• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

তিন নদীতে বড় ইলিশ, হতাশা কাটছে জেলেদের


বরগুনা প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১, ১২:১৪ পিএম
তিন নদীতে বড় ইলিশ, হতাশা কাটছে জেলেদের

বরগুনা : জেলার বঙ্গোপসাগরের মোহনা এবং বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়া শুরু হয়েছে। ছোট, মাঝারি, বড় সব ধরনের ইলিশই এখন জালে আসছে।

জেলে ও পাইকারদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানায়, জেলেপাড়াগুলোতেও খুশির আমেজ ছড়িয়েছে। অন্যদিকে ইলিশসম্পদ রক্ষা করতে সাগর মোহনাসহ এ তিন নদীকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।

জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল খালেক দফাদার জানান, বরগুনা জেলার ছয়টি উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ মৎস্যজীবী রয়েছেন, তাদের মধ্যে প্রান্তিক জেলের সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি। ইলিশের ওপরই মূলত এদের জীবিকা নির্ভর করে। ইলিশের ভরা মৌসুমেও বরগুনার নদীগুলোতে বড় ইলিশের দেখা মিলছিল না। এতে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন জেলেরা। তবে গত কয়েক দিনে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের মাছ ধরা পড়ায় নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে তাদের মধ্যে।

আরও পড়ুন : কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি ১১-২০ গ্রেড কর্মচারীদের

স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ জানান, গত তিন-চার দিন ধরে নদীতে বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে। এসব ইলিশ ওজনভেদে ১ হাজার ৫০০ থেকে সর্বনিম্ন ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মৎস্য বিভাগের হিসাব মতে, বরিশাল বিভাগ এখন দেশের মোট ইলিশের প্রায় ৬৬ ভাগের জোগানদাতা। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৮৮ টন ইলিশ ধরা পড়ে। এর মধ্যে বরিশাল অঞ্চল থেকে ধরা হয় ৩ লাখ ৩২ হাজার ২৫ টন ইলিশ। এর প্রায় এক লাখ টন ইলিশই ছিল বরগুনার।

সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হালিমা সরদার জানান, পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে নদ-নদীর স্রোত বেড়েছে। এ কারণে গভীর সমুদ্রের ইলিশ নদীতে আসতে শুরু করেছে। এ ছাড়া প্রজনন মৌসুমের কাছাকাছি সময় এখন। এখন কয়েক দিন নদীতে ইলিশ ধরা পড়বে।

আরও পড়ুন : ক্লাস শুরুর আগেই অধিদফতরের নতুন নির্দেশনা

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ৩ হাজার ৭৭৫ মেট্রিক টন ইলিশ উঠেছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ৭০০ মেট্রিক টন কমে গিয়ে ইলিশ ওঠে ৩ হাজার ২১ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ১০০ মেট্রিক টন কমে গিয়ে ইলিশ ওঠে ২ হাজার ৯১১ মেট্রিক টন। আর ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ১ হাজার ৭৫৯ মেট্রিক টন কমে গিয়ে ইলিশ উঠেছে ১ হাজার ১৫২ মেট্রিক টন। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পরিচালক লেফটেন্যান্ট এম লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, প্রতি ১০০ টাকার ইলিশ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রি হলে সরকার রাজস্ব পায় ১ টাকা। ইলিশের আমদানি বাড়লে রাজস্ব আয়ও বেড়ে যায়।

আরও পড়ুন : বিয়ে করছেন হুমায়রা হিমু

সম্প্রতি বরগুনার তিনটি নদী পায়রা, বলেশ্বর, বিষখালী ও সাগর মোহনায় গবেষণা শেষ করেছে ওয়ার্ল্ড ফিশের একটি দল। ওয়ার্ল্ড ফিশের গবেষক মীর মোহাম্মাদ আলী জানিয়েছেন, তিন নদী ও মোহনায় ডিম পাড়তে আসে মা ইলিশ। সেই সময় সেই ইলিশ আটকা পড়ে নদী মোহনার অবৈধ সূক্ষ্ম ফাঁসের জালে। অন্যদিকে, বেশির ভাগ পোনা ইলিশ সাগর থেকে মিঠা পানি ও মাটি খেয়ে বড় হতে চলে আসে তিন নদী ও মোহনায়। তবে সেসব ছোট মাছও আটকা পড়ে এসব জালে। তাই বছরের পর বছর কমে আসছে ইলিশের পরিমাণ। সাগর মোহনাসহ পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর নির্দিষ্ট কিছু এলাকা ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা না করলে বিলুপ্ত হবে ইলিশ।

আরও পড়ুন : আইএসে যোগ দেয়া সেই শামীমা এখন ‘অনুতপ্ত’

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানিয়েছেন, সাগর মোহনা এবং পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করার জন্য ইতিমধ্যে প্রাথমিকভাবে মৎস্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!