ঢাকা: ভারত সফরে রাঁচিতে ইংল্যান্ডের অপেক্ষায় টার্নিং উইকেট। ম্যাচের দুই দিন আগে যে উইকেট দেখে একরকম আঁতকে উঠছেন সহ-অধিনায়ক অলিভার পোপ। অধিনায়ক বেন স্টোকস তো বলেই দিয়েছেন, এমন চেহারার উইকেট তিনি কখনও দেখেননি।
সিরিজের তিন টেস্ট শেষে এখনও পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আছে ভারত। তবে টার্নিং উইকেটের ফায়দা সেভাবে এখনও নেয়নি তারা।
হায়দরাবাদে প্রথম টেস্টের উইকেট একটু মন্থর ছিল বটে, তবে সেই অর্থে খুব স্পিন সহায়ক নয়। বিশাখাপাত্নামে তো পেসারদের সহায়তাও ছিল কিছুটা, স্পিনারদের জন্য খুব বাড়তি কিছু ছিল না। রাজকোটে ছিল অনেকটাই ব্যাটিং সহায়ক উইকেট, পরের দিকে কিছুটা স্পিন ধরেছে।
কিন্তু রাঁচিতে অপেক্ষায় ভিন্ন কিছু। উপমহাদেশের প্রথাগত উইকেটে সাধারণত সময় গড়ানোর সঙ্গে ধীরে ধীরে চিড় বা ফাটল ফুটে উঠতে দেখা যায়। কিন্তু রাঁচি টেস্ট শুরুর দুই দিন আগেই উইকেটে ফাটল চোখে পড়েছে পোপের।
“পিচ দেখে বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। অনেক ফাটল এখানে, অনেকটা প্লেটের মতো। মাত্রই সেখানে অনেক পানি দেওয়া হয়েছে, এতে সাধারণত আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। প্রচুর পানি দেওয়ার পর রোদের মধ্যে রাখলে যেমন হয়, এরকম কঠিন আবরণ দেখেছি উইকেটের উপরিভাগে। খুব জমাট উইকেট বলে মনে হচ্ছে না।”
“উইকেটের এক ভাগ মনে হচ্ছে বেশ ভালো, আরেক দিকে প্লেটের মতো অনেক ফাটল। আমরা কালকে আবার দেখব, ভারতীয় দল উইকেট দেখার পর কেমন থাকে তা, সেসব বুঝে তার পর সিদ্ধান্ত নেব (একাদশ নিয়ে)।”
উইকেটের চেহারা নিয়ে একই কথা বললেন বেন স্টোকসও। এই পিচের সম্ভাব্য আচরণ নিয়ে কোনো ধারণাই করতে পারছেন না ইংলিশ অধিনায়ক।
“জানি না (কেমন হবে আচরণ)… এরকম কিছু আমি কখনও দেখিনি, কাজেই আমার কোনো ধারণা নেই কেমন হতে পারে। একদমই বুঝতে পারছি না, এখানে কী হতে পারে।”
[218020]
“এক দিক থেকে অন্য প্রান্তে তাকালে এটাকে একদমই ভিন্ন মনে হচ্ছে, ভারতে যা দেখতে আমরা অভ্যস্ত নই। ড্রেসিং রুম থেকে অনেকটা সবুজাভ ও ঘাসের ছোঁয়া আছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু কাছে যাওয়ার পর মনে হচ্ছে পুরো আলাদা। খুবই কালচে ধরণের ও ঝুরঝুরে, কিছু ফাটল তো আছেই।”
যদিও টার্নিং উইকেট না বানিয়েও সিরিজে এগিয়ে আছে ভারত, তবে রাঁচিতেই যেহেতু সিরিজ নিশ্চিত করার সুযোগ, সেখানে টার্নিং উইকেটের কৌশল নেওয়াটা খুব বিস্ময়কর হবে না হয়তো। গোটা সিরিজে অসাধারণ বোলিং করা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহকে এই টেস্টে বিশ্রাম দিয়েছে ভারত। সেখান থেকেও পিচের সম্ভাব্য চরিত্র নিয়ে কিছুটা আন্দাজ করা যায়।
উইকেট বুঝে ইংল্যান্ডও আবার এক পেসার খেলানোর কথা ভাবছে। গত টেস্টে জিমি অ্যান্ডারসন ও মার্ক উড খেললেও এই টেস্টে একমাত্র পেসার হিসেবে বেছে নেওয়া হতে পারে অলিভার রবিনসনকে।
বাকি একজনকে নিয়ে দুই রকম ভাবনা আছে। আগের মতো তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার খেলালে একাদশে ফিরবেন শোয়েব বাশির। আর উইকেট যদি সত্যিই টার্নিং হয় এবং তিন-চার দিনে টেস্ট শেষ হতে পারে বলে তারা মনে করেন, সেক্ষেত্রে একজন বোলারের জায়গায় ড্যান লরেন্সকে নিয়ে ব্যাটিংয়ের শক্তিও বাড়ানো হতে পারে।
শেষ পর্যন্ত উইকেট বা একাদশ যেরকমই হোক, ইংল্যান্ডের কৌশল অবশ্য একই থাকবে। বাজবল নিয়ে প্রবল সমালোচনা থাকলেও অধিনায়ক স্টোকস স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, নিজেদের কৌশল তারা বদলাবেন না। সমালোচনায় তিনি বিস্মিতও নন।
“নাহ, খেলাধুলায় এসব হয়ই (সমালোচনা)। ভালো করলে প্রশংসা মেলে, ভালো না করলে বাজে কথা শুনতে হয়।”
ইংল্যান্ডের সিরিজে ফেরার এই টেস্ট শুরু শুক্রবার।
এআর