লক্ষ্মীপুর: প্রেম করে লক্ষ্মীপুরের ছেলে রাসেল হোসেনকে বিয়ে করেছেন নোয়াখালীর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস। তবে রাসেলের বাবা একজন ফল ব্যবসায়ী হওয়ায় এ বিয়ে মানতে নারাজ জান্নাতুলের সরকারি চাকরিজীবী বাবা।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মেয়ে ও ছেলেকে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এরআগে মেয়ের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে নবদম্পতিকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়।
ছেলে রাসেলের বাবা তোফায়েল আহম্মদ লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঝুমুর এলাকার ফল ব্যবসায়ী ও দক্ষিণ মজুপুর এলাকার বাসিন্দা।
মেয়ের জান্নাতুল ফেরদাউসের বাবা জাকির হোসেন লক্ষ্মীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের লাইনম্যান ও নোয়াখালী চাটখিল উপজেলার হাটপুকুরিয়া ঘাটলাবাদ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কর্মস্থলের পাশেই বসবাস করেন।
পরিবার সূত্র জানায়, প্রায় ৬ বছর ধরে রাসেল ও ফেরদাউসের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ কারণে লক্ষ্মীপুর জেলা আদালতে উপস্থিত হয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিষয়টি পরিবারের কেউই জানতো না। বিয়ের পর তারা চট্টগ্রামে পালিয়ে যান। সেখানে বন্ধুদের সহযোগিতায় আগ্রাবাদ এলাকায় বাসা ভাড়া নেন তারা। পরে একটি দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির কাজও নেন রাসেল। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কাজে অংশ নেন।
এদিকে বিয়ের দিন রাতেই মেয়ের বাবা জাকির সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এতে বৃহস্পতিবার কাজ থেকে ফিরলে ভাড়া বাসা থেকে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
রাসেল হোসেন বলেন, আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছি। একজন অন্যকে ছাড়া বাঁচবো না। ফেরদাউসের বাবা আমাদের বিয়ে মেনে নিচ্ছে না। তারা আমাদের বিচ্ছেদ করাতে চেয়েছিল। এতে আমি ও ফেরদাউস কেউই রাজি নই। আমরা একসঙ্গে থেকে সংসার করতে চাই। আমার বাবা ফল ব্যবসায়ী। এজন্যই ফেরদাউসের বাবা বিয়ে মেনে নিচ্ছেন না।
জান্নাতুল ফেরদাউসের বাবা জাকির হোসেন বলেন, আমার মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী। ছেলের বাবা ফল ব্যবসায়ী, আমি সরকারি চাকরি করি। কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় হয় না। তার সঙ্গে আমার মেয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছে, ঘটনাটি লজ্জার। এটি মেনে নেওয়ার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন বলেন, পুলিশের সহযোগিতায় রাসেল ও ফেরদাউসকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আপাতত তাদের পরিবারের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কাউছারুজ্জামান বলেন, ছেলে-মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক। তারা আইন মেনে বিয়ে করেছেন। মেয়ের বাবার নিখোঁজ ডায়েরির ভিত্তিতে আমরা তাকে উদ্ধার করেছি। দুজনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ
আপনার মতামত লিখুন :