ঢাকা: সব ঠিক থাকলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্বপ্ন সারথিদের একজন হতে পারতেন আলিস। ব্যাটসম্যানদের তুমুল দাপটের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একজন রহস্য স্পিনার দারুণ কাঙ্ক্ষিত।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখানেই আশার আলো আলিস। এবারের বিপিএলে বৈচিত্র ও রহস্যের জাল বিছিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। নির্বাচকরাও তাকে বিশ্বকাপের ভাবনায় রাখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু চোটের কারণে মিইয়ে গেছে তার সম্ভাবনা।
একরকম চমক নিয়েই দেশের ক্রিকেটে আবির্ভাব আলিসের। রহস্যময় বোলিং ছাড়াও তার উঠে আসার গল্পটাও চমকপ্রদ। তার সেই পথচলায় দফায় দফায় আঘাত হেনেছে চোটের থাবা। গত মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেলেও আঙুলের চোটে পিছিয়ে গেছে তার আন্তর্জাতিক অভিষেকের সম্ভাবনা। তাই নতুন করে ফেরার লড়াইয়ে ২৭ বছর বয়সী স্পিনার।
ঘরোয়া ক্রিকেটে সার্বিকভাবে অবশ্য এখন পর্যন্ত চমক জাগানো বা দুর্দান্ত কিছু করেননি আলিস। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে ৭ ম্যাচে তার উইকেট ৮টি। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন যে সংস্করণে, সেই বিশ ওভারের ক্রিকেটে ২৬ ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ২০ উইকেট। ওভারপ্রতি রান খরচের হার ৬.৮৮।
তবে সবশেষ বিপিএলে কিছু ম্যাচে সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন এই রহস্য স্পিনার। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে সব মিলিয়ে ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ৯ উইকেট। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে স্রেফ ১৭ রানে ৪ উইকেট তার ক্যারিয়ারেরই সেরা বোলিং। ওই ম্যাচে নিজের ভাণ্ডারে থাকা বৈচিত্রের পসরা মেলে ধরেছিলেন আলিস।
সেদিন স্পিন, টার্ন, সুইংয়ের মিশেলে নাজমুল হোসেন শান্ত, ইয়াসির আলি চৌধুরিদের ঘোর লাগিয়ে দেন তিনি। ওই পারফরম্যান্সেই মূলত জাতীয় নির্বাচকদের নজর কাড়ে তিনি। পরের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে নতুন বলে তার সামনে একটা সময় সুবিধা করতে পারছিলেন না বাবর আজমের মতো বিশ্বমানের ব্যাটসম্যানও।
এবারের বিপিএলে দুই দিকেই বল ঘোরানোর পাশাপাশি টপ স্পিন ও ফ্লোটারেও পারদর্শিতা দেখান তিনি। আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে স্পিনার হয়েও সিম ও সুইংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরেন প্রায় নিয়মিত।
[222124]
বিপিএলের পারফরম্যান্স দিয়েই শ্রীলঙ্কা সিরিজের দলে ঢুকে যান আলিস। তখনকার প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন বলেছিলেন, ব্যতিক্রমী বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভাবনায় সুযোগ পেয়েছেন আলিস। জাতীয় দলের সঙ্গে রেখে এই রহস্য স্পিনারকে পরখ করতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট।
কিন্তু সেটি আর হয়নি। বিপিএল চলাকালে কুমিল্লার অনুশীলনে আঙুলে চোট পান আলিস। যা তাকে ছিটকে দেয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ থেকে। প্রাথমিকভাবে দুই থেকে তিন সপ্তাহের কথা বলা হলেও, এক মাসের বেশি সময় লেগে যায় তার সুস্থ হতে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিপিএলের ম্যাচ খেলার পর আর তাকে দেখা যায়নি কোনো ম্যাচে।
চট্টগ্রামে তিন দিনের ক্যাম্পে থাকা ক্রিকেটারদের প্রাধান্য দিয়েই সাজানো হবে সামনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল। যেখানে স্পিন বিভাগে আছেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান, বাঁহাতি স্পিনার তানভির ইসলাম ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। এছাড়া দলের সঙ্গে যোগ দেবেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
বিপিএলে পাওয়া আঙুলের চোট কাটিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই নেটে বোলিং করছেন আলিস। প্রিমিয়ার লিগে এবার লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জে নাম লেখালেও তার দল জায়গা পায়নি সুপার লিগে। গতবারের দল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের সঙ্গে এখন অনুশীলন করছেন তিনি। ম্যাচ খেলার জন্য এখন বিসিবির মেডিকেল বিভাগের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছেন এই রহস্য স্পিনার।
এআর