ঢাকা : টেস্ট সিরিজে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও সুবিধাজনক অবস্থায় নেই বাংলাদেশ। অনেকেই ভেবেছিলেন উইন্ডিজে এবার বুঝি ২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে বাংলাদেশ দল। সেবার যেমন টেস্টে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছিল টাইগাররা, এবার অন্তত তেমনটা আর হচ্ছে না।
ওয়ানডে সিরিজটি এবার হবে সবার পরে। তার আগে কুড়ি ওভারের ফরম্যাটের সিরিজ বাঁচাতেই গলদঘর্ম অবস্থা সফরকারীদের। ৩ ম্যাচের এই সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৫ রানে পরাজয় অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের। সিরিজ বাঁচাতে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই সফরকারীদের সামনে। তবে কাজটা মোটেও সহজ নয় বাংলাদেশের জন্য।
দলীয় অবস্থান আর ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় রীতিমত দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে গোটা দলের। তবে খেলাটা গায়ানায় বলেই আত্মবিশ্বাসে খানিক রসদ পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে এর আগে কোনো টি-টোয়েন্টি না খেললেও ৩টি ওয়ানডে খেলে জয় পেয়েছে ২ ম্যাচে। কিন্তু প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো এ ম্যাচেও সঙ্গী হয়েছে শঙ্কা। কারণ, পূর্বাভাসে সুখবর নেই। বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বৃহস্পতিবার ম্যাচের দিন। তাতে ম্যাচ পণ্ড হয়ে যাওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
যদিও ম্যাচ হবে ধরে নিয়েই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বাংলাদেশ দল। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তো একাদশে পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। পেসার তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে ফিরতে পারেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। কারণ, গায়ানার উইকেট অনেকটা উপমহাদেশর মতো। স্পিনাররা সহায়তা পেয়ে থাকেন। পরিসংখ্যাও স্পিনারদের হয়ে কথা বলছে। সে হিসেবে তিন পেসারের পরিবর্তনে দুই পেসার খেলানোর ভাবনা বাংলাদেশের।
আবহাওয়া আর কন্ডিশন যেমনি হোক, মানিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়ক বলেন, ‘দিকনির্দেশনার কিছু নেই, মানিয়ে নিতে হবে। সবসময় মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে, এটাই বড় কথা। তারপর যেমন পরিস্থিতিই হোক চেষ্টা করব মানিয়ে নিয়ে আমাদের ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার।’
এ ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ভাবনার জায়গা ব্যাটিং বিভাগ। ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন ব্যাটসম্যানরা। সবশেষ ম্যাচে তবুও সাকিব আল হাসান একাই লড়াই করেছেন। তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে তার মতো আরেকজনকে দেখতে চান অধিনায়ক। সব মিলিয়ে ১৬০-১৭০ রানে পুঁজি বোলারদের এনে দিতে পারলে ম্যাচ জেতা সম্ভব বলে মনে করছেন।
মাহমুদউল্লাহর ব্যাখ্যা, ‘টি-টোয়েন্টি খেলাটাই এরকম। অনেক সময় ওপেনাররা ভালো শুরু করে দিবে কিন্তু টেল এন্ডার টেনে নাও নিতে পারে। কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। যেমন আগের ম্যাচে সাকিব যে ইনিংস খেলল। আমরা ১৬০ রানের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম। আমাদের দলে এমন একজনকে ব্যাটিং করতে হবে। সাথে কেউ ২০-৩০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেললে আমরা ১৬০-১৭০ রান করতে পারব।’
সঙ্গে যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ, ‘এই বিশ্বাস আছে, নিয়মিত ১৬০-১৭০ রান করতে পারলে বোলাররা সেটা ডিফেন্ড করতে পারবে। আমাদের বোলিং অ্যাটাক খুব ভালো। হয়ত আগের ম্যাচে পেসাররা সেভাবে ভালো করতে পারেনি। কিন্তু অনেক ম্যাচেই আমাদের বোলাররা ছোট রানে আটকে রেখেছিল। এখনও অগাধ বিশ্বাস আছে বোলিং বিভাগের ওপর, ওরা ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে।’
তবে বৃষ্টির শঙ্কা মাড়িয়ে শেষপর্যন্ত ম্যাচ মাঠে গড়ালে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে টস। গায়নার এই প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত যে ৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ফল বের হয়েছে, তার ৫টিই জিতেছে টসজয়ী দল।
শেষ টি-টোয়েন্টির জন্য বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ : এনামুল হক বিজয়, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন ধ্রুব, নুরুল হাসান সোহান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, শেখ মেহেদী হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ