• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

৯ বছরের তামিম কাঁধে নিয়েছে পরিবারের ছয় সদস্যের দায়িত্ব


ময়মনসিংহ প্রতিনিধি  অক্টোবর ১৩, ২০২১, ০২:১৭ পিএম
৯ বছরের তামিম কাঁধে নিয়েছে পরিবারের ছয় সদস্যের দায়িত্ব

ময়মনসিংহ : বেকারিতে কাজ করেন নয় বছরের শিশু। মাসে পান ৩০০০ টাকা। এই টাকা দিয়েই চলে ছয়জনের পুরো সংসার। অন্যের বাড়িতে কাজ করে মা যা আয় করেন তাতে সংসারের খরচ মেটানো সম্ভব হয় না।

শিশুটির নাম তামিম। যে বয়সে হাতে থাকার কথা বই-খাতা, ঘুরে বেড়ানোর সময় হৈ চৈ করে সেই সময়ে তামিমকে কাঁধে নিতে হয়েছে সংসারের দায়িত্ব।

মো. তামিম ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার নাওগাঁও ইউনিয়নের হরিরামবাড়ী এলাকার জুলহাস ও তাসলিমা দম্পতির বড় ছেলে। স্ত্রী-সন্তানকে রেখে তামিমের বাবা বিয়ে করেছেন অন্যত্র। এরপর থেকে আর সংসারের কোনো খোঁজ নেন না তিনি। তাই এই বয়সেই সংসারের দায়িত্ব নিতে হয়েছে তামিমকে।

জানা যায়, পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তামিম সবার বড়। মা তাসলিমাসহ ছয়জনের সংসার তাদের। নিজের থাকার মত কোনো জমি তাদের নেই। তাই বসবাস নানার বাড়িতেই।

তামিমের মা তাসলিমা জানান, তামিম স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতো। তামিমের বাবা জুলহাস দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। গত বছরের ডিসেম্বরে জুলহাস আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকেই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে থাকেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সংসার চালানোর জন্য আমি মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। সংসারের অভাব অনটনের কারণে ছেলেকে মাদরাসা থেকে এনে স্থানীয় টেকির বাজার একটি বেকারিতে কাজে দিয়েছি। সেখান থেকে মাসে ৩০০০ টাকা দেয়। এই টাকা দিয়েই আমার সংসার চলে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার থাকার মতো কোনো জায়গা নেই। বাবার বাড়িতে আমাকে একটি ঘর করে দিয়েছে, সেখানেই থাকি। বৃষ্টি হলেই সেই ঘরে পানি পড়ে।’

আরও পড়ুন - ইলিশ শিকারের দায়ে ৫৬ জেলের জেল-জরিমানা

এ বিষয়ে তামিমের বলে, ‘বাবা বিয়ে করে আমাদের ফেলে চলে গেছে। আমাদের কোন খোঁজখবর নেয় না। তাই বাধ্য হয়ে সংসার চালানোর জন্য মাদরাসা ছেড়ে বেকারিতে কাজ নিয়েছি। এখানে আমাকে মাসে ৩০০০ টাকা দেয়। এই টাকা মায়ের হাতে তুলে দেই।’

বেকারির মালিক সারোয়ার আলম জানান, গত সাত মাস ধরে তামিম তার বেকারিতে কাজ করেন। সে নিয়মিত বেকারির কর্মচারী ও তার খাবার এনে দেয় বাড়ি থেকে। এছাড়া সে অন্য কোনো কাজ করে না। এই কাজের জন্যই তাকে ৩০০০ টাকা দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন - বৃদ্ধ বাবাকে লাথি মারলেন স্কুল শিক্ষক ছেলে

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক জানান, খোঁজ খবর নিয়ে তামিমসহ পরিবারের অন্যান্য শিশুদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও সংসার যেন ভাল ভাবে চলে সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলেও জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এসএন

Wordbridge School
Link copied!