প্রথম ৪ ম্যাচ জেতা নিউজিল্যান্ডও বাদ পড়তে পারে 

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৩, ০৩:২৭ পিএম

ঢাকা: টানা দুই হারে উড়তে থাকা নিউজিল্যান্ডের নির্বিঘ্ন যাত্রা কিছুটা হলেও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। গত রোববার স্বাগতিক ভারতের কাছে হারের পর গতকাল তাসমানপারের প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার কাছেও হেরে গেছে কিউইরা। 

যদিও এ দুটি হার তাদের নেট রান রেটে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। ভারত জিতেছে ১২ বল বাকি রেখে, অস্ট্রেলিয়া জিতেছে মাত্র ৫ রানে। কিন্তু এই দুই হারে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান থেকে তিনে নেমে গেছে টম ল্যাথামের দল। 

নিউজিল্যান্ডের বাকি আছে আরও তিনটি ম্যাচ। সেই তিন ম্যাচের দুটিতে জিতলেই টানা পঞ্চমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে যাবে কিউইরা। 

এমনকি নেট রান রেট ধনাত্মক থাকলে একটি জিতেও শেষ চারে জায়গা করে নিতে পারে। কিন্তু তাদের শেষ তিন ম্যাচের প্রতিপক্ষ বিবেচনায় কাজটা বেশ কঠিন হতে চলেছে। প্রথম পর্বে নিউজিল্যান্ডের শেষ তিন ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকা (১ নভেম্বর), পাকিস্তান (৪ নভেম্বর) ও শ্রীলঙ্কার (৯ নভেম্বর) বিপক্ষে।

ধারণা করা হচ্ছে, নিউজিল্যান্ডকে বড় পরীক্ষা দিতে হবে পরবর্তী তিন ম্যাচেই। কারণ, এক ইংল্যান্ড ছাড়া কিউইরা যে তিনটি ম্যাচ জিতেছে, প্রতিটি প্রতিপক্ষই (নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান) শক্তিমত্তায় তাদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল। 

র‍্যাঙ্কিয়েও ওই তিন দল পিছিয়ে। এই তিনটি জয় কিউইদের জন্য তাই প্রত্যাশিতই ছিল। আর বিশ্বকাপ ধরে রাখার অভিযানে এসে ইংল্যান্ড যেভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে, তাতে ইংলিশদের বিপক্ষে জয়টাও এখন আর বড় করে দেখার সুযোগ নেই।

[209860]

পয়েন্ট তালিকায় চোখ রাখলে দেখা যাবে নিউজিল্যান্ড এখন পর্যন্ত যে চার দলকে হারিয়েছে, সেই চার দলই আছে তলানিতে-ইংল্যান্ড দশে, বাংলাদেশ নয়ে, নেদারল্যান্ডস আটে আর আফগানিস্তান সাতে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড শেষ তিন ম্যাচ যাদের বিপক্ষে খেলবে, তারা আছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ ছয়ে।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অঘটন বাদ দিলে এখন পর্যন্ত অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০ পয়েন্ট নিয়ে এবং নেট রান রেটে বাকিদের চেয়ে যোজন-যোজন ব্যবধানে এগিয়ে থেকে এই মুহূর্তে তালিকার শীর্ষে আছে প্রোটিয়ারা। ডি কক-ক্লাসেনেদের বিপক্ষে লড়াইটা এখন কনওয়ে-বোল্টদের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে।

১ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে গেলে চাপ আরও বাড়বে নিউজিল্যান্ডের। তখন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ দুটি ম্যাচ একরকম বাঁচামরার লড়াই হয়ে যেতে পারে। চাপে ভেঙে পড়ার ‘রোগ’ কিউইদের জন্য নতুন কিছু নয়। 

টানা চার হারে পাকিস্তান পয়েন্ট তালিকার ছয়ে নেমে লেগেও পরশু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে লড়াই করেছে, সেটা বাবর-আফ্রিদিদের আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। তা ছাড়া অননুমেয় পাকিস্তানের চাপের মধ্যে ভালো খেলার সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে।

পাকিস্তানের পরের ম্যাচ আগামী ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের বিপক্ষে। টানা পাঁচ হারে সাকিব-মিরাজদের যে হতবিহ্বল দশা, তাতে করে ওই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে কী করবে, কে জানে! বাবরের দল সাকিবদের হারিয়ে দিতে পারলে তাদের পয়েন্ট হবে ৬। এরপর নিউজিল্যান্ডকেও হারিয়ে দিতে পারলে তাদের সমান ৮। তখন কিউইরা আরও চাপে পড়ে যাবে। সেই চাপে কিউইরা দিশা খুঁজে পায় কি না, সেটাই দেখার বিষয়। 

দক্ষিণ আফ্রিকার পর পাকিস্তানের কাছেও হেরে গেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প থাকবে না নিউজিল্যান্ডের। এমনকি জিতলেও সেমিফাইনালে উঠতে পারবে কি না, তার নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না। কারণ, তখন অন্য ম্যাচের ফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে নেট রান রেট হতে হবে ধনাত্মক।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও নিউজিল্যান্ডকে আর স্পষ্ট ফেবারিট বলার সুযোগ নেই। প্রথম তিন ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ শুরু করা লঙ্কানরা পরের দুটিতে জিতে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে জয়টা তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পাশাপাশি পয়েন্ট তালিকার পাঁচেও তুলে এনেছে। তা ছাড়া অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস বিশ্বকাপ দলে ঢুকে পড়ায় দলটিকে এখন আরও ভারসাম্যপূর্ণ মনে হচ্ছে।

বড় ম্যাচগুলোতে সাধারণত অভিজ্ঞরা ব্যবধান গড়ে দেন। শেষ তিন ম্যাচে তাই কেইন উইলিয়ামসন ও টিম সাউদিকে বড্ড বেশি দরকার নিউজিল্যান্ডের। কিন্তু নিয়মিত অধিনায়ক উইলিয়ামসন ও পেসার সাউদি চোট থেকে আদৌ পুরোপুরি সেরে উঠেছেন কি না, সেরে উঠে থাকলেও কোন ম্যাচ থেকে খেলবেন, সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। উইলিয়ামসন-সাউদি না ফিরলে শেষ তিন ম্যাচে কিউইদের আরও বড় পরীক্ষায় পড়তে হতে পারে। 

নিউজিল্যান্ডের জন্য সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হতে পারে শেষ তিন ম্যাচের ভেন্যু। কিউইরা শেষ তিন ম্যাচের একটি পুনেতে, অন্য দুটি খেলবে বেঙ্গালুরুতে। পরিসংখ্যান বলছে, এই দুই মাঠে সব সংস্করণ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে সবকটিতে হেরেছে নিউজিল্যান্ড।

এআর