ঢাকা : বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে কি এমন আগে কখনও ঘটেছে? মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-পঞ্চপাণ্ডবের একজনও নেই একাদশে।
২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে। ২০০১ সালে অভিষেক হলেও সেই টেস্টে ছিলেন না মাশরাফি মর্তুজা। ছিলেন না ২০০৫ সালে অভিষিক্ত মুশফিকুর রহিমও। বাকি তিন পাণ্ডবের তখন টেস্ট অভিষেকই হয়নি।
পাঁচজনেরই অভিষেক হওয়ার পরে গত ১৬ বছরে টেস্ট একাদশে কেউ না কেউ ছিলেন। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে এবারই প্রথমবার পাঁচজনের কেউই নেই।
২০০৯ সালে দেশের ক্রিকেটে আবির্ভাব ঘটে পাঁচ সেরার। মাশরাফি বিন মুর্ত্তোজা, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। সেই থেকে শুরু বাংলাদেশে ক্রিকেটের বদলে যাওয়া।
দারুণ পারফরম্যান্সে তারা জাতীয় দলে ভরসার জায়গা করে নেয়ার পাশাপাশি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে থাকেন ঐতিহাসিক সব জয়ে। পারস্পারিক সম্পর্কের রসায়নের কারণে তারা পরিচিত হয়ে ওঠেন ‘পঞ্চপাণ্ডব’ নামে।
সব ম্যাচেই বাকিদের ছাপিয়ে যেতে থেকেন জাতীয় দলের এই পঞ্চপাণ্ডব। এই পাঁচ ক্রিকেটারকে ছাড়া খেলাই যেন ভুলে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদল হয় দিনের। নতুনদের জায়গা করে দিতে সরে যেতে হয় প্রবীণদের। এর ফলে একে একে দল থেকে বিদায় হচ্ছেন পঞ্চপাণ্ডবের সদস্যরা।
দল থেকে সবার আগে বিদায় হয়েছে মাশরাফির। ২০০৯ সালে শেষ টেস্ট খেলা মাশরাফি ২০১৭ সালে বিদায় জানান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে। আন্তর্জাতিক ২২ গজে তার দেখা নেই ২০২০ সালের জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে।
সেই সিরিজে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর মূলত তার জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল জাতীয় দলের দরজা। আর তাতে করে ফাটল ধরে জাতীয় দলের শক্ত ভীতে।
মাশরাফির বিদায়ের পর হুট করে যেন খেই হারিয়ে ফেলে দল। অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছিল যে ঘরেই চলছিল যুদ্ধও।
এরপর হুট করেই আরেক স্তম্ভ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ঘোষণা দেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের।
এদিকে ইনজুরির জন্য লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন তামিম ইকবাল। যার ফলে ফাটল আরও বেড়ে গেল মাশরাফির হাতে গড়া শক্ত ভিতের। আর বাকি দুজন সাকিব ও মুশফিক তো এই আছেন এই নেই।
এর মধ্যে চলছে নিউজিল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। এই সিরিজে ইনজুরির কারণে নেই তামিম ইকবাল। ব্যক্তিগত কারণে ছুটিতে সাকিব। অবসরে রিয়াদ। নেই মাশরাফি।
প্রথম টেস্টে থাকলেও চোটের কারণে দ্বিতীয় টেস্টে নেই মুশফিকও। ফলে ১৬ বছর পর পঞ্চপাণ্ডব ছাড়াই টেস্ট খেলতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের পর এই প্রথম বাংলাদেশের কোন টেস্টে মাঠে নেই এই পাঁচ তারকার একজনও। ২০০৯ সালে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অভিষেকের পর একটি টেস্টে মাশরাফি থাকলেও ছিলেন না বাকিগুলোতে। তবে বাকি চারজনের কেউ না কেউ ছিলেন বাংলাদেশের টেস্ট দলে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই ম্যাচে দেশের ১০০ তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে অভিষেক হল নাঈম শেখের। আর ইনজুরিতে পরা মুশফিকের বদলে খেলছেন নুরুল হাসান সোহান।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ