• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

মায়ের লাশ নিয়ে টানা ২ দিন ঘুমিয়ে কাটালো সন্তানরা


সিলেট প্রতিনিধি মার্চ ২৩, ২০২১, ০৩:০৫ পিএম
মায়ের লাশ নিয়ে টানা ২ দিন ঘুমিয়ে কাটালো সন্তানরা

ফাইল ছবি

সিলেট : সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের রাজনপুর গ্রামে অদ্ভুত এ ঘটনাটি ঘটেছে। মায়ের স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও লাশ লুকিয়ে রাখেন সন্তানরা। দাফন না করেই লাশের পাশে ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন টানা দুদিন। শুধু তাই নয়, তারাও ছিলেন ঘরবন্দি। 

সোমবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। 

আরো পড়ুন : উচ্চতর গ্রেড পাচ্ছেন সহস্রাধিক শিক্ষক

স্থানীয়দের খবরে রাতেই ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দুদিন ধরে ঘরবন্দি থাকায় লাশটি ফুলে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। পরে আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা তাকে দাফন করেন।

প্রতিবেশীরা জানান, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি মারা যান উপজেলা সদরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ছানা মিয়া। তার সঙ্গে স্ত্রীর বনিবনা ছিল না। এজন্য ছানা মিয়ার স্ত্রী চল্লিশোর্ধ্ব জেসমিন বেগম এক ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে সিলেট মহানগরে থাকতেন। অসুস্থ অবস্থায় শনিবার (২০ মার্চ) নগরীর মিরবক্সটুলাস্থ উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান জেসমিন। ওইদিন রাত ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান ছেলে-মেয়েরা। এরপর থেকেই তারা ঘরবন্দি ছিলেন। ঘরের ভেতর যে লাশ আছে জানতেন না বাড়ির আশপাশের লোকজনও।

প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় টাকা চাইতে বাড়িতে যান অ্যাম্বুলেন্সচালক। এ সময় ঘরে লাশ রাখার বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে বাড়ির লোকজন থানায় খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

বাড়ির লোকজন জানান, ছানা মিয়ার সঙ্গে স্ত্রীর দূরত্ব থাকলেও প্রায় অর্ধকোটি টাকার সম্পদ বিক্রি করে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ দিয়ে গেছেন। কিন্তু তারাও ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারেনি। আর লাশের সঙ্গে একই ঘরে থাকার বিষয়টি সন্তানদের মানসিক সমস্যা হিসেবে দেখছেন তারা। কেননা তারাও জানতেন ঘরে লোকজন আছে। ডাকাডাকি করলেও জবাব দিতেন, কিন্তু দরজা খুলতেন না।

এ ঘটনার পর মৃতের ছেলে সনি, মেয়ে সুমা, উমা ও ইমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তারা জানান, সাংসারিক জীবনে তাদের বাবা-মায়ের মধ্যে দূরত্ব ছিল। বাবা-চাচারা পাঁচ ভাই। বাবা আগেই মারা গেছেন। মাও মারা যান। সম্পদের জন্য চাচারা যদি মারধর করে বের করে দেন, এজন্য তারা মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি কাউকে জানাননি। এমনকি দাফন করতে না পারায় লাশ ঘরে রেখে দেন।

বিষয়টি নিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাফায়াত হোসেন বলেন, ওই নারীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের দেয়া মৃত্যুসনদও রয়েছে। তবে মৃতের সঙ্গে সন্তানদের ঘুমানোর বিষয়টি অস্বাভাবিক। মানসিক সমস্যায় ভোগার কারণে এমনটি করেছে মৃতের ছেলে-মেয়েরা।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!