• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

দুঃখ-গ্লানি ভুলতে ফুল ভাসানো হলো জলে


রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি  এপ্রিল ১২, ২০২৪, ০২:২৬ পিএম
দুঃখ-গ্লানি ভুলতে ফুল ভাসানো হলো জলে

রাঙ্গামাটি: পুরনো বছরের দুঃখ গ্লানি মুছে ও নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে জগতের সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনায় নদীতে ফুল ভাসালো রাঙ্গামাটির পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানুষ।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে রাঙ্গামাটির রাজবন বিহার ঘাট, গর্জনতলী, কেরানি পাহাড়, আসামবস্তিসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় নানা বয়সের নারী-পুরুষ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে কলা পাতায় ফুল সাজিয়ে পুরনো বছরের সব দুঃখ, কষ্ট ও গ্লানি দূর করে নতুন বছর যাতে সুখ শান্তিতে কাটানো যায় সে উদ্দেশ্যে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল ভাসিয়ে দেন।

ভোরে মা গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে পাহাড়ে শুরু হয় বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু উৎসব। উৎসবে পাহাড়ি নারীরা বাহারি রঙের পিনন -হাদি আর ছেলেরা ধুতি -পাঞ্জাবি পরে কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর উৎসবে মেতে ওঠে। পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো বছরের সব গ্লানি মুছে গিয়ে নতুন বছর বয়ে আনবে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি- এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

কেরানি পাহাড়ে ফুল ভাসাতে আসা ননাবী চাকমা বলেন, বিজু আমাদের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের প্রধান ঐতিহ্যবাহী উৎসব। আজকে হচ্ছে বিজুর প্রথম দিন ফুল বিজু। এই ফুল বিজুতে আমরা পানিতে ফুল ভাসিয়ে মা গঙ্গা দেবীর কাছে আমরা সকলে প্রার্থনা করি পুরোনো বছরের সব দুঃখ, কষ্ট ও গ্লানি দূর করে নতুন বছর যাতে সুখ শান্তিতে কাটাতে পারি।

রিতা চাকমা বলেন, আজকে হচ্ছে আমাদের ফুল বিজু। আমি খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে ফুল নিয়ে আমাদের চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন হাদি পরে পানিতে ফুল ভাসাতে এসেছি। আমি ফুল ভাসিয়ে গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেছি নতুন বছরে আমরা যাতে সবাই সুখে শান্তিতে ভালো থাকতে পারি।

ফুল বিজুর দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে বয়ে চলা চেঙ্গী, মাইনী, কাচালং, কর্ণফুলীসহ পাহাড় থেকে নেমে আসা ছড়াগুলোতে ফুল ভাসায় পাহাড়িরা। 

উৎসবের প্রথম দিনে বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে এবং পবিত্র এই ফুল ভাসিয়ে দেয় পানিতে, তাই একে বলা হয় ফুল বিজু। পানিতে ফুল ভাসিয়ে বিশ্ব শান্তির মঙ্গল কামনায় গঙ্গা দেবীর নিকট প্রার্থনা করা হয়। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীরা যুগ যুগ ধরে এই উৎসব পালন করে আসছে।

আগামীকাল বিজু উৎসবের দ্বিতীয় দিন মূল বিজু। এই দিনে বাড়িতে বাড়িতে রান্না করা হয় পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী খাবার পাজনসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার আগত অতিথের পরিবেশন করা হয়। এর পরের উৎসবের তৃতীয় উৎসবের দিন হচ্ছে গজ্যাপজ্যা বিজু বা নববর্ষ উৎসব ওই দিনে বিশ্ব শান্তির কামনায় মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করা হয়।

আগামী ১৬ এপ্রিল রাঙ্গামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে মারমাদের জলকেলি উৎসবের মধ্যে দিয়ে সাঙ্গ হবে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!