ঢাকা : বিশ্বকাপ মানেই বেন স্টোকস, বিরাট কোহলিদের মতো তারকাদের পারফরম্যান্স দেখার সুযোগ। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি ম্যাচ। আগামী ৫ অক্টোবর শুরু হবে মূল টুর্নামেন্ট।
তবে এ টুর্নামেন্ট বিশ্বমঞ্চে পরিচিত করে তোলে উঠতি তারকাদেরও। তেমনই পাঁচজন, যারা মাতাতে পারেন এবারের বিশ্বকাপ—
১৮ বছর বয়সি বাঁহাতি রিস্ট স্পিনারের আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলে অভিষেক হয়েছিল ১৪ বছর বয়সেই।
গত বছর শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকের সময় নুরের বয়স ছিল ১৭। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে রিস্ট স্পিনারদের পুনর্জাগরণ চলছে কয়েক বছর ধরেই, আফগান তরুণ সেটিরই সংযোজন।
[207994]
এখন পর্যন্ত তিন ওয়ানডের সঙ্গে খেলেছেন একটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি, যে ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০ রানেই নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
হাই আর্ম অ্যাকশনে দারুণ নিয়ন্ত্রণ, বোলিং করেন গতি দিয়ে। সবশেষ আইপিএলে গুজরাট টাইটানসের হয়েও নজর কেড়েছিলেন রশিদ খানকে আদর্শ মানা নুর। বিশ্বকাপে রশিদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাকআপ হতে পারেন তিনি।
এই বাচ্চাটা, সে শুধু শিখতে চায়। সে এখন সুযোগ পেয়েছে। আমি খুব খুশি যে সে সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। আফগানিস্তান ক্রিকেটের জন্য দারুণ খবর।
শ্রীলংকা মানেই প্রচলিত ঘরানার বাইরের বোলারদের কারখানা। ২০১৯ বিশ্বকাপে লাসিথ মালিঙ্গার অবসরের পর থেকে এমন একজনকেই যেন খুঁজছিল শ্রীলংকা।
যিনি চমকে দেবেন অ্যাকশনে, উইকেট নেবেন, একপ্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখবেন। মালিঙ্গার জায়গায় পাতিরানার চেয়ে উপযুক্ত আর কাকেইবা পেতে পারত ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী দলটি!
[207990]
মালিঙ্গাকে আদর্শ মানা পাতিরানার অ্যাকশন তার মতোই স্লিঙ্গিং, এমনকি ডেলিভারির সময় মালিঙ্গার চেয়েও নিচ থেকে আসে তার হাত। ইয়র্কারটাও মন্দ করেন না।
গত বছর অ্যাডাম মিলনের বদলি হিসেবে আইপিএলে সুযোগ পেয়েছিলেন পাতিরানা, মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই মাতিয়েছেন এর পর।
আইপিএল অভিষেকের প্রথম বলেই নিয়েছিলেন শুবমান গিলের উইকেট। জুনে শ্রীলংকার হয়ে অভিষেক হয়েছে। তবে বিশ্বকাপে তাদের অন্যতম অস্ত্রই হতে পারেন ‘বেবি মালিঙ্গা’।
২০১৯ সালে বিশ্বকাপজয়ী ইংল্যান্ড দলে ছিলেন দুজন গতিতারকা—মার্ক উড ও জফরা আর্চার। ঘণ্টায় ৯০ মাইলের ওপর গতিতে বোলিং করতে পারেন দুজনই।
উড এবারও আছেন। তবে চোটের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই করতে থাকা আর্চার ভারতে গেছেন শুধু রিজার্ভ হিসেবেই।
উডের সঙ্গে অবশ্য আরেকজন ফাস্ট বোলার আছে এবার ইংল্যান্ডের। ২৫ বছর বয়সি অ্যাটকিনসন ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে গতির ঝড় তুলেছেন আগেই। সবশেষ নিউজিল্যান্ড সিরিজের ওয়ানডে দলেও ডাক পেয়ে যান। তিন ম্যাচ মিলিয়ে মাত্র ১ উইকেট নিলেও ঘণ্টায় প্রায় ৯৫ মাইল গতিতে বোলিং করতে পারা অ্যাটকিনসনকে নিয়ে ইংল্যান্ড রোমাঞ্চিতই।
দেখে মনে হয় না ভালো একটা গতিতে বোলিং করতে তার খুব বেশি খাটতে হয়। দেখে মনে হয় তার গতি আরও আছে, যেটি এখনো ব্যবহৃত হয়নি।
[207990]
বিশ্বকাপে খেলা প্রতিটি ভারতীয় ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন। ২৯ বছর বয়সি তেজা নিদামানুরুর সে স্বপ্নপূরণ হচ্ছে, তবে ভারতের হয়ে নয়। ভারতের দক্ষিণাংশের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়াওয়াদায় জন্ম নেওয়া নিদামানুরুর বেড়ে ওঠা নিউজিল্যান্ডে। শেষ পর্যন্ত থিতু হয়েছেন নেদারল্যান্ডসে। গত বছরের মে মাসে ডাচদের হয়ে খেলার যোগ্য হন তিনি। অভিষেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ ফিফটি করেছিলেন।
তবে তাদের বিপক্ষেই জিম্বাবুয়েতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৭৬ বলে ১১১ রানের ইনিংসে নজর কাড়েন তিনি। ৩৭৫ রানের লক্ষ্যে ম্যাচ টাই করে নেদারল্যান্ডস, পরে ম্যাচ জেতে সুপার ওভারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে বিশ্বকাপে শ্রীলংকার সঙ্গী হয় ডাচরা।
এখানে বসে বিশ্বকাপ খেলার কথা বলাটাই কেমন পরাবাস্তব ঠেকে। পথটা কঠিন ছিল, তবে মনে হচ্ছে সেটি পাড়ি দেওয়া সার্থক।
২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন বাংলাদেশের হয়ে। তখন থেকেই ৫০ ওভারের ম্যাচে হৃদয়ের ব্যাটিং ছিল নজরকাড়া। তবে এ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান জাতীয় দলে এসেছেন বিপিএলের সাফল্য দিয়ে।
২২ বছর বয়সি হৃদয়ের আন্তর্জাতিক অভিষেক এ বছরের মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। এর পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে। এ সংস্করণে প্রথম ১৭ ম্যাচে করেছেন ৫টি ফিফটি, শ্রীলংকার টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেও সাফল্য পেয়েছেন।
ব্যাটিংয়ে তার কবজির ব্যবহার দেখার মতোই। মুশফিকুর রহিমের এলাকার ছেলে হয়তো খেলবেন তার দেওয়া ব্যাট দিয়েই। ২০০৭ বিশ্বকাপ ছিল মুশফিকের প্রথম, নজরও কেড়েছিলেন। এবার হৃদয়ের পালা?
এমটিআই