• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই


নীলফামারী প্রতিনিধি জুন ২১, ২০২৩, ১১:৩৮ এএম
তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই

নীলফামারী : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে বাড়তে শুরু করা তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২১ জুন) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫১ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমার দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ৩ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা এলাকায় বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবার (১৬ জুন) রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকালে পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাত ১২টার পর পানি বাড়তে শুরু করে। আজ বুধবার সকাল থেকে পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় তা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুপুরে পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ডালিয়ায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১০৮ মিলিমিটার।

অপরদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দোমহনী বন্যা পূর্বাভাস ও বন্যা সর্তকীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ভারতে গজলডোবা ও মেখলিগঞ্জ (বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত) তিস্তা ব্যারেজে বেশ কিছু জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মেখলিগঞ্জে তিস্তা পয়েন্টে পানি ৬৫.৬৮ সেন্টিমিটার (৬৫.৯৫ বিপৎসীমা) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

এছাড়া ভারতে দোমহনী তিস্তা পয়েন্টে সকাল ৮টায় তিস্তার পানি ৮৫.৩৬ (৮৫.৯৫ বিপৎসীমা) সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, আজ বুধবার সকালে তিস্তার পানি বেড়েছে। ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে গত কয়েকদিনে নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চলগুলোতে এরইমধ্যে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এখনো ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ না করলেও তলিয়ে গেছে এসব এলাকার আবাদি জমি। চরাঞ্চলের মানুষের ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। হঠাৎ পানি বাড়ার ফলে গবাদি পশুপাখির খাবার নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তারা। এছাড়াও পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকটি চরের বাসিন্দারা।

ডিমলা উপজেলার খালিশা চাঁপানি ইউনিয়ন পশ্চিম চরখালিশা গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, তিস্তার পানি কখনও বাড়ছে আবার কখনও কমছে। এভাবে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চলের ঘর-বাড়ি নিমজ্জিত হয়ে যাবে। আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ি এলাকার কৃষক আহমেদ আলী বলেন, কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতের ফলে খাল-বিল সব ভরে গেছে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাড়ির পাশে চলে এসেছে। যেকোনো সময় পানি বাড়িতে উঠতে পারে। আমার তিন বিঘা জমিতে চাষ করা বাদামসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

টেপা খড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তাপাড়ের মানুষজন বন্যার আশঙ্কায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এখনো বন্যা দেখা না দিলেও কয়েক জায়গায় নদী ভাঙনের খবর পেয়েছি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!