গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে জুয়ার টাকা জোগার করতে না পেরে সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া এক দিনের সন্তান বিক্রির অভিযোগ ওঠেছে হেরেন- ঝুম্পা দম্পতির বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে উপজেলার বরিশাল ইউপির ভবানীপুর গ্রামে।
জানা যায়, ভবানীপুর গ্রামের মৃত নয়ন চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে হেরেন চন্দ্র বিশ্বাস পেশায় এক কর্মকার। কাজের পাশাপাশি জুয়া খেলা তার নেশায় পরিনত হয়েছে। প্রায় ২৩ বছর পুর্বে ঝুম্পাকে বিয়ে করে তিনি। অভাবের সংসারে রনি, নিরঞ্জন, রাবিন্দ্র ও জয়দেব নামে ৪ টি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাতে তার স্ত্রী ঝুম্পা পঞ্চম বারের মত একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন।
একদিকে জুয়ার নেশা ও অন্যদিকে সংসারের অভাব। দুই কারনে তাদের সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া সন্তানকে গোবিন্দগঞ্জ পান্থাপাড়া এলাকায়, গোবিন্দবাবুর স্ত্রী ভক্তিরানীর কাছে বিক্রি করেন। পরে ভক্তিরানী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক প্রাপ্তকে সাথে নিয়ে ওই সন্তানকে নাটোরের বনপাড়া অজ্ঞাত ব্যাক্তির নিকট দত্তক দেয়ার নাম করে জনৈক ব্যাক্তির নিকট ২ লক্ষ টাকা বিক্রি করেন।
সন্তানের মা ঝুম্পা রানী সাংবাদিকদের বলেন জুয়া তার স্বামীকে ধুয়া করেছে। সংসারে অভাবের কারনে তিনি এ কাজ করেছেন। তবে সন্তান কার ঘড়ে আছে তিনি জানেন না! যিনি সন্তান নিয়ে গেছেন তিনি আমাদের কাগজে সই নিয়েছেন।
সন্তানের বাবা হেরেন চন্দ্র বলেন আমি আগে জুয়া খেলতাম এখন আর খেলিনা! সংসারে অভাবের কারনে সন্তান দত্তক দিয়েছি। শুনেছি তার বাড়ী নাটোর জেলায়। তাদের নাম ঠিকানা কিছুই আমাদের দেয়া হয় নি। মাইক্রোবাসে করে সন্তানটিকে ওরা নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ স্বেচ্ছা সেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক প্রান্ত ভালো জানে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক প্রান্তর মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সন্তান কোথায় আছে বলা যাবে না।
তবে প্রথমবার ক্রয় করা ভক্তি রানীর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন কিছু টাকা নিয়ে যান। সন্তান রাজশাহীতে আছে। এরচেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না।
এ দিকে একদিনের সন্তান বিক্রির ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল সন্তানটি উদ্ধার করে মায়ের কোলো হস্তান্তরের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ মানবাধিকার সংগঠন গুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সোনালীনিউজ/টি/এসআই