ঢাকা : প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের কৌশল সাজানোয় ‘মাস্টার’ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কিন্তু কৌশল সাজালেই তো আর হবে না, প্রয়োগ করার সক্ষমতা দলের আছে কি না, সেটা দেখতে হবে আগে। দ্বিতীয় মেয়াদে টিম বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়ে হাথুরু এখন ওই দেখার কাজটাই করছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দলের শক্তি এবং দুর্বলতার জায়গা পর্যবেক্ষণ করেছেন এই লঙ্কান।
বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও থাকবেন একই ভূমিকায়, সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এটা যেমন জানালেন, তেমনি দল যে জয়ের জন্য মাঠে নামবে, জানিয়ে রাখলেন সেটাও।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটাই ছিল দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরুর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। সিরিজটাতে টাইগাররা ২-১ ব্যবধানে হারলেও কিছু জায়গা নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট তিনি, ‘শুরুটা ভালোই হয়েছে। নির্দিষ্ট কিছু জায়গা ছিল দারুণ। ততটা সহায়ক কন্ডিশন না পেলেও ফাস্ট বোলাররা ভালো করেছে। খেলায় তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং বোঝাপড়া, বিশেষ করে তাসকিন এবং ইবাদত ছিল দুর্দান্ত। ফিল্ডিংয়ে যে প্রচেষ্টা দেখেছি, সেটাতেও আমি খুশি। আমার মনে হয়, এ ক্ষেত্রে আমরা ইংল্যান্ডের থেকেও ভালো ছিলাম। আমি কয়েকটি বিষয় পর্যবেক্ষণ করেছি, যেমন ব্যাটিংয়ে আমাদের আরও ভালো করতে হবে।’
জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করার পর বুধবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি দলকে দেখেছেন হাথুরু। শিষ্যদের নিয়ে ঘাম ঝরিয়েছেন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। সেখানে যতটুকু দেখেছেন, তাতে রনি তালুকদার-তৌহিদ হৃদয়দের মনে ধরেছে এই লঙ্কানের। এটুকু খোলাসা করলেও এক দিনের দেখায় দল নিয়ে সেভাবে মন্তব্য করতে চাইলেন না তিনি, ‘টি-টোয়েন্টি দলকে আজই কেবল দেখলাম। ২০২৪ বিশ্বকাপের পথে এগিয়ে চলার সব শুরু। এর মাঝে অনেক কিছুই হবে। এখন পর্যবেক্ষণ করছি আমাদের কী আছে, কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে এবং নিজেদের শক্তিমত্তা অনুযায়ী কোন পরিকল্পনায় আমরা খেলতে পারি।’
ওয়ানডেতে টিম বাংলাদেশ দুর্দান্ত, সাম্প্রতিক অতীত বলছে-উন্নতির ছোঁয়া লেগেছে টেস্টেও। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের পারফরম্যান্স মোটেও সন্তোষজনক নয়। বিষয়টা জেনেই দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই হাথুরু জানিয়ে রেখেছেন, ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণে দলকে শক্ত অবস্থানে দাঁড় করানোই হবে তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিপক্ষ যখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, এবার চ্যালেঞ্জটা তাই আরও বড়। ‘জাদুকর’ খেতাব পেয়ে যাওয়া হাথুরু চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন। জানিয়ে দিলেন, নিজে পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় থাকলেও দল মাঠে নামবে জয়ের লক্ষ্যে, ‘অবশ্যই সিরিজ জয়ই আমাদের লক্ষ্য। তবে আমি কোনো জাদুকর নই বা এমন কেউ নই যে ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারে। আমরা যা করতে পারি, সেটাই করব। জেতার চেষ্টা করব।’
চাওয়াটা পূর্ণ করতে মাঠে নিংড়ে দিতে হবে নিজেদের সেরাটা। আসলে চেষ্টা চালাতে হবে নিজেদের সামর্থ্যরে সীমা অতিক্রমের, বিশেষ করে পাওয়ার হিটিংয়ে। বিশ্বমানের পাওয়ার হিটার না থাকা, টি-টোয়েন্টিতে এটাই সব থেকে বড় দুর্বলতা বাংলাদেশের।
এই দুর্বলতা ঢেকে জয় পেতে চাইলে শুরু থেকেই সব ব্যাটারকে থাকতে হবে ইতিবাচক। হতে হবে আগ্রাসী। কিন্তু সাগরিকার ২২ গজি উইকেটে তা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। কেননা যে উইকেটে আজকের টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি হতে যাচ্ছে, সেটিতেই হয়েছিল সিরিজের শেষ ওয়ানডেটি। খুব বেশি রান সেখানে দেখা যায়নি।
দিনতিনেকের ব্যবধানে উইকেটের চরিত্র বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখেন না হাথুরুও। তবে নিজেদের শক্তিমত্তা অনুযায়ী খেলে টাইগার কোচ দেখতে চান, বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে তার দলের তফাত কতটা।
সোনালীনিউজ/এমটিআই