নেত্রকোনা: জেলার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর উপজেলার গ্রামগুলোতে বন্য হাতির তান্ডব শুরু হয়েছে। পার্শ্ববর্তী ভারত সীমান্ত পেরিয়ে ৩০/৩৫টি হাতি বিজয়পুর ও ফারুংপাড়া গ্রামে প্রবেশ করেছে। হাতির পাল গ্রামে প্রবেশের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সীমান্ত এলাকার মানুষ।
এক মাসে দুর্গাপুরে বন্য হাতির আক্রমণে অন্তত দুই জন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন। অথচ হাতির এই তান্ডব থেকে মুক্তি মিলছে না সীমান্তবাসীর।
কয়েক বছর ধরে মানুষ ও হাতি একে অপরকে তাড়া করলেও সমস্যাটির স্থানীয় সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি কেউ। হাতির হাত থেকে ক্ষেতের ধানসহ বিভিন্ন ফসল রক্ষা করতে এসব গ্রামের লোকজন হতাহতের শিকার হচ্ছেন। গত ১ মাস আগেও হাতির দল বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে প্রবেশ করে ফসল ও ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি করেছে।
তার ৫ মাস আগেও হাতির আক্রমণে বুনেশ চিসিম (৬৫) এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে ও আহত হয়েছিল আরো দুইজন।দিকে আবারও দুইদিন ধরে বন্য হাতির পাল বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। বন বিভাগ বলছে- ধান,কাঁঠাল ইত্যাদি খাওয়ার জন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় বন্য হাতির পাল।
উপজেলাটির সদর ইউনিয়ন ও কুল্লাগড়া ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামই সীমান্তের কাছাকাছি। কয়েক বছর ধরে ভারত থেকে বন্য হাতির পাল সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। ফলে হাতির কারণে আতঙ্কে ও বেয়কায়দায় পড়েছেন সীমান্ত এলাকার হাজার-হাজার মানুষ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,ধান মৌসুম শুরু হয় তখন সীমান্তে আসে হাতির পাল।
বন্য হাতির তাণ্ডব থেকে নিজেদের রক্ষায় গ্রামের মানুষ পটকা ফাটানো,মশাল ও টর্চ লাইটের আলো জ্বেলে শব্দ করে তাড়ানো চেষ্টা চালাই। চলতি বছর বেড়েছে বন্য হাতির উৎপাত। গ্রামের যুবক ও বড়রা মিলে পাহারা দিচ্ছেন দিনে ও রাতে।
সীমান্ত কৃষক সুরুজ মিয়া, সুজন মিয়া, হাসেম আলী, হযরত, শহিদ মিয়া জানান, গত কয়েক বছর ধরেই হাতিগুলো ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে খাবারের সন্ধানে বাংলাদেশে নেমে আসে। হাতির তাণ্ডবে আমরা রীতিমতো অতিষ্ঠ। ক্ষুধার্ত হাতির পাল খাবারের খোঁজে সীমান্ত পার হয়ে আমরার ফসল ও বাড়িঘর ভাঙে। মানুষের উপর আক্রমণও করেছে কয়েকবার এতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ।
দুর্গাপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. দেওয়ান আলী বলেন,হাতির তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির পাশে কাঁটা জাতীয় গাছ লাগাতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পাশাপাশি গ্রামের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। হাতির তাণ্ডবে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হবে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে মাঝে মধ্যে হাতির উপদ্রব বেড়ে যায়। ক্ষুধার্ত হাতির পাল খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। তবে হাতির তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে গ্রামের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বন্য হাতির দারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের তালিকা করে সহযোগিতা করা হবে।
সোনালীনিউজ/এম