সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল রিয়াল

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪, ০১:৩৫ পিএম

ঢাকা : প্রথমার্ধে লক্ষ্যে দুটি শট নিয়ে দুটিতেই গোল পেল রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতির পরপর আরও একটি। অনায়াস জয়ের পথেই ছিল তারা। শেষ দিকে বদলে গেল সবকিছু। দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল দেপোর্তিভো আলাভেস। প্রতিপক্ষের একের পর এক আক্রমণ সামলে উত্তেজনায় ঠাসা বাকি সময়টা কাটিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল কার্লো আনচেলত্তির দল।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৩-২ গোলে জিতেছে শিরোপাধারীরা। লুকাস ভাসকেস দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কিলিয়ান এমবাপে। তাদের তৃতীয় গোলটি করেন রদ্রিগো।

দুই মেয়াদে রেয়ালের ডাগআউটে আনচেলত্তির এটা ৩০০তম ম্যাচ। এর মধ্যে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন ২১৬টি, জিতেছেন অনেক শিরোপা।

[232800]

এই জয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান কমাল রেয়াল। সাত ম্যাচে পাঁচ জয় ও দুই ড্রয়ে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে তারা। এক ম্যাচ কম খেলে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কাতালান ক্লাবটি।

পারফরম্যান্স মনমতো না হলেও, দল জয়ের ধারাতেই আছে। কিন্তু প্রথমার্ধে যে গোল মিলছে না, এস্পানিওলের বিপক্ষে জয়ের পর এই নিয়ে দুর্ভাবনার কথা বলেছিলেন কার্লো আনচেলত্তি। কোচের সেই দুশ্চিন্তা এবার প্রথম মিনিটেই ঘুচিয়ে দেন ভাসকেস।

ম্যাচ শুরু হতেই নিজেদের সীমানায় ফ্রি কিক পায় রেয়াল। সেখান থেকে সতীর্থের লম্বা উঁচু করে বাড়ানো বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ভিনিসিউস জুনিয়র, কাটব্যাক করেন ছয় গজ বক্সের মুখে। সেখানে প্রথম ছোঁয়ায় নিখুঁত শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ভাসকেস।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চলতি মৌসুমে এই পর্যন্ত রেয়ালের ১৯ গোলের মাত্র দুটি এলো প্রথমার্ধে।

বেশিরভাগ সময় বল দখলে রেখে গতিময় সব আক্রমণ শাণাতে থাকে রেয়াল, যদিও বারবার শেষ ধাপে গিয়ে গুলিয়ে ফেলছিল তারা। প্রথম ২০ মিনিটে আলাভেসই বরং দুটি শট নেয়, তবে সেভাবে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে ভাবাতে পারেনি তারা।

আগের দিন এমবাপেকে বিশ্রাম দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও, তাকে শুরুর একাদশেই রাখেন কোচ। ২২তম মিনিটে বল জালেও পাঠান ফরাসি তারকা, কিন্তু অফসাইডে ছিলেন তিনি।

সাত মিনিট পর দারুণ নৈপুণ্যে একজনকে কাটিয়ে বাইলাইন ধরে বক্সে ঢোকার মুখে কড়া ট্যাকলের শিকার হন ভিনিসিউস। কিন্তু রেফারি ফাউল না ধরায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা, এজন্য হলুদ কার্ড দেখেন তিনি। এস্পানিওল ম্যাচেও হলুদ কার্ড দেখেছিলেন এই ফরোয়ার্ড।

বেলিংহ্যামের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় ৪০তম মিনিটে সুন্দর একটি গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমবাপে। সতীর্থকে বল বাড়িয়ে ক্ষীপ্রতায় ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন সাবেক পিএসজি তারকা, এরপর ফিরতি বল ধরে একজনকে কাটিয়ে প্লেসিং শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।

রেয়ালের জার্সিতে ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এমবাপের লা লিগায় সাত ম্যাচে গোল হলো ৫টি।

বিরতির পর তৃতীয় মিনিটে আবারও জালে বল জড়িয়ে জয়ের পথে এগিয়ে যায় রেয়াল। ভাসকেসের পাস ধরে বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে নিচু শটে গোলরক্ষকের পায়ের ফাঁক দিয়ে গোলটি করেন রদ্রিগো।

টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জালের দেখা পেলেন তিনি। আসরে তার গোল হলো তিনটি।

তিন মিনিট পর প্রতিপক্ষের ভুলে দারুণ সুযোগ পেয়ে যান ভিনিসিউস। কিন্তু বক্সে প্রতিপক্ষের দারুণ স্লাইডে বল হারিয়ে ফেলেন তিনি।

৬৯তম মিনিটে রদ্রিগোর বদলি নামার চার মিনিটের মধ্যে গোল পেতে পারতেন এন্দ্রিক। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে জোরাল শট নেন তরুণ ব্রাজিলিয়ান, প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে বল ওপরে উঠে পোস্টের উপরের অংশে লাগে।

৭৭তম মিনিটে ম্যাচে সেরা সুযোগটি পায় আলাভেস, তবে তারাও পোস্টের দুর্ভাগ্যে পড়ে। আলজেরিয়ার ফরোয়ার্ড আব্দের কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে পড়া থিবো কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্টে লাগে।

নির্ধারিত সময় শেষের পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে দৃশ্যপটে আসে পরিবর্তন, পরপর দুই মিনিটে দুই গোল করে লড়াই জমিয়ে তোলে আলাভেস।

রেয়ালের প্রথম গোল হজমের পেছনে দায় অবশ্য তাদেরই। নিজেদের সীমানায় তারা পজেশন হারালে, আলগা বল ধরে দূর থেকে অসাধারণ এক বাঁকানো শট নেন মিডফিল্ডার কার্লোস বেনাভিদেস। পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে বল জালে জড়ায়।

পরের মিনিটে আবারও আলাভেসের আক্রমণ এবং গোল। বক্সে থেকে কোনাকুনি শট নেন কিকে গার্সিয়া, এবার অন্য পাশের পোস্টে লেগে বল ঠিকানা খুঁজে পায়।

আত্মবিশ্বাসী হয়ে রেয়ালের রক্ষণে প্রবল চাপ দেয় আলাভেস। কঠিন হলেও বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে; কিন্তু আর বল জালে পাঠাতে পারেনি তারা। শেষ বাঁশি বাজতেই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে রেয়াল!

এমটিআই