বার্সার মাঠে রিয়ালের দাপুটে জয়

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২০, ১০:৪৬ এএম

ঢাকা : খেলাটা বার্সেলোনার মাঠ ন্যু ক্যাম্পে। মেসির নিজের মাঠ। এল ক্ল্যাসিকো মানেই মেসির জ্বলে ওঠা। কিন্তু ন্যু ক্যাম্পে আজ বলতে গেলে পুরোপুরি অনুজ্বল ছিলেন মেসি। নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। মাঝে-মধ্যে বল নিয়ে দু-একটি টান দিয়েছেন ঠিকই; কিন্তু বার্সেলোনাকে জেতানোর মত কোনো খেলাই দেখাতে পারলেন না তিনি।

মেসি অনুজ্বল মানে তো বার্সাও অনুজ্বল। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে বল পজেশনে হয়তো এগিয়ে ছিল বার্সা। কিন্তু তাদের খেলায় মন ভরলো না কারো। অনুজ্বল তো বটেই, অগোছালো খেলার ফলে নিজেদের মাঠ ন্যু ক্যাম্পেই রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ৩-১ গোলে পরাজয় বরণ করতে হলো রোনাল্ড কোম্যানের শিষ্যদের।

খেলার শুরুতে মাত্র তিন মিনিটের দুর্দান্ত দুটি আক্রমণ। এই দুই আক্রমণেই পরাস্ত হলেন রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার দুই গোলরক্ষক। দু’দলই হজম করলো দুটি গোল। ১-১ গোলে সমতা নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করে এল ক্ল্যাসিকোর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয়ার্ধে হলো আরও দুটি গোল। এই দুটিই করলো রিয়াল মাদ্রিদ।

মৌসুমের প্রথম এল ক্ল্যাসিকো গড়ালো বার্সার হোম ভেন্যু ন্যু ক্যাম্পে। তবে শুরু থেকে রিয়ালের বিপক্ষে চেপে বসতে পারেনি লিওনেল মেসি এবং আনসু ফাতিরা। রোনাল্ড কোম্যান যে পজিশনে দল সাজিয়েছেন, তাতে করে উল্টো রিয়াল মাদ্রিদই প্রথমে চেপে বসেছে বার্সার ওপর।

যদিও গোল হজম করার পর খুব দ্রুতই ট্র্যাকে ফিরে এসেছে তারা। মূলতঃ তরুণ ফুটবলার আনসু ফাতির ক্ষিপ্র গতির কারণেই সমতায় ফিরতে পেরেছে বার্সা।

ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় করিম বেনজেমার পাস থেকে বল পেয়ে দারুণ এক প্লেসিং শটে গোল করেন রিয়াল মাদ্রিদের ফেডেরিকো ভালভার্দে।

এরপর তিন মিনিট পরই, ৮ মিনিটের মাথায় মাঝ মাঠ থেকে লেফট উইংয়ে বল ভেসে আসলে নাচোকে পেছনে ফেলে নিয়ন্ত্রণ নেন জর্দি আলবা। বলটাকে টেনে নিয়ে বক্সের মাঝ বরাবর ক্রস করেন তিনি। দ্রুত এগিয়ে আসা আনসু ফাতি পা ঠেকিয়ে সেটিকে জড়িয়ে দেন রিয়ালের জালে।

এরপর প্রথমার্ধের বাকি অংশে আক্রমণ-পাল্ট আক্রমণে খেলা চললেও কেউ গোল করতে পারেনি। যদিও, দু’দলই বেশ কিছু সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু সেগুলো আর কারো জাল খুঁজে পায়নি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালায় বার্সা। রিয়াল খেলছিল পাল্টা আক্রমণে। যার ধারাবাহিকতায় ৫৯ মিনিটে লেফট উইংয়ে সার্জিনো ডেস্ট করেন হ্যান্ডবল। টনি ক্রুস ফ্রি কিক নিলে বক্সের মধ্যে ক্লেমেন্ট লেংলেট জার্সি টেনে ধরেন সার্জিও রামোসের।

যে কারণে রামোস রেফারির কাছে আবেদন জানান ভিএআরের। শেষ পর্যন্ত রেফারি ভিএআর দেখে লেংলেটকে হলুদ কার্ড দিলেন। সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ৬৩ মিনিটে স্পট কিক নেন সার্জিও রামোস। সহজেই বল জড়িয়ে যায় বার্সার জালে। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ।

৮৫ মিনিটেই তিনবার নিশ্চিত গোল থেকে বার্সাকে বাঁচালেন গোলরক্ষক নেতো। প্রথমবার টনি ক্রুসের অসাধারন এক শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। এরপর ফিরতি বলে আবারও শট নেন ক্রুস। সেটাও কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নেতো।

কর্নার কিক নেন ক্রুস। সেখান থেকে ভেসে আসা বল বক্সের বাম প্রান্তে পেয়ে যান রামোস। বাম পায়ে শট নেন তিনি। সেই শট থেকেও দলকে রক্ষা করেন নেতো।

কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। রিয়ালের সম্মিলিত আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারেনি বার্সা। ৯০তম মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের বল ঠেকাতে গিয়ে গোলরক্ষক নেতো পড়ে যান। ফিরতি বল রদ্রিগো নিয়ে পাস দেন মদরিচকে।

বক্সের সামনেই গোলরক্ষক এবং দু’জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ফাঁকা পোস্টে বার্সার জালে বল জড়িয়ে দেন মদরিচ। হয়ে গেলো ৩-১। এই ব্যবধান নিয়েই শেষ পর্যন্ত ন্যু ক্যাম্প ছেড়ে গেলো রিয়াল মাদ্রিদ।

বার্সাকে হারিয়ে ৬ ম্যাচ থেকে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে গেলো রিয়াল। সমান ম্যাচে ১১ পয়েণ্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিয়াল সোসিয়েদাদ। ৫ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা রয়েছে ১০ নম্বরে।

সোনালীনিউজ/এএস