ঢাকা: ক্রিকেটে ক্রমাগতই বাড়ছে ‘অর্থের ঝনঝানানি’। ফলে খেলাটির প্রতি আগ্রহ আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। ধীরে ধীরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন দেশ। প্রতিযোগিতার কারণে ক্রিকেটের অনেক নবীন দেশ খেলোয়াড় যোগাড় করছে পুরনো ক্রিকেট দল থেকে। তাদের লোভনীয় প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও ছাড়ছেন নিজ দেশ। জেনে নিন এমন সাতজন ক্রিকেটারের কথা...
১. ভান ডার মারউই
দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা অলরাউন্ডার হলেন ভান ডার মারউই। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নর্দার্নস ও টাইটান্স, আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ব্রিসবেন হিট, ক্যারিবীয় ক্রিকেটে সেন্ট লুসিয়া জোকস এবং ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।
‘দ্য বুলডগ’ নামে পরিচিত মারউই ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রোটিয়াদের হয়ে খেলেছেন। এরপর ২০১৫ সালে ডাচ পাসপোর্ট পাওয়ার পর নেদারল্যান্ডে চলে যান। ২০১৫ সালের আইসিসি বিশ্ব টি-টোয়েন্টি বাছাইপর্বে নেদারল্যান্ডের জার্সিতে খেলেছেন তিনি। এছাড়াও, ২০১৬ সালের আইসিসি বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতেও তিনি একই দলের হয়ে অংশ নেন।
২. ডেভিড ওয়াইজ
ডেভিড ওয়াইজ প্রোটিয়াদের একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। যিনি আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২০১৬ সংস্করণে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেছিলেন। এমনকি তিনি আইপিএল, বিপিএল, পিএসএল, সিপিএলের মতো ফ্রাঞ্চাইজ লিগগুলো মাতিয়েছিলেন।
তিনি কলপ্যাক চুক্তি স্বাক্ষর করে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। এখন তিনি নামিবিয়ার খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফেরার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। তাকে নামিবিয়ার জার্সিতে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ -২০২১ এর কোয়ালিফাইং রাউন্ডে খেলতে দেখা যাবে।
৩. রাস্টি থেরন
দক্ষিণ আফ্রিকার সাদা বলের ক্রিকেটে ডানহাতি ফাস্ট বোলার ছিলেন হুয়ান রাস্টি থেরন। প্রোটিয়া দলে নিয়মিত মুখ না হলেও তিনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট টিম ওয়ারিয়র্সের অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার ছিলেন। তিনি আইপিএল এবং সিপিএলের মতো প্রথম সারির ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও খেলেছেন। তবে হাঁটুর ইনজুরির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকায় তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার দীর্ঘ করতে পারেননি।
প্রোটিয়াদের হয়ে ২০১০ সালে অভিষেক হওয়ার পর চারটি ওয়ানডে ও ৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন এ ডানহাতি পেসার। দুই ফরম্যাটেই উইকেট সংখ্যা ১২টি। তবে টেস্ট ম্যাচে তার খেলার সৌভাগ্য হয়নি। পরবর্তিতে, থেরন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিনিধিত্বও করেছেন তিনি।
৪. উইলিয়াম বয়েড র্যাঙ্কিন
বয়েড র্যাঙ্কিন তার ক্যারিয়ারে দুইবার দল বদল করেছেন। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী ওয়ানডে অধিনায়ক ইয়ন মরগানের মতো তিনিও প্রথমে আয়ারল্যান্ডে ক্যারিয়ার শুরু করেন। তারপর ইংল্যান্ড দলের হয়ে খেলেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনি টেস্টে ইংল্যান্ড দলে অভিষেক হয় তার। এরপর আবারো আয়ারল্যান্ডে ফিরে যান।
বয়েডের ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু হয় আয়ারল্যান্ডের জার্সিতে। ২০০৭ সালে বারমুডার বিপক্ষে কেনিয়ার নাইরোবিতে আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগে অভিষেক হয় তার। এরপর থেকে নিজের জন্মভূমির হয়ে ৫৭টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
৫. এড জয়েস
ইংল্যান্ড থেকে আয়ারল্যান্ডে গিয়েছিলেন জয়েস। জয়েস একবার ইংল্যান্ডের হয়ে ওপেনিংও করেছিলেন। পরে তিনি আয়ারল্যান্ডে চলে যান। তিনি পরপর দুই বিশ্বকাপে ভিন্ন দুটি দলের প্রতিনিধিত্ব করার বিরল কীর্তির মালিক। নিজের দেশকে বাছাইপর্বের বৈতরণী পার হতে সহায়তা করার পর ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেন। ইংলিশদের জার্সিতে খুব একটা সাফল্য না পাওয়ায় ফের নিজ দেশে ফিরে যান তিনি।
৬. জেভিয়ার মার্শাল
২০০৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে কানাডার বিপক্ষে ১১৮ বলে ১৫৭ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলার পর জেভিয়ার মার্শাল শিরোনামে এসেছিলেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলে এটাই ছিল তার একমাত্র অবদান। তার পরের বছর মার্শাল চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। কয়েকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে।
৭. ইজাতুল্লাহ দৌলতজাই
ইজাতুল্লাহ দৌলতজাই ২০১২ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আইসিসি টি -২০ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের হয়ে খেলেছেন। আফগানদের হয়ে তার ক্যারিয়ার অবশ্য দীর্ঘায়িত হয়নি। এরপর তিনি জার্মানিতে পাড়ি জমান। ২০১৯ সালে তিনি জার্মানির জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেকও হয় তার।
সোনালীনিউজ/এআর