ঢাকা: তিন সংস্করণ মিলিয়ে সবশেষ ছয় ইনিংসে লিটন কুমার দাসের ইনিংস ১, ২৫, ৪, ২, ০, ০। টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়ার পর আর দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। রানখরার পাশাপাশি তার আউট হওয়ার ধরন নিয়েও দুর্ভাবনার জায়গা দেখছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ।
সেন্ট কিটসে ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচে লিটন করেছেন মোট ছয় রান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তিন ম্যাচের সিরিজে সবগুলোতে ব্যাটিংয়ে নেমে এর চেয়ে কম রান আর একবারই করেছেন তিনি, ২০১৯ সালে নিউ জিল্যান্ড সফরে।
ওয়ানডের দুর্দশা কাটানোর সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি সিরিজে। কিন্তু প্রথম লড়াইয়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথম বলেই ধরেছেন ড্রেসিং রুমের পথ। ক্যারিবিয়ান সফরে সাদা বলের ক্রিকেটে যেন 'ওয়াকিং উইকেট' হয়ে গেছেন লিটন।
প্রথম ওয়ানডেতে ফোর্থ স্টাম্প ঘেঁষা ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হন লিটন। পরের ম্যাচে অফ স্টাম্পের কিছুটা বাইরের শর্ট বল পুল করার চেষ্টায় অদ্ভুতভাবে তিনি ক্যাচ দেন পয়েন্টে। শেষটিতে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে স্লিপে ক্যাচ দেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
পরপর তিন ম্যাচে পেসারদের বলে আউট হওয়ার পর টি-টোয়েন্টিতে তিনি প্রথম বলেই ফিরতি ক্যাচ দেন বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেনকে।
সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে ১৩ ইনিংস ধরে ফিফটি নেই লিটনের ব্যাটে। সবশেষ ৭ ইনিংসে তো দুই অঙ্কই ছুঁতে পারেননি। টি-টোয়েন্টিতে সবশেষ ২২ ইনিংসে তার ফিফটি মাত্র একটি।
[239829]
সাদা বলের ক্রিকেটে লিটনের ধারাবাহিক ছন্দহীনতায় চিন্তার ভাজ প্রধান নির্বাচকের কপালে। সিরিজের মাঝপথে থাকায় এই প্রসঙ্গের গভীরে যেতে চাননি তিনি। তবে মিরপুরে সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে লিটনের আউট হওয়ার ধরন নিয়ে দুর্ভাবনার কথা আড়াল করেননি গাজী আশরাফ।
লিটনের কাছে দল যা প্রত্যাশা করে, তিনি যে মানের ব্যাটসম্যান, সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি ততটা ধারাবাহিক নন। তাই টুর্নামেন্ট (গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে) নির্ধারণী ম্যাচেও কিন্তু আমরা তাকে দলের বাইরে রেখেছিলাম। এই মুহূর্তে তিনি আমাদের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। একটা সিরিজ চলছে। আমার মনে হয়, এখন এটা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার আদর্শ সময় নয়।
তবে এতটুকু বলতে পারি, আমরা তার আউট হওয়ার ধরন নিয়ে অবশ্যই চিন্তিত। ভবিষ্যতে যদি (ব্যাটিংয়ের) কিছু মেরামতের প্রয়োজন হয়, কোচরা আছেন। যদি সাময়িক বিরতি প্রয়োজন হয়, সেজন্যও কোচরা আছেন। অথবা তিনি যদি সামনের দুটো ম্যাচে ফেরত আসতে পারেন, তা সবচেয়ে বেশি স্বাগত জানান হবে।
ব্যাট হাতে ছন্দহীনতায় থাকা অবস্থায়ই ক্যারিবিয়ান সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অধিনায়কত্ব পান লিটন। দল ঘোষণার বিবৃতিতে তার এই দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত নাকি পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে সেই বিষয়ে কিছু জানায়নি ক্রিকেট বোর্ড।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, ব্যাট হাতে ছন্দহীনতার কারণে যার জাতীয় দলে জায়গা পাওয়াই প্রশ্নবিদ্ধ, তাকে কোন বিবেচনায় এত বড় দায়িত্ব দেওয়া হলো! নিজের অবস্থান থেকে এই প্রসঙ্গে গাজী আশরাফ বলেন, হয়তো আপাতকালীন কাজ চালানোর চেষ্টা করেছে বিসিবি।
আমি মনে করি, হয়তো স্বল্পমেয়াদি হিসেব করে হয়তো বোর্ড একটা সমাধান (লিটনকে অধিনায়কত্ব দিয়ে) করার চেষ্টা করেছে। কারণ বোর্ডের হাতেও যে অনেক বিকল্প ছিল, তা নয়। অনেক ক্রিকেটারই চোটে ছিল।
এআর