• ঢাকা
  • শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

ভয়ে আসেনি স্বজনরা, করোনায় মৃত নারীর গোসল করালেন ইউএনও!


পিরোজপুর প্রতিনিধি জুলাই ১০, ২০২১, ০৬:৫৫ পিএম
ভয়ে আসেনি স্বজনরা, করোনায় মৃত নারীর গোসল করালেন ইউএনও!

নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন রেখা। ছবি : সংগৃহীত

পিরোজপুর: করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এক নারীর গোসলের জন্য যখন কাউকে পাওয়া যাচ্ছিলো না তখন তার গোসলের কাজে এগিয়ে গেলেন পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন রেখা। 

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (০৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় জেলার কাউখালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের উজিয়ালখান গ্রামে।

জানা যায়, ওই গ্রামের সোলায়মান হোসেনের স্ত্রী রেখা সুলতানা (৪৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (০৯ জুলাই) দুপুরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তাকে কাউখালীর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এলে গ্রামের কোনো আত্মীয়-স্বজন বা এলাকাবাসী তার গোসলের কাজে এগিয়ে আসেননি।

ওই রাতে বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনও মাহফুজা মিলি ও শামীমা আক্তার নামে দুই স্বেচ্ছাসেবী নারীকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে যান এবং নিজেই গোসলের কাজে অংশ নেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন রেখা সাংবাদিকদের জানান, মৃত ওই নারী গোসলবিহীন অবস্থায় পড়ে আছেন এমন খবর মোবাইলে জানতে পেয়ে ওই রাতে আমি ২ স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে সেখানে হাজির হই এবং তার গোসল কাজে অংশ নেই। এটাই আমার জীবনের প্রথম কোনো মৃত নারীকে গোসল করানোর কাজে অংশ নেওয়া।

মৃতের স্বামী সোলাইমান হোসেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি জানান, তার স্ত্রী গত সাতদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। গত বুধবার (০৭ জুলাই) কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনা শনাক্ত হন। ওই রাতে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে প্রথমে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

উল্লেখ্য, ইউএনও মোসাম্মৎ খালেদা খাতুন রেখা গত ২০১৯ সালের ২১ জুলাই ওই উপজেলার ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। তিনি সেখানে যোগদানের পর স্থানীয় শাসকদলের এক নেতা কর্তৃক রাতের আঁধারে উপজেলা সদরের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুকুর ভরাট করে তা দখলের চেষ্টাকালে সেখানে একা গিয়ে বাঁধা দেন। 

মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর সন্তান প্রসবকালে ওই নারীকে নিজে হাসপতালে নিয়ে যান ও তার সন্তানের সেবাসহ খরচের দায়িত্ব নেন। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে তিনি উপজেলার সকল করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেওয়াসহ তাদের পাশে থাকেন। এ সময় তিনি ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্যসেবা চালুসহ নিজ খরচে এলাকার অসহায়দের পাশে থাকেন। এসব সেবামূলক কাজের কারণে তিনি এলাকাবাসীর কাছে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।

সোনালীনিউজ/এসএন 

Wordbridge School
Link copied!