ঢাকা: ফাইনালের আগেই টাইগ্রেসদের এশিয়া কাপ অভিযান শেষ। ভারতের কাছে সেমি-ফাইনালে বাজেভাবে হারার বাংলাদেশ কোচ হাশান তিলাকারাত্নের রেসিপি, বড় দলগুলির সঙ্গে বেশি বেশি ম্যাচ খেলতে পারলেই কেবল উন্নতি করতে পারে এই দল।
শ্রীলঙ্কার ডাম্বুলায় এশিয়া কাপের প্রথম সেমি-ফাইনালে শুক্রবার ভারতের কাছে ১০ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই দলের লক্ষ্য ছিল সেমি-ফাইনালে ভারতকে এড়ানো। মানসিকতায় পিছিয়ে থাকার প্রতিফলন পড়ে মাঠের ক্রিকেটেও। ব্যাটে-বলে একরকম অসহায় আত্মসমপর্ণই যেন করে নিগার সুলতানার দল।
২০১৮ আসরে ভারতকে হারিয়েই শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। ওই টুর্নামেন্টের আগ পর্যন্ত এশিয়া কাপে একটি পরাজয়ের অভিজ্ঞতাও ছিল না ভারতের। কিন্তু এই অঞ্চলের পরাশক্তিকে সেবার গ্রুপ পর্বে হারানোর পর ফাইনালেও হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ।
এরপর যতটা এগোনোর কথা ছিল দলটির, তা হয়নি মোটেও। কিছু কিছু জায়গায় বরং পিছিয়ে পড়ার ছাপও আছে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে চমকপ্রদ কিছু পারফরম্যান্স আছে বটে, তবে বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের মতো আসরে হতাশার পাল্লাই বেশি ভারী।
২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেশের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে জয়ের পর গত চারটি বিশ্বকাপে ১৫ ম্যাচের সবকটি হেরেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দল গত আসরে দেশের মাঠে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কাছে হেরে উঠতে পারেনি সেমি-ফাইনালেও। এবারও প্রথম ম্যাচে তারা হেরে যায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। পরে থাইল্যান্ড ও মালেয়েশিয়ার বিপক্ষে জিতলেও সেমিতে ভারতের বিপক্ষে সামান্য লড়াই করতেও পারেনি।
[228194]
শক্তি-সামর্থ্যে ভারত তো বাংলাদেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে, এখন শ্রীলঙ্কাও ক্রমে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রথম দুই ম্যাচই জিতেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সবশেষ ১১ ম্যাচের মধ্যে জিততে পেরেছে কেবল একটিতে।
কোচ হাশান তিলাকারাত্নে অবশ্য স্কিলে খুব একটা পিছিয়ে রাখছেন না নিগার সুলতানা, মুর্শিদা খাতুনদের। তবে তিনি ঘাটতি দেখছেন ক্রিকেট বোধে। এজন্যই বড় দলগুলির বিপক্ষে বাংলাদেশকে নিয়মিত ম্যাচ খেলা উচিত বলে মনে করেন শ্রীলঙ্কার ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের ব্যাটসম্যান।
সামনে এগোনোর পথে আমাদের মেয়েদের এটা ভালো একটা অভিজ্ঞতা হলো, এরকম বড় দলের সঙ্গে খেলে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেরাদের বিপক্ষে খেলতে পারলে নিজেদের খেলায় উন্নতি হয়।
পুরো ব্যাপারটি হলো বোধের। বোধ দিয়েই ম্যাচ জিততে হয়, স্কিল দিয়ে নয়। স্কিল তাদের আছে, কিন্তু লেখাটাকে আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে ওদের। সেটির সবচেয়ে সেরা উপায় হলো, উঁচু মানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সেরা দলগুলির বিপক্ষে নিয়মিত ম্যাচ খেলতে হবে আমাদের।
তিলাকারাত্নের কথায় কিছুটা যুক্তি অবশ্য আছে। ২০১৮ এশিয়া কাপের পর থেকে বাংলাদেশের ১২টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মধ্যে স্রেফ একটি করে সিরিজ ছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে (এই বছরই), ভারতের বিপক্ষে ছিল দুটি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলার সুযোগই হয়নি এখনও।
আগামী অক্টোবরে বাংলাদেশেই হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। ‘বি’ গ্রুপে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবেন নিগার সুলতানারা।
এআর