মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামে অবৈধভাবে সরকারি রাস্তার ৪টি মোটা মেহগুনি গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকীর নির্দেশে কর্তনকৃত গাছ গুলো ঘটনাস্থলে রাখতে বলা হয়েছে। এলাঙ্গী গ্রামের সাবেক মেম্বার শামীম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি রাইপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত এলাঙ্গী গ্রামের গড়–ইয়ের মাঠ নামক স্থানে (মাঠের রাস্তার পার্শ্বে) ৪টি বড় ও মাঝারী আকারের মেহগুনি গাছ কর্তনে নেতৃত্ব দেয় বকুল। এলাঙ্গী গ্রামের নজু হকের ছেলে বকুল হোসেন নিজের জমিতে লাগানো গাছ দাবি করে প্রকাশ্যে গাছ কর্তন করেছে। সরকারী রাস্তার ধারে গাছ কর্তন করতে নিষেধ করা হলেও অভিযুক্তরা প্রশাসনের নিষেধ না শুনে প্রকাশ্যে দিবালোকে গাছ গুলো কর্তন করেছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছগুলো স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, গ্রামের কয়েকজন জানান, ৪টি গাছ যার মূল্য ৬০ হাজার টাকা হবে। আমাদের জন্মের পর থেকে দেখে আসছি গাছগুলো রাস্তার পার্শ্বে। এই রাস্তা দিয়ে আমাদের বাপ দাদারাও এই রাস্তা দিয়ে মাঠে গিয়েছে। এখন শুনছি, এখানে কোন সরকারী রাস্তা নেই।
গাছ কেন কাটা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে অভিযুক্ত বকুল জানায়, গাছগুলি আমাদের মালিকানা জমিতে ছিল। সরকারী রাস্তা বলে দাবি করা হলেও ম্যাপে কোথাও রাস্তা উল্লেখ নেই। আমরা অনেকবার জমি আমিন দিয়ে জরীপ করিয়েছি। দীর্ঘদিন যাবৎ আমার বাপ দাদারা উক্ত জমি ভোগদখল করে আসছিল। গাছগুলি আমরাই লাগিয়েছি। জমির কাগজপত্র দেখে, রাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মখলেছের কথামত গাছগুলো কেটেছি। এমতাবস্থায় আমরা গাছগুলি কেটে ফেলেছি। এসি ল্যান্ডের নির্দেশে আমরা গাছগুলি জমিতেই রেখে দিচ্ছি। আগামীকাল সরকারী লোকজনের সামনে পরিমাপ করে তারপর সত্য উদঘাটন হবে।
গ্রামের মেম্বার শামীম হোসেন জানান, আমরা গ্রামবাসী অভিযোগ জানিয়েছি। এরা গায়ের জোরে গাছগুলি কেটেছে। এনিয়ে রাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন ছেপু জানান, সরেজমিনে গিয়ে আমি গাছগুলো কর্তন করতে নিষেধ করেছি। তারা গ্রামের মেম্বার, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে অবহিত না করে গায়ের জোরে আইন অমান্য করে গাছগুলি কেটেছে। গাছগুলির মালিক রাস্তা নেই বললেও ইউনিয়ন ম্যাপে রাস্তা রয়েছে।
গাংনী উপজেলা ভূমি অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান,আমি ইউএনও স্যারের সাথে আলাপ করে রাইপুর ইউপি ভুমি অফিসের নায়েব সাহেবকে সরেজমিনে পাঠিয়েছি। সরেজমিনে গিয়ে গাছ কাটতে নিষেধ করে সেই গাছগুলো চেয়ারম্যানের হেফাজতে রাখা হয়েছে। যদি পরিমাপ করে তাদের মালিকানা জমিতে হয় তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। আগামী রোববার (২৯ নভেম্বর) সকালে সার্ভেয়ার দিয়ে মাপজোখ করে তবে সত্য মিথ্যা তদন্তের পর জানা যাবে। দোষী প্রমানিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোনালীনিউজ/এআই/এসআই
আপনার মতামত লিখুন :