• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

যমুনার পানি বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জুন ২১, ২০২২, ১১:৩০ এএম
যমুনার পানি বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ছবি : সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ : বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। যমুনার পানি কাজিপুর পয়েন্টে এখন ৫৪ সেন্টিমিটার ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ঘণ্টায় কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৫.৭৩)। এছাড়া, শহরের হার্ডপয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে বিপৎসীমা ১৩.৭৪ সেন্টিমিটার। ফলে নিম্নাঞ্চলগুলো দ্রুত প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন এই এলাকার মানুষ। 

জেলার কাজিপুর পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় আরও ১৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে যেমন যমুনার চরের নতুন ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে, তেমনি বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপারের মানুষ। 
 
বিষয়টি নিয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, জেলার কাজিপুর পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় (২০ জুন সকাল ৬টা থেকে ২১ জুন সকাল ৬টা) ১৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
 
তিনি আরও জানান, ২০ জুন সকাল ৬টায় জেলার কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছিল ১৫ দশমিক ৬২ মিটার। বর্তমানে পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৭৯ মিটার। এখানে পানির বিপৎসীমার স্তর ধরা হয় ১৫ দশমিক ২৫ মিটার। ফলে এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে পাউবোর পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান জানান, সকালে শহরের হার্ড পয়েন্ট এলাকায় পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮৪ মিটার। এর আগে গতকাল সকালে পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৬৮ মিটার। এখানে বিপৎসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ মিটার। ফলে এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু তিস্তায় পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, ফলে যমুনায় আরও কয়েক দিন পানি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে সিরাজগঞ্জে বন্যা হতে পারে।

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে পানিবৃদ্ধির ফলে যমুনার চরাঞ্চলের নিচু জমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। ফলে যমুনার পাশাপাশি ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসগর, ইছামতীসহ চলনবিলের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের উঠতি ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।

অন্যদিকে, পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিনই নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ফলে এলাকার অনেকেই উঁচু বাঁধ বা নির্মাণাধীন কোনো ভবনে ঠাঁই নিচ্ছেন, পার করছেন মানবেতর জীবন। অনেকেই আবার রাস্তার ধারে নির্মাণ করার চেষ্টা করছেন অস্থায়ী ছাপরা ঘর। তবে এসব এলাকায় এখনো মেলেনি কোনো ত্রাণ বা শুকনো খাবার। 

অপরদিকে, যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের কিছু চরাঞ্চলে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!