বরিশাল: সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে রেখে মাত্র আড়াই মাস আগে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এম ভি আবদুল্লাহর নাবিক হিসেবে জয়েন করেছিলেন বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারাকান্দি ইউনিয়নের উপারের পাড় গ্রামের আলী হোসেন (২৬)।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজটি।
জিম্মি করা হয় জাহাজে থাকা ২৩ নাবিককে যাদের মধ্যে রয়েছেন বানারীপাড়ার মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. আলী হোসেন।
তিনি উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারেরপাড় গ্রামের এমাম হোসেনের ছোট ছেলে। জলদস্যুরা তাদের জিম্মি করার পর বিকাল ৩টার দিকে মুঠোফোনে স্ত্রীকে কল দিয়ে আলী হোসেন জানিয়েছেন, সোমালিয়ান জলদস্যুরা তাদের জাহাজ অ্যাটাক করে সবাইকে জিম্মি করেছে। মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় হয়তো মুক্তি পাওয়ার আগে আর যোগাযোগ হবে না। তাদের জন্য যেনো বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই দোয়া করেন।
এরপর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ কথা শোনার পর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মো. আলী হোসেনের পরিবার। ক্রন্দনরত সদ্য বিবাবিত স্ত্রী ইয়ামনি বলছেন, আগামী কুরবানীর ঈদে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল তার স্বামীর। পরিকল্পনা ছিল দুইজন মিলে ঈদের ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাবেন। জিম্মি হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই কাদছেন আলী হোসেনের গর্ভধারিণী মা নাসিমা বেগম। ছেলেকে ফিরে পেতে পড়ছেন দোয়া-দরুদ। তার ছেলেসহ জিম্মি সবাইকে স্বজনের কাছে ফিরিয়ে দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়র জন্য সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের জুলাই মাসে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় বিবাহ করেছেন আলী হোসেন। ছোটবেলা থেকেই অদম্য মেধাবী আলী হোসেন বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে ২০১৪ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে ভর্তি হন নারায়নগঞ্জের মেরিন একাডেমিতে, সেখানে ৪ বছর পড়াশোনা শেষ করে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরিতে জয়েন করেন ২০২০ সালে। সবশেষ গত আড়াই মাস আগে তিনি চাকরিতে জয়েনের উদ্দেশ্যে কেএসআর এম শিপিং লিঃ এর নিজস্ব খরচে সাউথ কোরিয়াতে গিয়ে এম ভি আবদুল্লাহ নামের ওই জাহাজে নাবিক (ওয়েলার) হিসেবে কাজ শুরু করেন।
এমএস