• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
আতাই নদীর ভাঙন 

ভিটেমাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন


খুলনা ব্যুরো  সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩, ০৪:৩৬ পিএম
ভিটেমাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন

খুলনা: খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর গ্রামের আতাই নদীর ভাঙনে গত সোমবার রাত ১১টার দিকে ৫টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে বিলীন হওয়া পরিবারগুলোর সদস্যরা নদী তীরবর্তী স্থানে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করছেন।

সর্বনাশা আতাই নদী ভাঙনে আরও ১০টি বসতবাড়ি ঝুঁকিতে রয়েছে। নদীকূলে বসবাসকারীরা রয়েছে চরম আতংকে। নদীতে বিলীন হওয়া বসতবাড়ির লোকজনগুলো নদী তীরবর্তী স্থানে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। 

স্থানীয় সংসদ সদস্য তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য ও বা সহায়তা প্রদান করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। 

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, গত সোমবার রাত ১১টার দিকে তেরখাদা উপজেলার মধুপুর গ্রামের আতাই নদীর তীরবর্তী এলাকা প্রচণ্ড গতিতে ভাঙতে শুরু করে। ভাঙনের শব্দে লোকজন ঘর থেকে যে যার মতো খালি হাতে বেরিয়ে পড়ে চিৎকার করতে থাকে। এসময় পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে এসেও কারও কোনো উপকারে আসতে পারেনি। চোখের সামনে মুহূর্তের মধ্যে রবিউল মোল্লা, মিজান মোল্লা, বদিয়ার মোল্লা, কাদের ও মোল্লা হানিফ মোল্লার বসতবাড়ি সর্বনাশা। আতাই নদী গ্রাস করে নিয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত বদিয়ার মোল্লা বলেন, রাতে আমরা সবাই খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েছি। ঘুমের মধ্যে ভাঙনের শব্দ পেয়ে উঠে দেখি আমাদের বসতবাড়ির আঙিনা নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। তখন সবাইকে ডেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাই। কয়েক মিনিটের মধ্যে আমাদের চোখের সামনে বসতবাড়ি নদীর মধ্যে চলে গেল।

বসতবাড়ি বিলীন হওয়া ৫টি পরিবার আতাই নদী তীরবর্তী একটি স্থানে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করছে।

গতকাল সরেজমিন ভাঙন কবলিত এলাকা মধুপুরে গিয়ে জানা গেছে,রাতে আতাই নদী তার স্বরূপে ফিরে এসেছিল। নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা রাতে বিলীন হয়েছে। তবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে যে কোন মুহুর্তে প্রায় ১০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে চলে যেতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল মোড়ল জানান। 

অন্যদিকে নদীতে বিলীন হওয়া ৫টি পরিবারের সদস্যরা নদী তীরবর্তী একটি স্থানে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করেছেন শুকনা খাবার খেয়ে।

স্থানীয় খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেছেন, এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আকস্মিক ভাবে রাতে ভাঙনটি শুরু হয়েছে এবং ৫টি পরিবারের বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে।আমি সার্বক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে যোগাযোগ রাখছি,তাদেরকে ব্যক্তিগত পক্ষথেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও বস্ত্র সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামীলীগের জেলা এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ খাদ্য ও নগদ অর্থ দিয়ে তাদেরকে সহযোগীতা করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাযকিয়া বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা সার্ভে করা হচ্ছে এবং জরুরী ভিত্তিতে একজন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী শনিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী কাজের উদ্বোধন করবেন।

ভাঙন এলাকা প্রতিরোধের জন্য গতকাল দিনব্যাপী পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কু নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাযকিয়া, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অরিত্র সাহা ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ফরিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন বলে তারা জানিয়েছেন।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!