• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পানিবন্দি স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরা নিয়ে সংশয়


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১, ১১:১১ পিএম
পানিবন্দি স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরা নিয়ে সংশয়

টাঙ্গাইল  : টাঙ্গাইলে যমুনাসহ প্রধান নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করায় জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ, শ্রেণীকক্ষ আর রাস্তাঘাট পানির নীচে সেসব শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার পর তা খোলার সিদ্ধান্ত হলেও স্কুলে যাবার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হতে পারে পানিবন্দি এসব বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার অয়নাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের মাঠে এখনো কোমর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। স্কুলে যাতায়াতের রাস্তাটি হাটু পানির নীচে। আর বিদ্যালয়ের তিনটি ভবনের মধ্যে দুটির শ্রেণীকক্ষে পানি ঢুকেছে। ব্রেঞ্চগুলো বলতে গেলে পানির নীচে রয়েছে। সদর উপজেলার চর গালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা একই অবস্থা। এ বিদ্যালয়ের মাঠে এখনো হাটু পানি রয়েছে। পশ্চিম দিকে একটি ভবনের প্রায় অর্ধেকটা রয়েছে পানির নীচে।

এ সময় স্থানীয় বেশ কয়েকজন লোকের সাথে কথা হয়। তারা জানান, বন্যার পানি নেমে না গেলে ছোট ছোট শিশুদের স্কুলে পাঠানো ঠিক হবে না। কারণ মাঠে এখনো হাটু পানি রয়েছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পানি নেমে যাবে কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

সদর উপজেলার ১৩ নং মগড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠেও পানি জমে রয়েছে। সেখানে অবস্থিত মগড়া পালস ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের মুল ভবনের সামনে জাল দিয়ে মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত দেখা যায় স্থানীয়দের। বিদ্যালয়ের পুরো মাঠটি পানির নিচে রয়েছে।
এ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ পারভিন জানান, স্কুলের মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। কিন্ত এখানকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা নদী পাড় হয়ে স্কুলে আসে। এ ছাড়াও স্কুলে আসার যে রাস্তাটি রয়েছে তা এখনো পানি নিচে রয়েছে। তার পরেও স্কুল খোলার সকল প্রস্তুতি নিয়ে তারা। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও শতভাগ আশা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

এ সব স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, পানির মধ্যেই ক্লাসে ফিরতে আগ্রহী। এতদিন পর স্কুলে যাবার জন্যে পুরো প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র রাজন জানায়, অনেকদিন ধরে স্কুলের বন্ধুদের সাথে দেখা হয়না। তাই যত কষ্ট হোক ১২ সেপ্টেম্বর থেকে তা স্কুলে যাবে। জানা গেছে, জেলার চরাঞ্চল ও নীচু এলাকার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র প্রায় একই রকম।

টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, জেলার তিনশ’ ৬৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এরমধ্যে ৩৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষে এখনো পানি রয়েছে। অপরদিকে ৮৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু বিদ্যালয়ের পানি নেমে গেলেও রাস্তাঘাট ও বসতবাড়িতে এখনো পানি থাকার কারনে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ ক্লাসে না ফেরার শংশয় রয়েছে।

এ বিষয়ে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী আহসান জানান, সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সকল প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বন্যা কবলিত স্কুলগুলো নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও স্থানীয় ব্যাক্তিদের নিয়ে সমস্যা সমধানের চেষ্টা করা হবে। অর্থাৎ যে কোন উপায়ে ১২ সেপ্টেম্বর শতভাত স্কুল খোলার নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাজাহান আনসারী জানান, বন্যা কবলিত স্কুলগুলোর পানি নামতে শুরু করেছে। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে যাতে সবগুলো স্কুল খোলা যায় তার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!