আশুলিয়া: আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর আট বছরের শিশু আসিফ খান হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। হত্যার ১৯ দিন পর মূল হত্যাকারীকে গ্রেফতারের পর হত্যাকারী নিজেই হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় শিশু আসিফের হত্যাকারী ও হত্যার সহযোগী। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গবিন্দ কর্মকারের ছেলে নেপাল কর্মকার (১৪) ও তার ভগ্নিপতি নাটোরের গুরুদাসপুর থানাধীন নিতাই কর্মকারের ছেলে অন্ন কর্মকার (৩২)। এরা দু’জনেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঢাকা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলম জানান, গত ১১ অক্টোবর বিকেল আশুলিয়ার পূর্ব কলতাসূতি এলাকার জুয়েল খানের ছেলে আট বছরের শিশু আসিফ খান থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ঘটনায় আসিফের বাবা আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর দু’দিন পর ১৩ অক্টোবর তাদের বাড়ির পাশের একটি গলিতে আসিফের আঘাতপ্রাপ্ত নিথর মরদেহ পাওয়া যায়। ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলে এজাহারভুক্ত কয়েকজন আসামি কারাগারেও রয়েছে।
রহস্য উদঘাটনের বিষয়ে তিনি জানান, আসিফ ওই এলাকার দি প্যারুজ নামের একটি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবা-মায়ের সাথেই পূর্ব কলতাসূতি এলাকায় নিজ বাড়িতে থাকতো। তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া অন্ন কর্মকারের শ্যালক ১৩ বছর বয়সী নেপালের সাথে খেলাধুলা করতো। খেলাধুলায় সময় প্রায়ই ঝঁগড়া হতো আসিফের। গেল ১১ অক্টোবর বিকেলে আসিফকে একটি যান্ত্রিক মোটর দেওয়ার কথা বলে নিজকক্ষে নিয়ে যায় নেপাল।
নেপালদের কক্ষে নিয়ে গিয়ে যান্ত্রিক মোটরটি দিয়ে নেপাল আসিফকে বলে ‘আমার সঙ্গে আর ঝঁগড়া করবি না’। কিন্তু আসিফ এসময় উত্তেজিত হলে প্রথমে নেপাল তাকে গলায় পা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর আসিফের লাশ লুকিয়ে রাখা হয় নেপালদের ঘরের ওয়্যারড্রপের নিচের একটি ড্রয়ারে।
তিনি আরো জানান, আসিফ নিখোঁজ হওয়ার পর সেদিন সন্ধ্যায় স্থানীয়রাসহ নেপালও খুঁজতে থাকে। রাতে নেপাল তার বোনের স্বামী অন্ন কর্মকারকে হত্যার পর মরদেহ ওয়্যারড্রপে রেখে দেওয়ার কথা জানালে পরদিন (১২ অক্টোবর) ভোরের দিকে আসিফের মরদেহ ঘরের পাশের একটি গলিতে ফেলে রাখা হয়। পরে পুলিশ ১৩ অক্টোবর সকালে মরদেহ উদ্ধার করে।
আমারা অনেককেই সন্দেহ করেছিলাম তবে নেপাল হত্যার পরদিনই বাড়িতে চলে যায়। তাকে বারবার বাড়ি থেকে আসতে বলা হলেও সে আসেনি। সন্দেহের মাত্রাটা একটু বেড়ে গেলে তাকে নানা কৌশলে আশুলিয়ায় নিয়ে আসা হয়। পরে হত্যার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে সে।
শিশু আসিফ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসওয়াদুর রহমান জানান, আমরা ১৯ দিন চেষ্টা করে আসিফ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি। এই মামলায় ৭ জন আসামি গ্রেফতার হয়েছিল। তারা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মামলা থেকে অব্যাহতি পাবে।
সোনালীনিউজ/এআই/এসআই
আপনার মতামত লিখুন :