বদলি নেমে নায়ক ভিনিসিউস, রিয়ালের রেকর্ড

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ১১:৩০ এএম

ঢাকা : শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরল রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু প্রথমার্ধে ফিনিশিংয়ের সমস্যা আরও একবার তাদের ভোগাল ভীষণভাবে। বিরতির পর নিজেদের ভুলে তারা পিছিয়েও পড়ল। তবে সেই ধাক্কা সামলে শেষ পর্যন্ত বড় জয় পেল কার্লো আনচেলত্তির দল।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে শনিবার রাতে লা লিগার ম্যাচে এস্পানিওলকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে শিরোপাধারীরা।

জয়ের নায়ক ভিনিসিউস জুনিয়র। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে একটি করে গোল ও অ্যাসিস্ট করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।

[232560]

থিবো কোর্তোয়ার আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সমতা ফেরান দানি কারভাহাল। রদ্রিগোর দলকে এগিয়ে নেওয়া গোলে অবদান রাখার পর ব্যবধান বাড়ান ভিনিসিউস। পেনাল্টি থেকে শেষ গোলটি করেন আরেক তারকা কিলিয়ান এমবাপে।

দুই মৌসুম মিলিয়ে লা লিগায় এই নিয়ে টানা ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত (২৮ জয়, ১০ ড্র) থেকে রেয়াল মাদ্রিদ স্পর্শ করল রেয়াল সোসিয়েদাদের রেকর্ড। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে লিগে ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত (২২ জয়, ১৬ ড্র) ছিল সোসিয়েদাদও।

স্পেনের শীর্ষ লিগে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডে এই দুই দলের ওপরে আছে কেবল বার্সেলোনা। ২০১৭ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ৪৩ ম্যাচ অপরাজিত (৩৪ জয়, ৯ ড্র) ছিল কাতালান দলটি।

পুরো ম্যাচে রেয়ালের আধিপত্যের চিত্র মেলে পরিসংখ্যানেও। গোলের জন্য মোট ৩১টি শট নিয়ে ১৪টি লক্ষ্যে রাখে তারা। আর এস্পানিওলের ১০ শটের কেবল একটি লক্ষ্যে ছিল।

[232552]

শুরু থেকে বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য করা রেয়াল এগিয়ে যেতে পারত সপ্তম মিনিটে। লুকা মদ্রিচের কর্নারে এদের মিলিতাওয়ের হেড রুখে দেন এস্পানিওলের এক ডিফেন্ডার।

একাদশ মিনিটে ভালো সুযোগ পান এমবাপে। আর্দা গিলেরের হেড পাস বুক দিয়ে নামিয়ে কাছ থেকে ফরাসি তারকার নেওয়া শট ঠেকান গোলরক্ষক হুয়ান গার্সিয়া। চতুর্দশ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে গিলেরের নিচু শটও আটকে দেন তিনি।

২১তম মিনিটে আরেকটি সুযোগ পান এমবাপে। রদ্রিগোর পাসে বক্সের ভেতর থেকে সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ডের জোরাল নিচু শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন গোলরক্ষক। আট মিনিট পর ফের সুযোগ আসে এমবাপের সামনে। মদ্রিচের থ্রু বলে এবার তার শট ঠেকাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি গার্সিয়াকে।

প্রথমার্ধে গোলের জন্য ১৪টি শটের ৬টি লক্ষ্যে রেখেও জালের দেখা পায়নি রেয়াল। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই নিয়ে আট ম্যাচের সাতটিতেই প্রথমার্ধে গোল করতে ব্যর্থ হলো তারা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এমবাপে ও জুড বেলিংহ্যামের শট অনায়াসে ঠেকান গার্সিয়া। খেলার ধারার বিপরীতে ৫৪তম মিনিটে সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় এগিয়ে যায় এস্পানিওল। বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে বাইলাইনের কাছে গিলেরের বাধা এড়িয়ে শট নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড কারেয়াস। লক্ষ্যে ছিল না বল, তবে কোর্তোয়ার পায়ে লেগে জড়ায় জালে।

একুশ শতকে রেয়ালের প্রথম গোলরক্ষক হিসেবে লা লিগার ম্যাচে আত্মঘাতী গোল করলেন কোর্তোয়া।

সফরকারীদের সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৫৮তম মিনিটে তাদের গোলরক্ষকের ভুলে সমতায় ফেরে রেয়াল।

প্রথমে বক্সের বাইরে থেকে ফেদেরিকো ভালভের্দের জোরাল শট ঠেকিয়ে দেন গার্সিয়া। এস্পানিওলের এক ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে বাঁ দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে শট নেন বেলিংহ্যাম। বল ধরার চেষ্টায় পারেননি গার্সিয়া, তার হাতে লেগে শরীরের নিচ দিয়ে চলে যায় গোলমুখে। ফাঁকা জালে বল পাঠান কারভাহাল।

৬৮তম মিনিটে কোর্তোয়ার নৈপুণ্যে বেঁচে যায় রেয়াল। কারেয়াসের শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

দুই ব্রাজিলিয়ানের নৈপুণ্যে ৭৫তম মিনিটে এগিয়ে যায় রেয়াল। ৫৫তম মিনিটে গিলেরের বদলি নামা ভিনিসিউস বাম দিক থেকে পায়ের টোকায় চমৎকার নিচু ক্রস দেন বক্সে, আর ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে ডান পায়ে ঠিকানা খুঁজে নেন রদ্রিগো।

৭৮তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ভিনিসিউস। এমবাপে থ্রু বল বাড়ান বক্সে। ছুটে গিয়ে বাঁ পায়ের কোনাকুনি নিচু শটে গোলটি করেন ২৪ বছর বয়সী ভিনিসিউস।

এবার লা লিগায় ৬ ম্যাচে তার গোল হলো ৩টি, অ্যাসিস্ট ৪টি।

৮৪তম মিনিটে রদ্রিগোর বদলি নামা আরেক ব্রাজিলিয়ান এন্দ্রিক খানিক পরই পেনাল্টি আদায় করে নেন। তাকে ফাউল করেন কার্লোস রোমেরো। স্পট-কিকে রেয়ালের জার্সিতে নিজের ষষ্ঠ গোল করেন এমবাপে।

২০২২ সালের মার্চ-এপ্রিলে কারিম বেনজেমার পর রেয়ালের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে লা লিগায় টানা তিন ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করলেন এমবাপে।

চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই নিয়ে রেয়ালের ১৮ গোলের ১৭টিই হলো দ্বিতীয়ার্ধে, ১টি প্রথমার্ধে- লা লিগায় প্রথম ম্যাচে।

৬ ম্যাচে চার জয় ও দুই ড্রয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে রেয়াল। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সেলোনা, একটি ম্যাচ কম খেলেছে তারা।

রিয়ালের সমান ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ নম্বরে আছে এস্পানিওল।

এমটিআই