ঢাকা : ঘনিয়ে আসছে টাইগারদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সময়। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে সিরিজ শুরু করবে টিম বাংলাদেশ। কাঙ্ক্ষিত দ্বিপক্ষীয় এ সিরিজ আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে বিসিবি। জাতীয় দল নির্বাচকরা দল গোছানোর কাজে হাত দিয়েছেন আরো আগে। টেস্ট স্কোয়াডে পরিবর্তনের সুযোগ কম। করোনার কারণে মাঠে খেলা না থাকায় নতুনদের দেখার সুযোগ হয়নি। তাই চোট সমস্যা না থাকলে পূর্বের তালিকায় খুব একটা কলম চালাতে হবে না নির্বাচকদের।
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও হাবিবুল বাশারকে চাপ যা নিতে হবে ওয়ানডে দল বানাতে গিয়ে। এই সংস্করণে পুলের ক্রিকেটারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যেখানে মাশরাফি বিন মুর্তজার মতো সিনিয়র পেসারও রয়েছেন। টাইগার সাবেক অধিনায়ক এবার আর ‘অটো চয়েস’ নন। ওয়ানডে স্কোয়াডে জায়গা পেতে জুনিয়র সতীর্থদের সঙ্গে রীতিমতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে তাকে। ওয়ানডে স্কোয়াডে পেস বোলিং ইউনিটের পুলে রয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আল আমিন হোসেন, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শফিউল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম। বর্তমান ও ভবিষ্যতের ওয়ানডে দলের পেস ইউনিটকে লিড দেবেন তারা।
জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর পরিকল্পনা আবার ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ঘিরে। বিসিবির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাশরাফির মতো সিনিয়র ক্রিকেটারকে এই পরিকল্পনায় রাখেননি কোচ। যে কারণে জাতীয় দল নির্বাচকরা পড়ে গেছেন উভয় সংকটে। কারণ তারা জানেন, মাশরাফি ফিট থাকলে খেলার যোগ্যতা রাখেন।
বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খানের বিশ্বাস, ফিট থাকলে স্কোয়াডে জায়গা করে নেবেন দেশের সবচেয়ে সফল ওয়ানডে অধিনায়ক, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি মাশরাফি ফিট থাকলে খেলা উচিত। কিন্তু তাকে নেওয়া না নেওয়া নির্বাচকদের ব্যাপার। কারণ দল নির্বাচনে আমার কোনো ভূমিকা থাকে না।’
হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের শুরু থেকে খেলতে পারেননি মাশরাফি। টুর্নামেন্টের শেষদিকে জেমকন খুলনায় যোগ দিয়ে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। জাতীয় দলের হোম সিরিজে থাকার দাবিটাও জোরালো হয়েছে ম্যাচজীয় পারফরম্যান্সে। বঙ্গবন্ধু কাপের ফাইনাল ম্যাচের বিরতিতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছে তাই জানতে চাওয়া হয়েছিল উইন্ডিজ সিরিজে নড়াইল এক্সপ্রেস থাকবেন কি না। উত্তরে নির্বাচকদের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছেন বোর্ড সভাপতি।
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ওয়ানডে দলে মাশরাফির থাকা না থাকা নিয়ে কৌতূহল ততই বাড়ছে। বিসিবির নির্বাচকরাও মাশরাফির ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারছেন না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির একজন পরিচালক বলেন, ‘মাশরাফি এখন আর অধিনায়ক নেই। তবে দেশের জন্য সে অনেক কিছু করেছে। জাতীয় দল থেকে তার বাদ পড়াটা সুন্দর দেখায় না। আবার এটাও দেখতে হবে, দেশের স্বার্থে আবেগ মূল্যহীন। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বিসিবি ও মাশরাফি বসে একটা সিদ্ধান্ত নিলে ভালো করবে। তা না হলে তিন মাস পর পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।’
সমস্যা এ জায়গাতেই। বিসিবি বা মাশরাফি কোনো পক্ষকে উদ্যোগী হতে দেখা যাচ্ছে না। যদিও মাশরাফি খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েই রেখেছেন। অন্যদিকে তাকে নিয়ে বিসিবিরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তাই তো বোর্ডের একজন কর্মকর্তা কথা প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘মাশরাফির জন্য নেতিবাচক তার বয়স।’ নড়াইল এক্সপ্রেসের বয়স এখন ৩৭ বছর পার করে ৩৮-এ।
সোনালীনিউজ/এমটিআই