ঢাকা: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের বিদায়ে শেষ হয়ে গেল ঝলমলে এক অধ্যায়। তামিম রেকর্ড বইয়ে ছাপ রেখেছেন ভালোভাবেই। অনেকগুলো রেকর্ড নিয়েই বিদায় নিলেন এই ওপেনার।
শুরুটা হয়েছিল ২০০৭ সালে, হারারেতে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক ছিল। শুরুটা ক্রিকেট মাঠে ছিল, শেষটা হল এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে।
দেখে নেয়া যাক ৩৫ বর্ষী তারকার দেড়যুগের পথচলার রেকর্ড, অর্জন, কীর্তিগুলো। ওয়ানডেতে এক ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি রান করার বিশ্বরেকর্ড তামিমের।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৮৭ ওয়ানডে খেলে ২,৮৫৩ রান করেছেন। এই রেকর্ডে পরের দুটি নামও বাংলাদেশের, মুশফিকুর রাহিম (২,৬৮৪) ও সাকিব আল হাসান (২,৬৫৬)।
এপর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে তিন সংস্করণে সেঞ্চুরি আছে কেবল তামিমের। দেশের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন বাঁহাতি তারকা। ওয়ানডে-টেস্টে আগেই ছিল, ২০১৬ সালে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করে অনন্য কীর্তি গড়েন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করা বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার তামিম। গত আগস্টে তার সঙ্গী হন মুশফিক। পরে তাকে টপকে এক নম্বরে উঠে যান মুশফিক (১৫,৩০০ রান)।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কনিষ্ঠতম সেঞ্চুরিয়ান তামিম। ২০০৮ সালে মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরির দিনে তার বয়স ছিল ১৯ বছর ২ দিন। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৫০ ছাড়ানো ইনিংসের রেকর্ডও তার। টেস্ট ৪১টি ও ওয়ানডেতে ৭০টি ফিফটি পেরোনো ইনিংস রয়েছে তার।
[241510]
ওয়ানডেতে ৮ হাজার রান করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটার তামিম। ২৪৩ ম্যাচে ৮,৩৫৭ রান নিয়ে শেষ হল ক্যারিয়ার। দুইয়ে মুশফিকের ৭,৭৯৩ রান। তিন সংস্করণ মিলিয়ে অন্তত ৫০০ রান করা বাংলাদেশি ব্যাটারদের সর্বোচ্চ গড় তামিমের, ৩৫.৪১। ওয়ানডেতে ছক্কার সেঞ্চুরি করা দেশের প্রথম ব্যাটারও তিনি।
টেস্টেও একসময় দেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল তামিমের। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০৬ রান করেছিলেন। পরে ২১৭ রান করে সেটি ছাড়িয়ে যান সাকিব। এখন ২১৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে রেকর্ডটি মুশফিকের দখলে। এই ফরম্যাটে টানা পাঁচ ইনিংসে ফিফটি করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটারও তিনি।
২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করার পথে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন তামিম। টেস্ট ইতিহাসে দলের দ্বিতীয় ইনিংসে এটিই ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ জুটির বিশ্বরেকর্ড।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২২ বার ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন তামিম। বাংলাদেশের হয়ে তার চেয়ে বেশি এই স্বীকৃতি পেয়েছেন শুধু সাকিব, ৪৫ বার। আর সিরিজসেরার পুরস্কার ৭ বার পেয়েছেন তামিম। এই তালিকায়ও তার উপরে শুধু সাকিব, ১৭ বার।
ওয়ানডেতে ৩৭ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন। এরমধ্যে জয় পেয়েছেন ২১টিতে, আর জয়-পরাজয় আসেনি ২ ম্যাচে। সাফল্যের হার ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশকে অন্তত ৫ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেয়া অধিনায়কদের মধ্যে সাফল্যের হারে তামিমই সেরা।
তামিমের নামের পাশে রয়েছে বিব্রতকর এক রেকর্ডও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ডাক তথা শূন্যের রেকর্ডটিও তার।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৩৬ বার রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেছেন। মাশরাফি ৩৩ বার শূন্য রানে আউট হয়ে দুই নম্বরে।
এআর