কক্সবাজার : মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি ও মর্টারশেলের আঘাতে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্তত পাঁচ নাগরিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় একজন এবং কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী সীমান্ত এলাকায় চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এর আগে সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে আহত হন আরও চার বাংলাদেশি। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আসা গুলিতে মোট আহত হয়েছেন ৯ বাংলাদেশি।
সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর লড়াইয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই অস্থির মিয়ানমার। কয়েকটি রাজ্যে বিদ্রোহীদের কাছে পরাস্ত হচ্ছে সরকারি বাহিনী।
বাংলাদেশ লাগোয়া রাখাইন প্রদেশে সংঘাত কিছুদিন আগে তীব্র আকার ধারণ করেছে। তাতে বাংলাদেশের ভেতরে বুলেট-গোলা এসে পড়ছে। সোমবার দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ভূখণ্ড থেকে আসা মর্টারের গোলার আঘাতে স্থানীয় এক নারী ও এক রোহিঙ্গা নিহত হন।
মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের গুলি বর্ষণ, মর্টার শেলসহ বিস্ফোরণের শব্দ মঙ্গলবার থেকে আরও বেড়েছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন, কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন এবং টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় এমন শব্দ শোনা যাচ্ছে। কিছু সময় পরপর কেঁপে উঠছে সীমান্তবর্তী এলাকা।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সীমান্ত এলাকার বসতভিটাও ছাড়ছেন অনেকে।
কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকার চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা হলেন- পালংখালী ইউনিয়নের নলবনিয়া এলাকার আয়ুবুল ইসলাম, রহমতেরবিল এলাকার আনোয়ার হোসেন, পুটিবনিয়া এলাকার মোবারক হোসেন ও মো. কাল। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মিয়ানমার থেকে আসা গুলিতে এর আগে মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে আহত হন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু পশ্চিমকুল পাহাড় পাড়ার কাদের হোসেনের ছেলে সৈয়দ আলম। ৩৫ বছর বয়সী এই যুবক পাহাড় পাড়ার বাড়ি থেকে আশ্রয়কেন্দ্র উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন।
সৈয়দ আলম জানান, বাড়ি থেকে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার সময় মিয়ানমার থেকে আসা গুলি প্রথমে একটি গাছে লাগে। তারপর তার কপাল ঘেঁষে গুলিটি চলে যায়। স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে গোলাগুলি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। গুলি ও মর্টারশেলের আঘাতে আহতের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ এলাকা ত্যাগ করেছেন।
এমটিআই