হোসেনপুর: কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি পরিচিত ফুল। বাঙালির কবিতা, সাহিত্য, গান ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা নানা ভঙ্গিমায় এসেছে। ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়ার তাৎপর্য।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে কৃষ্ণচূড়ার মনকাড়া গাছ। সবুজ সবুজ চিকন পাতা। ফাঁকে ফাঁকে লাল লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল। দেখলেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। মন নেচে ওঠে আনন্দে।এই গাছ চমৎকার পাতা পল্পব এবং আগুনলাল কৃষ্ণচূড়া-ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ। কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল-কমলা-হলুদ ফুল এবং উজ্জ্বল সবুজ পাতা একে অন্যরকম দৃষ্টিনন্দন করে তোলে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ভূমি অফিসের সামনে থরে থরে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। সারিবদ্ধ কৃষ্ণচূড়া গাছে ফুটে থাকা ফুলের আগুনে রূপ মন ভরিয়ে দেয় পথচারীদের। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে শহরবাসীকে। সেই সৌন্দর্যের ডাকে দাবদাহ উপেক্ষা করে বিকালে শহরবাসী জড়ো হয়েছে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে। আশপাশে বসে সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপশি আড্ডায় মেতে উঠেছেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন রাস্তার পাশে দেখা মিলছে এই রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া গাছের। ফুলের রক্তিম জাগরণ পথচারীদের মুহূর্তের জন্য হলেও শিহরণ জাগায়। দুপুরের রোদে দেয় প্রশান্তির ছায়া।
হোসেনপুর ভূমি অফিসের সামনে প্রকৃতি যেন লাল গালিবে ঢাকা,কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম আভায় উদাসীন মন।কবি মনে দিয়ে যায় দোলা।
হোসেনপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে সভাপতি একেএম মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘প্রকৃতিতে এখন মনোমুগ্ধকর রঙ ছড়িয়েছে কৃষ্ণচূড়া। একসময় প্রচুর পরিমাণে কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখা যেত। গ্রীষ্মকালে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তুলত। কালের পরিক্রমায় আবাসন ব্যবস্থার কারণে অনেক গাছ কাটা পড়েছে। সৌন্দর্য উপভোগ ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ অভিযান চালাতে হবে।কয়েক বছর আগেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে অসংখ্য কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। দিন দিন কমে গেছে। গ্রীষ্মকালের বাহার কৃষ্ণচূড়া ফুল। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।’
ছড়াকার ও সাংবাদিক মাহফুজ রাজা বলেন, ‘পাতা ছাড়িয়ে ফুলে ফুলে ছেয়ে থাকা এ রূপ দেখে কখনো মনে হয় গাছে বুঝি আগুন লেগেছে। কেবল উপরেই নয়, ফুল ঝরে সে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তার দু'পাশেও। যা প্রকৃতিপ্রেমীদের চোখ মন ভরিয়ে দেয়। আবেশ ছড়িয়ে যায় অদ্ভুত এক ভালো লাগার।’
এমএস