বেনাপোল: ঈদের ছুটি শেষে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফিরতে শুরু করেছেন পাসপোর্ট যাত্রীরা। ফলে ভিড়ের চাপে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। ঈদের লম্বা ছুটিতে ভ্রমণ, চিকিৎসা, ব্যবসার কাজে ভারতে গিয়েছিলেন যাত্রীরা।
গত ১৬ এপ্রিল থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৮ হাজার ৮২০ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে ১৬ এপ্রিল ৪ হাজার ৯১০ জন ১৭ এপ্রিল ৫ হাজার ৩৬৩ জন, ১৮ এপ্রিল ৫ হাজার ১৪৯ জন ও আজ ১৯ এপ্রিল ৩ হাজার ৩২০ জন যাত্রী ফিরেছেন দেশে।
পুলিশ জানায়, ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৫ দিনের ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সরকারী ছুটির সঙ্গেঅনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও সরকারি ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্ধ ছিল। লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা,ব্যবসা, ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকেই ভারতে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে ভারত থেকে ফিরে আসছেন। তাই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। যাত্রীদের নিরাপত্তায় বন্দরে কাজ করছে আনসার, আমর্ড ব্যাটালিয়ন ও বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা।
ভারত থেকে ফিরে আসা মনির হোসেন বলেন, ‘ আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলাম। ভারতের পেট্রোপোলে লম্বা লাইনে যে ভিড় তাতে ইমিগ্রেশন সারতে প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ফলে অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছি। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।’
ভারত থেকে আসা অপর যাত্রী মামুনুর রহমান বলেন, ‘ঈদের টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলাম ভারতে আত্মীয় বাড়িতে। ছুটি শেষ করে দেশে ফিরছি। তবে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সীমাহীন দুর্ভোগ শিকার হতে হয়েছে আমাদের। লম্বা লাইনে দীর্ঘসময় রোদের মধ্যে দাড়িয়ে থাকায় আমার স্ত্রী ও বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কারণ ভারতের ইমিগ্রেশনের কাজ অত্যন্ত ধীরগতি।’
ভারত ফেরত অধিকাংশ যাত্রীরা বাংলাদেশে এসে অভিযোগ করেন, দূরপাল্লার বাসে সিট সংকটের কথা বলে বেশী ভাড়া আদায় করছে বিভিন্ন পরিবহণ। সাধারণ সময় ঢাকার ভাড়া পরিবহন ভেদে জনপ্রতি ননএসি ৫৫০-৭৫০ টাকা ও এসি ১০০০-১২০০ টাকা হলেও এখন চাইছে নন এসি ৮০০ টাকা ও এসি ১৫০০-২০০০ টাকা। দেশে ফেরার পথে টাকা কম থাকায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন অনেক যাত্রীরা।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান বলেন, ‘বেনাপোল দিয়ে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত যাতায়াত করেন প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্ট যাত্রী। ভ্রমণকর বাবদ সরকারের আয় হয় ১৫০ কোটি টাকা।’
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্র্যাফিক) রেজাউল করিম বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে গত এক সপ্তাহে হাজার হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে যান। ছুটি শেষ হওয়ায় ভারত থেকে যাত্রীরা দেশে ফিরতে শুরু করেছে। ফলে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। বন্দরের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বিশ্বাস জানান, ঈদের লম্বা ছুটি কাটিয়ে গত ৪ দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভ্রমণ শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন ১৮ হাজার ৮২০ জন যাত্রী। যাত্রীদের চাপ বেড়েছে, যাত্রীদের দ্রুত পাসপোর্টের কাজ সম্পন্ন করতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছে অফিসাররা।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :