সাঁতারের বদলে মানুষের মতো হাঁটে যে মাছ!

  • ফিচার ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৪, ০৫:০৬ পিএম

ঢাকা: সমুদ্রের গভীরে এমন একটি মাছ রয়েছে, যেটি সাঁতার না কেটে বরং হাঁটতে পছন্দ করে! বিরল এই মাছের নাম হ্যান্ড ফিশ। এর পাখনাগুলো দেখতে অনেকটা মানুষের হাতের মতো, আর এদের অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য হলো, এটি সেই পাখনা দিয়েই সমুদ্রের তলদেশে হাঁটে। এর লাল, গোলাপি, বা দাগযুক্ত শরীর দেখে যেমন চমক লাগে, তেমনি এর হাতে সাঁতার কাটার দৃশ্য।

এই অসাধারণ মাছটি দেখতে পাওয়া যায় তাসমানিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ উপকূলের গাঢ় সমুদ্রের তলদেশে। তবে কৌতূহল এখানেই শেষ নয়। বিজ্ঞানীরা জানান, হ্যান্ডফিশের বিশেষ এই বৈশিষ্ট্য তাদের শরীরের ফিনগুলোর গঠনের কারণে, যা দেখতে একদম হাতের মতো। আর তাই তাদের নাম হয়েছে 'হ্যান্ডফিশ'।

সাধারণ মাছেরা যেমন সাঁতার কাটে, কিন্তু হ্যান্ড ফিশ সাঁতারের বদলে তার পাখনাগুলোর সাহায্যে হাঁটে। যা প্রকৃতির এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। হ্যান্ডফিশের এই বিশেষত্বের কারণেই তারা এত জনপ্রিয় । তাদের গায়ের বর্ণনা করলেও যেন মনে হয়, এক জীবন্ত রঙিন ছবি। সাধারণত লাল, কমলা বা হলুদ রঙের হয় এই মাছ, যা তাদের আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। তবে এই রঙ শুধু তাদের রক্ষা করার জন্য নয়, বরং শিকারিদের থেকে আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবেও কাজ করে। অন্য মাছেরা যেখানে দ্রুতগতিতে সাঁতার কাটে, সেখানে হ্যান্ড ফিশ ধীরে ধীরে হাঁটে।

[236319]

এখন হ্যান্ডফিশের মোট ১৪টি প্রজাতি চিহ্নিত হয়েছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত কয়েকটি প্রজাতি হলো রেড হ্যান্ডফিশ যা বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে রয়েছে। স্পটেড হ্যান্ডফিশ একটি বিশেষ প্রজাতি, যার শরীরে সাদা এবং কালো দাগ থাকে। জেব্রা হ্যান্ডফিশ, এই প্রজাতিটিও বেশ বিরল এবং কেবল অস্ট্রেলিয়ার নির্দিষ্ট অঞ্চলেই দেখা যায়। এছাড়া পিঙ্ক হ্যান্ডফিশ যা অনেকদিন ধরে মানুষের চোখের আড়ালে ছিল। ১৯৯৯ সালের পর এই প্রজাতি আর দেখা যায়নি, তাই ধারণা করা হয় এরা হয়তো বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

গবেষকরা বলছেন, এই প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাদের সংখ্যা খুবই সীমিত, পরিবেশ দূষণ ও প্রাকৃতিক বাসস্থানের ধ্বংস এই প্রজাতিকে আরো বিপদে ফেলছে। হ্যান্ডফিশ অত্যন্ত ধীরে বংশবৃদ্ধি করে, আর এ কারণেই তাদের সংখ্যা তেমন বৃদ্ধি পায় না। এদের রক্ষা করতে চালু করা হয়েছে বিশেষ প্রকল্প। তাসমানিয়ার কিছু অংশে গবেষকরা হ্যান্ডফিশের আবাসস্থল সংরক্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে এই অদ্ভুত মাছ বেঁচে থাকে।

ইউআর