রেকর্ড গড়া জয়ে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল শ্রীলঙ্কা 

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম

ঢাকা: শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রেকর্ড গড়ে জিতল স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ধসে পড়া নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয়ভাগে কিছুটা লড়াই করল। কিন্তু তিন ব্যাটসম্যানের পঞ্চাশ ছাড়ানো রান যথেষ্ট হলো না ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে। 

নিশান পেইরিসের চমৎকার বোলিংয়ে রেকর্ডগড়া জয়ে কিউইদের হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল শ্রীলঙ্কা। গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই দলের দ্বিতীয় টেস্টটি রোববার ইনিংস ও ১৫৪ রানে জিতেছে লঙ্কানরা। 

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিজাত সংস্করণে এটিই তাদের সবচেয়ে বড় জয়। ১৯৯৮ সালে এই গলেই জিতেছিল ইনিংস ও ১৬ রানে। প্রায় ৬ বছর পর টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের তেতো স্বাদ পেল নিউ জিল্যান্ড। এই অভিজ্ঞতা তাদের সবশেষ হয়েছিল ২০১৮ সালের নভেম্বরে, দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংস ও ১৬ রানে হেরেছিল।

টানা তিনটি টেস্ট জিতল শ্রীলঙ্কা। ইংল্যান্ড সফরের শেষ টেস্ট জেতা দলটি গলে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিতেছিল ৬৩ রানে। এর আগে কিউইদের একবারই হোয়াইটওয়াশ করতে পেরেছিল লঙ্কানরা, ২০০৯ সালে ঘরের মাঠে দুই টেস্টের সিরিজে।

শ্রীলঙ্কার জয়ের ভিতটা গড়া হয়ে যায় প্রথম ইনিংসে ৫১৪ রানের লিড পেয়ে। ৬০২ রানে ইনিংস ঘোষণা করে প্রতিপক্ষকে ৮৮ রানে গুটিয়ে ফলো-অন করায় তারা। দ্বিতীয় দফায় ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৬০ রান করে সফরকারীরা।

প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেওয়া পেইরিস দ্বিতীয়ভাগে কেড়ে নেন আলো। ১৭০ রানে ৬ শিকার ধরেন এই অফ স্পিনার। টেস্ট অভিষেকে ইনিংসে ছয় উইকেট নেওয়া শ্রীলঙ্কার পঞ্চম বোলার তিনি। ম্যাচে তার ৯ উইকেট দলটির অভিষিক্ত কোনো বোলারের তৃতীয় সেরা।

প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটের পর এবার ৩ শিকার ধরেন প্রাবাথ জায়াসুরিয়া। প্রথম টেস্টেও ৯ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।

[233152]

দুই স্পিনারের দুর্দান্ত বোলিং ছাপিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নেন একমাত্র ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা ১৮২ রান করা কামিন্দু মেন্ডিস।

৫ উইকেটে ১৯৯ রান নিয়ে চতুর্থ দিন ব্যাটিং শুরু করে নিউ জিল্যান্ড। ৪৭ রানে অপরাজিত থাকা টম ব্লান্ডেল প্রথম ওভারেই স্পর্শ করেন ফিফটি, ৫৩ বলে। এক ওভার পর পেইরিসকে রিভার্স সুইপ করে এলবিডব্লিউ হন তিনি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৬০ রান করা ব্লান্ডেল।

৯৫ রানের জুটি ভাঙার পর মিচেল স্যান্টনারকে নিয়ে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়েন গ্লেন ফিলিপস। ৩২ রান নিয়ে খেলতে নামা ব্যাটসম্যান চতুর্থ টেস্ট ফিফটিতে পা রাখেন ৬৬ বলে। তাকে ফিরিয়েই কাঙ্ক্ষিত পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন পেইরিস। লং-অনে ধরা পড়েন ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ৭৮ রান করা ফিলিপস, ভাঙে ৬৪ রানের জুটি।

টিম সাউদিকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি জায়াসুরিয়া। এজাজ প্যাটেলকে নিয়ে ৫৩ রানের জুটি গড়ে শ্রীলঙ্কার জয়ের অপেক্ষা বাড়ান স্যান্টনার। এই দুইজনের যুগলবন্দী ভাঙার সুযোগ পেয়েছিল লঙ্কানরা, কিন্তু এজাজের দুটি ও স্যান্টনারের একটি ক্যাচ ছাড়ে তারা।

জমে যাওয়া এই জুটি শেষ পর্যন্ত ভাঙেন জয়সুরিয়া। ৪০ বলে ১ ছক্কা ও ৩ চারে ২২ রান করে বোল্ড হন এজাজ। কিছুক্ষণ পর স্যান্টনারকে ফিরিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন পেইরিস। তৃতীয় টেস্ট ফিফটিতে স্যান্টনার করেন ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ৬৭।

পরপর দুই পরাজয়ে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে বড় ধাক্কা খেল নিউ জিল্যান্ড। তিন নম্বরে থেকে সিরিজ শুরু করা কিউইরা ৩৭.৫০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে নেমে গেছে। প্রথম ম্যাচ জিতে তিন নম্বরে ওঠা শ্রীলঙ্কা এখন ৫৫.৫৬ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করেছে।

এআর