরে থেকে জাহাজে প্রকল্পের মালামাল নিয়ে আসার জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি স্থায়ী জেটি, যেখানে সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা একটি জাহাজ ভিড়েছে, যা মাতারবাড়ীতে আসা প্রথম জাহাজ। আরো একটি স্থায়ী জেটির কাজ চলমান। এতে ব্যবহার হচ্ছে ২০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন হ্যামার।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের কয়লা পোড়ানোর জন্য দুটি বয়লারের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে এক নম্বর বয়লারের পাইলিং শেষ করে বেজমেন্ট ঢালাই দেয়া হয়েছে। দুই নম্বর বয়লারের পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বেজমেন্ট ঢালাইয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। কয়লা পোড়ানোর ধোঁয়া যেন পরিবেশের কম ক্ষতি করে সেজন্য তৈরি করা হচ্ছে ২৭৫ মিটার উঁচু চিমনি। তবে এ চিমনি এখনো কাঠামোগত রূপ পায়নি।
বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কয়লা পোড়ানোর ফলে যে ছাই তৈরি হবে তা মজুতের জন্য ২৫৫ হেক্টর জমিতে কূপ খনন করা হয়েছে। সেই কূপে পানি দেখা যায়। এই পানির নিচেই ২৫ বছর ধরে পোড়ানো কয়লার ছাই মজুত করে রাখা যাবে। সম্পূর্ণ দেশীয় উপায়ে ছাই মজুতের এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া কয়লা গুঁড়া করার কোলমিল, কনভেয়ার বেল্ট (কয়লা পাওয়ার প্ল্যান্টে নিয়ে আসার বেল্ট), ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, ওয়াটার প্ল্যান্ট, কেমিক্যাল লুজিং প্ল্যান্টসহ সব প্ল্যান্টের পাইলিংয়ের কাজ শেষের পথে। জাহাজ থেকে পণ্য খালাস ও প্রকল্পের বিভিন্ন অংশে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ৯৬ চাকার চালকবিহীন ট্রাক।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) আওতায় বাস্তবায়নাধীন মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে প্রথম ইউনিট এবং ওই বছরের জুলাইয়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২৬ সালের জুলাইয়ে ওয়ারেন্টি পিরিয়ড সমাপ্তির লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।
জাপানের সুমিতোমো করপোরেশন, তোশিবা করপোরেশন ও আইএইচআই করপোরেশনের কনসোর্টিয়ামকে মাতারবাড়ী ২৬০০ মেগাওয়াট আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ইপিসি ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের অধীনে ১৫টির অধিক সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে সাগরের কোলঘেঁষে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দর ২০২৬ সালে চালু হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে এর ফিজিবিলিটি ও প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে। বন্দর নির্মাণে জাপানের নিপ্পন কোই নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরামর্শক চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বন্দরের অনেক কাজ এগিয়ে নিয়েছে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি।
বিদ্যুৎ প্রকল্পের অর্থায়নে ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ, ২৫০ মিটার প্রস্থ এবং ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেল। প্রকল্পের সীমানা ঘেঁষে সমুদ্রের পাড়ে চ্যানেলের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বন্দরের জন্য চ্যানেল তৈরিতে বিদ্যুতের প্রকল্পের করা ২৫০ মিটারের সঙ্গে আরো ১০০ মিটার চওড়া চ্যানেল, পৃথক জেটি নির্মাণ ও কনটেইনার রাখার স্থান হলে গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ আরো অনেক সহজ হবে।
এর আগে জাহাজ চলাচলের পথ নির্দেশনার জন্য ছয়টি বয়া চ্যানেল তৈরি করা হয়। পরে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটি বন্দরে রূপ দিতে গভীর সমুদ্রবন্দর নামে প্রকল্প নেওয়া হয়। মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, দুই ধাপে বন্দরের কাজ হবে। এর প্রথম ধাপে একটি কনটেইনার টার্মিনাল এবং বহুমুখী টার্মিনাল নির্মাণ হবে। চাহিদার আলোকে এটা আরো বাড়তে পারে। বন্দরের সঙ্গে চার লেনের একটি সড়ক নির্মাণ হবে, যেটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যুক্ত হবে।
বর্তমানে দেশে যে কয়েকটি সমুদ্রবন্দর রয়েছে তার কোনোটিই গভীর সমুদ্রবন্দর নয়। ফলে ডিপ ড্রাফটের ভেসেল এসব বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারে না। ডিপ ড্রাফট ভেসেলের জেটি সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে মাতারবাড়ীতে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ বিষয়ে অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
একটি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নয়নের পাশাপাশি আধুনিক কনটেইনারবাহী জাহাজ, খোলা পণ্যবাহী জাহাজ ও তেলবাহী ট্যাঙ্কারের জেটিতে ভেড়ার সুযোগ সৃষ্টি করা, চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমানোর সঙ্গে সঙ্গে দেশের ক্রমবর্ধমান আমদানি-রপ্তানি চাহিদা পূরণ এবং মাতারবাড়ী ও মহেশখালী অঞ্চলে গড়ে ওঠা শিল্পাঞ্চলগুলোতে পণ্য পরিবহনে সহায়তা করাই এ বন্দর প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য।
জাইকার সার্ভে অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরে একটি জাহাজ সর্বোচ্চ দুই হাজার টিইইউএস কনটেইনার নিয়ে ভিড়তে পারে। অথচ পার্শ্ববর্তী কলম্বো, জওহরলাল নেহরু, করাচি ও চেন্নাই বন্দরে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ ভিড়তে পারে। এ বিবেচনায় মাতারবাড়ীতে অধিক ড্রাফটের জাহাজের সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কনটেইনার পরিবহনে বাংলাদেশের জন্য উত্তম বিকল্প।
মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি টার্মিনাল থাকবে। এসব টার্মিনালে ১৬ মিটার ড্রাফটের ৮ হাজার টিইইউএস কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দরে ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের বেশি জাহাজ ভিড়তে পারে না। ফলে মাদার ভেসেলগুলো বন্দরের জেটিতে আসতে পারে না। ফলে ফিডার জাহাজে করে কনটেইনার আনা-নেয়া করতে হয়। দেশে প্রতিদিন ৩৫০০ থেকে ৩৮০০ টিইইউএস আমদানি পণ্য কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়ে থাকে।
মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরে ১৬ মিটার গভীরতার জন্য মাদার ভেসেল ভেড়ার সুযোগ থাকায় একসঙ্গে আট হাজার কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে। ফলে মাতারবাড়ীর এ বন্দর থেকে ফিডার ভেসেলের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য বন্দরে কনটেইনার পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসবের জন্য বন্দরে বহুমুখী টার্মিনাল (১১ দশমিক ৮ হেক্টর, ৩০০ মিটার জেটির দৈর্ঘ্য) এবং কনটেইনার টার্মিনাল (২০ দশমিক ২ হেক্টর, ৪৬৯ মিটার জেটির দৈর্ঘ্য) নির্মাণ করা হবে। প্রথমে দুই লেন এবং সর্বশেষ চার লেনের ২৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে।
মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অংশের প্রকল্প পরিচালক মীর জাহিদ হাসান বলেন, কাজের অগ্রগতি এই মুহূর্তে শতাংশে বলা যাবে না। বন্দরের কাজটা তিনটা ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে প্রকল্পটি কনসালট্যান্টরা ডিজাইন করবে।
অর্থাৎ, ওখানে যে অবকাঠামোগুলো হবে সেগুলোর নকশা প্রণয়ন করবে তারা। দ্বিতীয় ভাগে দরপত্র আহ্বান করা হবে। তৃতীয় ভাগে মূল অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের নকশা তৈরির কাজই চলবে। কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর।
তারা কাজ শুরু করেছে ২ নভেম্বর থেকে। বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে জাপানের নিপ্পন কোইর নেতৃত্বে মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে রয়েছে নিপ্পন কোইসহ জাপানের তিনটি এবং বাংলাদেশের দুটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের দুটি হলো নিপ্পন কোই বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্টস এবং ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্ট (ডিডিসি)।
এই পাঁচ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ ২৩৪ কোটি টাকার পরামর্শক চুক্তি হয়েছে। তারা ডিজাইন-ড্রয়িং করবে, টেন্ডারের কাজ করবে, যখন অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হবে সেটা সুপারভিশন মনিটরিংও করবে তারা। ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত তারা কাজ করবে।
২০২২ সালের শেষ দিকে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান হবে। ডিজাইন হলে এর ভিত্তিতে টেন্ডার ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা হবে। তারপর দরপত্র আহ্বান হবে, সেগুলো মূল্যায়ন হবে, চুক্তি হবে। এসব শেষ করে ২০২২ সালের জুলাই থেকে আশা করছি মাঠে কাজ শুরু হবে। ওই বছরের শেষ দিকে হয়তো আমাদের কাজ দৃশ্যমান হতে শুরু করবে।
তিনি আরো বলেন, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার চ্যানেল খনন করা হয়েছে। আমাদের প্রকল্পের আওতায় আরো ১০০ মিটার বাড়িয়ে মোট সাড়ে তিনশ মিটার চওড়া করা হবে। আমরা ১০০ মিটার বাড়াব, এটাও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় হবে। তাদের সঙ্গে আমাদের একটা চুক্তি আছে। এই ১০০ মিটার ওদের কন্ট্রাক্টর দিয়েই করানো হবে। পরে তারা আমাদের কাছে চ্যানেলটা হস্তান্তর করবে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই