ঢাকা: আর্সেনালকে হতাশায় ডুবিয়ে, দুর্দান্ত পথচলায় আরেকটি দাপুটে জয়ে টানা চতুর্থবার প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি।
শিরোপা প্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনালের চেয়ে ২ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে শেষ রাউন্ডে মাঠে নামে সিটি। ফলে আর্সেনালের বাজিমাত করতে তাদের শুধু জিতলেই হতো না, পথ হারাতে হতো গত তিনবারের শিরোপাজয়ীদের। মিকেল আর্তেতার দল নিজেদের কাজটা অবশ্য ঠিকঠাকই করল, কিন্তু তাদের আরেক চাওয়া পূরণ হলো না।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ফিল ফোডেনের জোড়া গোলে ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম ক্লাব হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে টানা শিরোপা জয়ের অনন্য কীর্তি গড়ল গার্দিওয়ালার দল।
অ্যামিরেটস স্টেডিয়ামে এভারটনের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে আর্সেনাল।গত ৬ ডিসেম্বরে অ্যাস্টন ভিলার মাঠে ১-০ গোলে হেরেছিল সিটি। তারপর থেকে অপরাজিত দলটি। ৩৮ ম্যাচে ২৮ জয় ও ৭ ড্রয়ে ৯১ পয়েন্ট নিয়ে মুকুট ধরে রাখল তারা। ২৮ জয় ও ৫ ড্রয়ে ৮৯ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ আর্সেনাল।
শিরোপা আর ইতিহাস গড়ার হাতছানিতে যে দুর্দান্ত শুরু পায় সিটি, সেখান থেকে সত্যিকার অর্থে আর কোনো ভাবনায়ই পড়তে হয়নি দলটিকে। ম্যাচ শুরুর ৭৯ সেকেন্ডেই এগিয়ে যায় তারা। বের্নার্দো সিলভার পাস ধরে ডি-বক্সের লাইন বরাবর একটু এগিয়ে বুলেট গতির শটে বল জালে পাঠান ফোডেন।
উল্লাসে ফেটে পড়ে ইতিহাদ স্টেডিয়াম। অ্যামিরেটসে তখন অনিশ্চয়তার কালো মেঘ জমাট বাঁধে আরেকটু। আর্সেনালের ২০ বছরের খরা কাটাতে যে শুধু জিতলেই হবে না।
একই সময়ে শুরু ম্যাচে আর্সেনালও পুরোটা সময় দাপুটে ফুটবল খেলে। প্রথম ১৫ মিনিটেই গোলের জন্য পাঁচটি শট নেয় তারা, দুটি লক্ষ্যেও থাকে; কিন্তু জালের দেখা মিলছিল না কিছুতেই। ডেকলান রাইসের নিচু শট ঝাঁপিয়ে ফেরান এভারটন গোলরক্ষক।
তবে, আগ্রাসী প্রতিপক্ষের সামনে দুই মিনিট পরই ফের আলগা হয়ে পড়ে ওয়েস্ট হ্যামের গোলমুখ। বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড দোকু বাঁদিক থেকে দারুণ এক পাস বাড়ান বক্সের মাঝামাঝি, আর প্রতিপক্ষের তিনজনের মধ্য থেকে প্রথম ছোঁয়ায় নিখুঁত শটে স্কোরলাইন ২-০ করেন ফোডেন।
[223718]
আগের দিনই প্রিমিয়ার লিগের মৌসুম সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয়ী ফোডেনের আসরে মোট গোল হলো ৩৫ ম্যাচে ১৯টি। চলতি মাসের শুরুতে ফুটবল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এফডব্লিউএ) নির্বাচিত বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলার এই ইংলিশ মিডফিল্ডার সতীর্থদের দিয়ে আটটি গোলও করিয়েছেন।
সিটির জোড়া গোলে এগিয়ে থাকা আর নিজেদের গোল না পাওয়ার হতাশার মাঝে ৩২তম মিনিটে উল্টো পিছিয়ে পড়তে বসেছিল আর্সেনাল। ডমিনিক ক্যালভার্ট-লুইনের শট পোস্টে লাগলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় তারা।
ভাগ্যের ফেরে ৪০তম মিনিটে পিছিয়েও পড়ে আর্সেনাল। ইদ্রিসা গেয়ির ফ্রি কিকে বল রক্ষণ প্রাচীরে লাফিয়ে ওঠা রাইসের মাথায় লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। আর্সেনাল সমর্থকদের মনে তখন হয়তো ‘সব শেষের’ শঙ্কা জেগে উঠেছিল। টিভি ক্যামেরায় সেই চিত্রই ধরা পড়ে।
তবে, প্রায় একই সঙ্গে শিরোপা লড়াই দুই ভেন্যুতেই নাটকীয় মোড় নেয়। পিছিয়ে পড়ার তিন মিনিটের মধ্যে অধিনায়ক মার্টিন ওডেগোরের পাস বক্সে পেয়ে প্লেসিং শটে সমতা টানেন জাপানের ডিফেন্ডার তাকেহিরো তমিয়াসু।
আর ইতিহাদে স্বাগতিকদের আক্রমণের ঢেউ সামলে অসাধারণ নৈপুণ্যে ব্যবধান কমান মোহামেদ কুদুস। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল সিটি ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে যান ঘানার এই মিডফিল্ডার; দুর্দান্ত ওভারহেড কিকে খুঁজে নেন ঠিকানা।
প্রথমার্ধে একচেটিয়া আধিপত্য করা সিটি ৫৯তম মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে শিরোপা লড়াইয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয়। সিলভার কাটব্যাক বক্সের বাইরে পেয়েই শট নেন রদ্রি, গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও রুখতে পারেননি।
এআর