ঢাকা : চরম হতাশা সঙ্গী করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হার, সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হতাশার রেকর্ড নেতিবাচকতার এক বৃত্তে আটকে দিয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে। কিন্তু বিশ্বকাপে মাঠে নামতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। শ্রীলংকাকে ধরাশায়ী করে হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পান শান্তরা।
পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নাচিয়ে ছাড়ে বাংলাদেশ। তাদের হারাতে না পারলেও আত্মবিশ্বাস কুড়ায় দল। গ্রুপ পর্বের অন্য দুই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস এবং নেপালকে হারিয়ে অনেকটা হেসেখেলেই কাটে সুপার এইটের টিকিট।
এবার শুরু আসল চ্যালেঞ্জ। সুপার এইটে কোনো সহজ প্রতিপক্ষ নেই। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের সামনে ২০২১ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। পরের ম্যাচে শক্তিশালী ভারত। আর গ্রুপ পর্বে জাদুকরি পারফরম্যান্স দেখানো আফগানিস্তান শেষ ম্যাচে শান্তদের পরীক্ষা নেবে।
গ্রুপ পর্বে তরুণ তানজিম-রিশাদদের পারফরম্যান্সে উতরে গেছে বাংলাদেশ। তবে সুপার এইটে কঠিন প্রতিপক্ষদের সামাল দিতে সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহর মতো পোড় খাওয়া ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা কাজে দেবে। ম্যাচের ভাব বুঝে তারা তরুণদের বাতলে দেবেন, কীভাবে কঠিন প্রতিপক্ষদের চোখে চোখ রেখে খেলতে হয়। তাদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তরুণদের সাহসের মিশেলেই রচিত হতে পারে বাংলাদেশের সাফল্যগাঁথা।
সুপার এইটে বাংলাদেশের তিন প্রতিপক্ষ ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাকিব এবং মাহমুদউল্লাহ দুজনেরই খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই তিন দলের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন ভারতের বিপক্ষে। দেশটির বিপক্ষে ১১ টি-টোয়েন্টিতে তার রান ১৮৫। বল হাতে দুটি উইকেটও রয়েছে।
অন্যদিকে তিন দেশের মধ্যে ভারতের বিপক্ষে সবচেয়ে কম ৭ ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। ব্যাট হাতে এই ৭ ম্যাচে খুব একটা নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ৭ ম্যাচে করেছেন ৭৫ রান। তবে বল হাতে ৬ উইকেট নিয়ে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
[225890]
আফগানিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়া, দুই দেশের বিপক্ষে সমান ৯টি করে ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। আফগানদের বিপক্ষে তার রান ১৯৪, আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৬৪। এছাড়া এই দুই দেশের বিপক্ষে যথাক্রমে ৪ ও এক উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন তিনি।
অন্যদিকে আফগানদের বিপক্ষে ১১ ম্যাচ খেলে সাকিবের রান ১৮৫, যার মধ্যে ৭০ রানের একটি ইনিংস। এছাড়া নিজের বাঁহাতি স্পিনে আফগানদের ১৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি।
তবে সুপার এইটে বাংলাদেশের তিন প্রতিপক্ষের মধ্যে সাকিবের রেকর্ড সবচেয়ে সমৃদ্ধ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। অজিদের সামনে পেয়ে ৯ ম্যাচে ২৫৭ রান যেমন করেছেন, তেমনি বল হাতে ১২ উইকেট নামের পাশে উঠেছে তার।
তাই বলা যায়, সাকিব-মাহমুদউল্লাহ দুজনই সুপার এইটে বাংলাদেশের তুরুপের তাস হতে পারেন। যদি নিজেদের অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সেরাটা মেলে ধরতে পারেন এই দুই অলরাউন্ডার, তাহলে সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখলেও বাড়াবাড়ি হবে না।
আগামী ২১ জুন বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৬টায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু বাংলাদেশের সুপার এইট পর্ব।
এমটিআই