ঢাকা: রিজা হেনড্রিক্সের দারুণ এক সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সফরকারীদের করা ২০৬ রান টপকাতে ৩ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সেঞ্চুরিয়ানে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের মধ্যদিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল প্রোটিয়ারা।
অবশ্য প্রথম ম্যাচে ১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় হোঁচট খায় পাকিস্তান। জয়ের কাছাকাছি গিয়ে পাকিস্তানকে ১১ রানে হারতে হয়েছে।
দ্বিতীয় ম্যাচে আব্বাস আফ্রিদির স্লোয়ারে বাউন্ডারির কাছে ইরপানের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেও ৬৩ বলে ৭ চার ও ১০টি ছক্কায় ১১৭ রান করেন দুর্দান্ত রিজা হেনড্রিক্স।
মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে সাইম আইয়ুবের তাণ্ডবে ২০৬ রানের সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে রিজা হেনড্রিক্স ও রাসি ভান ডার ডুসেনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। স্কোরবোর্ডে মাত্র ৬ রান জমা হতেই রায়ান রিকেলটনকে হারায় প্রোটিয়ারা। জাহানদাদ খানের বল খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ওপেনার।
পাওয়ার-প্লে শেষ হওয়ার আগে আরও একবার প্রোটিয়া শিবিরে আঘাত হানেন পাকিস্তানি এই বোলার। দলীয় ২৮ রানে এবার তিনি শিকার করেন ম্যাথিউ ব্রিটজকেকে। ১০ বলে ১২ রান করে শাহীন আফ্রিদির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
[239633]
পাকিস্তানি বোলারদের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ২৮ রানে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা। তবে সেই চাপ সামলে ওঠেন রিজা হেনড্রিক্স ও রাসি ভান ডার ডুসেন। ৮৩ বল স্থায়ী ১৫৭ রানের জুটিতে অগ্রণী ছিলেন হেনড্রিকস। সেঞ্চুরির পথে ৫১ বলে তিনি করেন ১০৩ রান, ২৩ বলে ফন ডার ডাসেন ৪৯।
টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় উইকেটে এটাই দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা জুটি। আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০১২ সালে হ্যামিল্টনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে রিচার্ড লেভি ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের অবিচ্ছিন্ন ১৩৩।
আজ পাকিস্তানের বোলারদের তুলোধোনা করে হেনড্রিকস তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। অবশেষে ১১৭ রানে থামেন তিনি। আব্বাস আফ্রিদিরি স্লোয়ারে বাউন্ডারির কাছে ইরপানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ওপেনার। ৬৩ বলে ৭ চার ও ১০টি ছক্কায় ইনিংসটি সাজিয়েছেন হেনড্রিক্স।
এতে চলতি বছর দ্বিতীয়বার নিজের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙলেন হেনড্রিকস। গত মে মাসে আগের সেরা ৮৩ ছাড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছিলেন ৮৭ রান।
এবার পেলেন সেঞ্চুরির অনির্বচনীয় স্বাদ। কুইন্টন ডি কককে ছাড়িয়ে টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি (১৮টি) পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসের কীর্তি গড়লেন তিনি।
এরপর ভান ডার ডুসেনকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন অধিনায়ক হেনরিখ ক্লাসেন। ভান ডার ডুসেন ৩৮ বলে অপরাজিত ৬৬ রান করেন।
অন্যদিকে ৫ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন ক্লাসেন। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করে দেন তিনি। পাকিস্তানের হয়ে জাহানদাদ খান দুটি ও আব্বাস আফ্রিদি নেন একটি উইকেট। তবে এই ম্যাচে আরও একবার খরুচে বোলিং করেন হারিস রউফ। ৪ ওভারে গতিময় এই পেসার দেন ৫৭ রান। আবরার আহমেদ ছাড়া বাকি সবাই রান দেন ওভার প্রতি ৯ এর বেশি করে।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটাও খুব একটা ভালো করতে পারেনি মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। দলীয় ১৬ রানের মাথায় অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে হারায় পাকিস্তান। এরপর সাইম আইয়ুবের সঙ্গে ৪৫ বলে ৮৭ রানের জুটি গড়েন বাবর।
২০ বলে ৩১ রান করে বাবর আজম ফিরলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে প্রোটিয়া বোলারদের একাই সামাল দেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করা সাইম আইয়ুব।
এতে উসমান খান টিকতে পেরেছিলেন মাত্র ৫ বল। ৩ রান করে তিনি ফেরেন দাইয়ান গালিমের বলে মাফাকার হাতে ক্যাচ দিয়ে। তায়াব তাহির ফেরেন ৬ রান করে।
এরপর পঞ্চম উইকেট জুটিতে সাইম আইয়ুবের সঙ্গে যোগ দেন ইরফান খান। তারা দুজনে মিলে ৭৩ রান যোগ করে বড় সংগ্রহের আভাস দেন।
তবে ১৬ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফেরেন ইরফান আর ৯৮ রানে অপরাজিত থাকেন সাইম আইয়ুব। দুই রানের জন্য তার সেঞ্চরি মিস হয়। অন্যদিকে ৪ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন আব্বাস আফ্রিদি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দাইয়ান গালিম ও বার্টমান নেন দুটি করে উইকেট। জর্জ লিন্ডে নেন এক উইকেট।
এআর