• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কুসিক নির্বাচন

সূচনা নাকি সাক্কু


কুমিল্লা প্রতিনিধি মার্চ ৮, ২০২৪, ০৯:৫৮ পিএম
সূচনা নাকি সাক্কু

কুমিল্লা : শনিবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র পদে উপনির্বাচন। প্রচারের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়েছেন চার মেয়র প্রার্থী। তারা হলেন-ডা. তাহসীন বাহার সূচনা, সাবেক মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার ও নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম। 

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর মারা যান। তার মৃত্যুতে ১৮ ডিসেম্বর মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ কারণে শুধু মেয়র পদে উপনির্বাচন হচ্ছে। 

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১০৫টি ভোটকেন্দ্র ও ৬৪০টি ভোটকক্ষ রয়েছে। আর ভোটার রয়েছেন দুই লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮জন। ভোটারদের মধ্যে এক লাখ ১৮ হাজার ১৮২ পুরুষ, এক লাখ ২৪ হাজার ২৭৪ মহিলা ও ২ জন হিজড়া।

এ নির্বাচনে চারজন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকলেও সব ছাপিয়ে ভোটের মাঠে আলোচনায় রয়েছেন কুমিল্লা-৬ আসনের সরকারদলীয় সংসদ-সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। মেয়র প্রার্থী ডা. তাহসীন বাহার সূচনা তারই বড় মেয়ে। এবারই প্রথম তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। 

কুমিল্লা-৬ আসনের সরকার দলীয় সংসদ-সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে হিসাবেই তিনি বেশি পরিচিত। সংসদ-সদস্য হওয়ার পরও আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার তার মেয়ের নির্বাচনি প্রচার ও কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রয়েছেন। 

এ ঘটনায় সর্বশেষ ৪ মার্চ তাকে নির্বাচনি প্রচার চালানো থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেন এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন। আর মনিরুল হক সাক্কু বিএনপি থেকে দুবার নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হন। 

সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৫ জুন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচন করে মনিরুল হক সাক্কু পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সারকেও দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এবার উপনির্বাচনে আবারও দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে আরেক প্রার্থী নূর-উর রহমান মাহমুদও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত।

বৃহস্পতিবার নির্বাচনি প্রচার শেষ হয়েছে। শেষ দিনের প্রচারেও তিনজন প্রার্থী ভোটের দিনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ নির্বাচনে তাহসীন বাহার সূচনার পক্ষে প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে। ভোটের দিন প্রতিপক্ষের ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে না যান সেজন্য ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। 

মনিরুল হক সাক্কু বৃহস্পতিবার নগরীর ১২নং ওয়ার্ডে গণসংযোগের সময়ে বলেন, সংসদ-সদস্য বাহাউদ্দিন কন্যা মাঠে পেশিশক্তি প্রদর্শন করছে। ভোটারদের কেন্দ্রে না যেতে ভয় দেখাচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না। তাদের এমন মারমুখী অবস্থানে ভোটারদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। 

আরেক প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বৃহস্পতিবার গণসংযোগের সময়ে অভিযোগ করে বলেন, তাহসীন বাহার সূচনার কর্মী-সমর্থকরা ভোটের মাঠে পেশিশক্তি দেখাচ্ছে। ভোটের মাঠে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের কেন্দ্রে না যেতে হুমকি দিচ্ছে। 

নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম নগরীর চর্থা এবং থিরাপুকুরপাড় এলাকায় গণসংযোগ চালানোর সময়ে বলেন, আমাদের তিনজন প্রার্থীর একই শঙ্কা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ এখনো নিশ্চিত হয়নি। একজন প্রার্থী চেষ্টা করছে যেন ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে না আসে। ওই প্রার্থী জয় ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাহসীন বাহার সূচনা। 

তিনি বলেন, অন্য সব প্রার্থী যেসব অভিযোগ করছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন। আমাদের সব কার্যক্রম মিডিয়া, প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশন ফলো করছে। ওইসব প্রার্থী ভোটারদের সাড়া না পেয়ে উলটাপালটা কথা বলছেন।

নির্বাচন নিয়ে তিন প্রার্থীর শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন বৃহস্পতিবার বলেন, প্রার্থীদের শঙ্কার কথা আমিও শুনেছি।

ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করে মাইকিং করা হয়েছে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আমরা কাজ করছি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ সদস্য মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব পদক্ষেপ নিয়েছি। 

এছাড়া প্রার্থীদের সব অভিযোগ আমলে নিয়ে নির্বাচন কমিশন আমাদেরকে যে দিকনির্দেশনা দিয়েছে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!