ঢাকা : সেইন্ট লুসিয়ায় আশানুরূপ কিছুই পায়নি বাংলাদেশ। ব্যাটে-বলে দিনটা নিজেদের করে নিলো স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের দেয়া ২৩৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ক্যারিবীয়রা দিন শেষ করেছে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে।
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ৩০ (৫৫) আর জন ক্যাম্পবেল ৩২ (৪১) রানে অপরাজিত থেকে শেষ করেছেন দিন। বলা যায় কাল দ্বিতীয় দিনে বড় লিডের নেয়ার প্রাথমিক আভাসটা দিয়ে রাখল স্বাগতিকরা।
একপ্রান্তে উইকেট পড়লেও অপরপ্রান্ত ধরে রেখে দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি উপহার দিলেন বাংলাদেশের এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ১৪তম হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করলেন তিনি। ৬৬ বল খেলে ৮ বাউন্ডারিতে এই হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন লিটন।
সে সঙ্গে দারুণ একটি রেকর্ডও গড়ে ফেললেন বাংলাদেশের এই প্লে-মেকার। ২০২২ সালের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে হাজার রানের মাইফলক পার হয়ে গেলেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডানহাতি পেসার অ্যান্ডারসন ফিলিপের অফ স্টাম্পে পড়া বলকে দৃষ্টিনন্দন ভঙ্গিতে বাউন্ডারি মেরেই এই কৃতিত্ব গড়েন লিটন।
গেল বছর সাদা পোশাকে ছন্দে ছিলেন লিটন দাস। তবে রঙীন পোশাক গায়ে চড়ালেই তা যেন ফ্যাঁকাসে হয়ে যেত। সেই সময়টা চলতি বছর পেছনে ফেলেছেন অবশেষে। চলতি বছর যখনই ব্যাট হাতে নেমেছেন, লিটন ভরসা যুগিয়েছেন বাংলাদেশকে; সেটা টেস্ট হোক, কিংবা ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি। দেখালেন গত রাতেও।
উইন্ডিজ বোলারদের তোপে বাংলাদেশ যখন ২০০’র নিচে অলআউটের শঙ্কায়, তখনই বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। ফিফটি করলেন। ছুঁয়ে ফেললেন আরও একটা কীর্তিও। টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির দারুণ ফর্মের সুবাদে ২০২২ সালের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ছুঁয়ে ফেললেন সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১০০০ রান ছোঁয়ার মাইলফলক।
এই মাইলফলক ছুঁতে অবশ্য খুব একটা বেগ পেতে হয়নি তাকে। ৯৯৬ রান নিয়ে শুরু করেছিলেন সেন্ট লুসিয়া টেস্ট। এনামুল হক বিজয়ের বিদায়ে এসেছিলেন ক্রিজে। পরের ওভারে দেখলেন সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্তকে ফিরে যেতে।
তবে লিটন তাতে বিচলিত হলেন না একটি। অ্যান্ডারসন ফিলিপসের করা পরের ওভারেই রানের খাতা খুললেন দর্শনীয় এক চারে। ফিলিপসের ব্যাক অফ দ্য লেন্থের বলটা ব্যাটের ফেস খুলে পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে পাঠিয়ে দেন সীমানার বাইরে। মাইলফলকটা ছুঁয়ে ফেলেন তাতেই।
সেখানেই অবশ্য থামেননি। ওপাশ থেকে সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান, মেহেদি হাসান মিরাজদের বিদায় নিতে দেখেছেন একে একে। তাতে ইনিংস গড়ার দায়িত্বটা এসে পড়ে তার কাঁধেই। সে দায়িত্বের পুরোটা পালন করা হয়নি অবশ্য। ৭০ বলে খেলেছেন ৫৩ রানের ইনিংস। তাতে বাংলাদেশ পেয়েছে ২০০ পেরোনোর দিশা।
এই ইনিংসের পর লিটনের রানসংখ্যা দাঁড়াল ১০৪৯। ২০ ইনিংস লেগেছে এই মাইলফলক ছুঁতে। ৪৯.৯৫ গড়ে করেছেন এই রান। গত রাতের এই ইনিংস শেষে লিটনের ফিফটি দাঁড়াল ৬টি, পাশাপাশি সেঞ্চুরিও আছে ৩টি। গেল সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছেন ১৪১ রানের ইনিংস, এখন পর্যন্ত সেটাই হয়ে আছে তার সর্বোচ্চ।
চলতি বছর লিটনের হাজার রানের ৩৩৬ রান এসেছে ওয়ানডে আর ৭৩ রান এসেছে টি-টোয়েন্টি থেকে। ৬ ওয়ানডেতে খেলেছেন, ৫৬ গড়ে একটি সেঞ্চুরি ও দুইটি ফিফটি তুলে নিয়েছেন তিনি। আর টি-টোয়েন্টিতে ২ ইনিংস খেলেছেন তিনি। এখানেও ফিফটি আছে একটি।
বাকি ৬৪০ রান এসেছে টেস্টে। যার ফলে এই বছর টেস্টে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় তিনি আছেন চতুর্থ অবস্থানে। তার ওপর আছেন উসমান খাজা (৭৫১ রান), জনি বেয়ারেস্টো (৬৭১ রান) এবং জো রুট (৬৬৮ রান)।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ