ঢাকা: গতকাল লিওনেল মেসির বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে অবধারিতভাবেই প্রশ্নটি এল, বার্সেলোনা কেন আপনাকে ছেড়ে দিল? আসলে কী হয়েছিল ক্লাব এবং আপনার মধ্যে।
উত্তরে মেসি অকপটে বলে দেন, ক্লাবের ভেতরে কী হয়েছে আমি বলতে পারছি না। লাপোর্তা বলেছেন, চুক্তি নবায়ন হয়নি লা লিগার নিয়মের কারণে।
আমি শুধু এতটুকু বলতে পারি, আমি এখানে থাকার জন্য যা কিছু করা সম্ভব সব করেছি। থাকতে চেয়েছি আমি। গত বছর চাইনি, সেটা বলেছিও। এ বছর আমি থাকতে চেয়েছি, কিন্তু পারিনি।
মেসি আরো বলেন, আমি ভেবেছিলাম সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে, সব বিষয়ে সম্মতি হয়ে গেছে। এরপর একেবারে শেষ মুহূর্তে জানা গেল লা লিগার নিয়মের কারণে চুক্তি নবায়নকে আনুষ্ঠানিক করা সম্ভব হচ্ছে না।
অথচ এর আগে যে কোনোভাবে মেসিকে ধরে রাখার ঘোষণা দেন বার্সেলোনার সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। এমন অঙ্গীকার শুনে করোনা সংক্রমণের মধ্যেও সভাপতি নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন বার্সেলোনার সদস্যরা। মেসিতে ভর করে অনায়াসে জয় পেয়েছেন লাপোর্তা। কিন্তু মার্চ মাসে দেওয়া কথা আগস্টেই ভেঙে ফেলেছেন। শত চেষ্টাতেও মেসিকে ধরে রাখা যায়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল বার্সেলোনাকে বিদায় বলে দিয়েছেন মেসি।
মেসির বিদায়ের পর বার্সার এক কর্মকর্তার ধারণা, মেসিকে যেতে দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের ইচ্ছা পূরণ করার সুযোগ করে দিয়েছেন লাপোর্তা। সাদাচোখে বার্সেলোনার বর্তমান বোর্ডের কোনো দোষ নেই। কারণ, তারা মেসিকে ধরে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছেন।
একের পর এক খেলোয়াড়কে বিক্রি বা ধারে পাঠানো হয়েছে। অনেক খেলোয়াড়কে বিক্রি করার চেষ্টা করা হয়েছে। মেসিকে বুঝিয়ে তার বেতন অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু এসব করেও লা লিগার বেঁধে দেওয়া বেতনকাঠামোর নির্ধারিত সীমার নিচে নামানো যায়নি বার্সার বেতন।
নাভারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইএসই ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের প্রফেসর ইয়োপিস খুবই হতাশ হয়েছেন লাপোর্তার ওপর। এক খোলা চিঠিতে নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
বলেছেন, মেসিকে চলে যেতে দিয়ে তিনি রিয়াল মাদ্রিদকে সহযোগিতা করেছেন। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও কৌশল বিশেষজ্ঞ ইয়োপিসের ধারণা, রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন লাপোর্তা। চাইলে নাকি মেসিকে ধরে রাখার ব্যাপারে আরও চেষ্টা করতে পারত বার্সেলোনা।
হোয়ান লাপোর্তাকে উদ্দেশ করে লেখা চিঠিতে ইয়োপিসের বলেন, ‘সুপার লিগ শুরু হলে দেখব মেসিকে ছেড়ে দেওয়াটা যৌক্তিক ছিল কি না। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের ফলে পিএসজির শক্তি বাড়ানো হলো। এবং এমবাপ্পেরও মাদ্রিদে (রিয়াল) যাওয়ার পথ সহজ করে দেওয়া হলো। এটাই তো ফ্লোরেন্তিনোর নিখুঁত পরিকল্পনা। ইতিহাস তোমাকে মনে রাখবে মেসিকে ছাঁটাই করা সভাপতি হিসেবে।
সোনালীনিউজ/এআর