ঢাকা: মৌলভীবাজারের জুড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে জুড়ির পূর্ব গোয়ালবাড়ি গ্রামের মখলিছ মিয়ার বাড়িতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন ওই গ্রামের ফয়জুর রহমান (৫০), তার স্ত্রী শিরি বেগম (৪৫), মেয়ে সামিয়া বেগম (১৫) ও সাবিনা আক্তার (৯) এবং ছেলে সায়েম উদ্দিন (৭)। দগ্ধ অবস্থায় আরেক মেয়ে সোনিয়া বেগমকে (১২) সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ওই ঘটনার পর সেখানে গিয়েছিলেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সারোআর আলম। তিনি বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের পাঁচজন মারা গেছেন। স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
পূর্ব গোয়ালবাড়ি সড়কের এক পাশে টিনের চালা ও বেড়ার তৈরি ঘরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন ফয়জুর রহমান। তার ঘরের ওপর দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন টানানো। নিজের জমি না থাকায় রহমত আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির পতিত জমিতে ঘর তৈরি করেছিলেন ফয়জুর রহমান।
ফয়জুর রহমানের ঘরের পাশ ঘেঁষে পূর্ব ভাঙারপার জামে মসজিদ। ওই মসজিদের দারুল ক্বিরাতের শিক্ষক আনোয়ার আশরাফ সিদ্দিকী বললেন, আজ সকাল পৌনে ছয়টার দিকে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। ফজরের নামাজ পড়ার পর তিনি বিদ্যুৎ লাইনের একটি খুঁটিতে আগুন জ্বলতে দেখতে পান। তিনিসহ অন্য মুসল্লিরা পবিসের লোকজনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার চেষ্টা করেন।
আনোয়ার আশরাফ সিদ্দিকী আরও বলেন, এরপর তারা ফয়জুরের বাড়িতে গিয়ে দেখেন, ভেতর থেকে টিনের দরজা লাগানো। ডাকাডাকি করেও ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ মিলছিল না। পরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। একজনের ওপর আরেকজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত তারা ফায়ার সার্ভিস, সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগ ও জুড়ী থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানান। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে এলাকাবাসীর সহায়তায় লাশ বের করে আনেন। দগ্ধ সোনিয়াকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ওই ঘটনার পর পবিসের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান, মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সারোআর আলম, জুড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং প্রমুখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এআর