ঢাকা: বাবা পয়গাম আহমেদের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। দাবা খেলতে খেলতেই অনন্তলোকে পাড়ি দিয়েছেন দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। শনিবার (৬ জুলাই) বেলা সোয়া এগারোটার দিকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে নিয়ে আসা হয় তার মরদেহ।
সেখানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শেষবারের মতো তাকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের মানুষরা। ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন জানাজায়।
মাত্র ৫০ বছর বয়সে অকালপ্রয়াত এই দাবাড়ুর কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), দাবা ফেডারেশন, তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে জিয়ার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে। বাবার কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
ছেলে তাহসিন তাজওয়ারকে গ্র্যান্ডমাস্টার বানোনোর স্বপ্ন দেখেছিলেন জিয়া। জিয়ার মৃত্যুতে তার সে স্বপ্নও ধাক্কা খেয়েছে। তবে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব জিয়ার পরিবারকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, ‘আমি কথাবার্তা বলে যেটা বুঝলাম, তাদের এখন একটা সহযোগিতা প্রয়োজন। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন সেজন্য পাশে থাকবে। দাবা ফেডারেশনের সঙ্গে মিলে আশা রাখি আমরা একটা কিছু করতে পারব তার পরিবারের জন্য।’
১৯৮৮ থেকে শুরু করে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিন দশকে ১৪ বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে রেকর্ড গড়েন জিয়া। ছাড়িয়ে যান সবাইকে। এ ছাড়া ঘরোয়া অসংখ্য টুর্নামেন্টে শিরোপা জিতেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও জিয়ার ছিল দৃপ্ত পদচারণ। ১৯৮৮ সালে বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডে প্রথম অংশগ্রহণ। এরপর আর থেমে থাকেননি। প্রায় সব অলিম্পিয়াডেই তিনি ছিলেন বাংলাদেশ দলের সদস্য। ১৯৯৩ সালে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে রানারআপ হন। ১৯৯৯ সালে ব্রিটিশ চ্যাম্পিয়নশিপেও হন দ্বিতীয়।
২০০১ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত রোডস আন্তর্জাতিক ওপেনে রানারআপ হয়ে গ্র্যান্ডমাস্টারের তৃতীয় ও চূড়ান্ত নর্ম অর্জন করেন জিয়া। এশিয়ান ব্যক্তিগত দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের আট আসরে খেলেছেন তিনি। পাঁচটি ফিদে ওয়ার্ল্ড কাপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এশিয়ান জোনাল দাবায় চারবার চ্যাম্পিয়ন হন। এশিয়ান দলগত দাবায় খেলেছেন তিনবার। গেল দেড় দশকে এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত মুখ ছিলেন জিয়া।
আইএ