• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বরিশালে সাংবাদিকদের উপর হামলা, ইউপি সদস্য গ্রেফতার


বরিশাল প্রতিনিধি মে ২, ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম
বরিশালে সাংবাদিকদের উপর হামলা, ইউপি সদস্য গ্রেফতার

বরিশাল: বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছেন একাধিক সংবাদকর্মী। যার মধ্যে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তিনজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

এদিকে বুধবার রাতে সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নের চন্ডিপুরে ওই হামলার ঘটনায় বৃহষ্পতিবার (০২ মে) কোতোয়ালি মডেল থানায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী মো. বেলাল হোসেন বরিশাল নগরীর চাঁদমারী এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি দৈনিকের সাংবাদিক।

মামলায় জাগুয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জামাল সর্দার, বর্তমান ইউপি সদস্য সুজন হাওলাদার, তাদের অনুসারী শাহকামাল, আসাদুল, কবির হাওলাদার, মিরাজ ফকির, জালাল ফকির, রমিজ হাওলাদার, সুমন হাওলাদার, সাইদুল সিকদার, লিটন মল্লিকসহ ১২ জনকে নামধারী এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।

যে মামলায় বরিশাল সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) সুজন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে জাগুয়া ইউনিয়নের পাঁচগাও চন্ডিপুর এলাকার আ.শুককুর আলী হাওলাদারের ছেলে ও আনারস প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালীন সময়ে আনারস ও মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে এসময় সংবাদ পেয়ে বুধবার রাত পৌনে ৯ টার দিকে চন্ডিপুর মোহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিধ্যালয়ের সামনে যান বাদীসহ অন্য সাংবাদিকরা।

তারা (সাংবাদিকরা) সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ওই মারামারির ঘটনায় সেলিম খান নামে একজন আহত হয়েছেন। সংবাদের জন্য ঘটনার বিস্তারিত জানতে তথ্য সংগ্রহকালে এজাহারনামীয় ১২ জন আসামী সহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জন তাদের (সাংবাদিকদের) ওপর হামলা চালায়। এসময় রামদা, দা, লোহার পাইপ, রড, লাঠি দিয়ে সাংবাদিকদের ওপর এলোপাথারি হামলা চালায়। এসময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভাংচুর করার পাশাপাশি মোবাইল লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।

পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে ঘটনাস্থল থেকে মামলার বাদীসহ আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

বাদী মো. বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনিসহ দৈনিক ভোরের কাগজের ফটো সাংবাদিক আব্দুর রহমান ও  ও স্থানীয় দৈনিকের রিপোর্টার এইচ এম সোহেল হাসপাতালের সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই তিনি মামলার তিন নম্বর সাক্ষীর মাধ্যমে থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।

দৈনিক ভোরের কাগজের ফটো সাংবাদিক আব্দুর রহমান জানান, হামলার ঘটনা শুনে আমরা বেশ কয়েকজন সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে যাই। তখন আমরা জানতে পারি মোটরসাইকেল প্রতীকের অফিসে হামলা ভাংচুরের পর আনারস প্রতীকের সমর্থকরা উল্টো তাদের অফিস নিজেরা ভাংচুর করে মোটরসাইকেলের সমর্থকদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, এমন একটি বক্তব্য আমি ক্যামেরাবন্দি করতেছিলাম তখনই আনারস প্রতীকে সমর্থকরা হঠ্যাৎ দা দিয়ে আমার মাথায় একটি কোপ দেয়। আমার উপর হামলার পরে আমার অন্যান্য সহকর্মীরা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা করা হয়।

এদিকে বৃহষ্পতিবার সাকালে মামলার এজাহার নামীয় আসামী সুজন হাওলাদারকে চন্ডিপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. রেজাউল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তারকৃতকে দুপুরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।  হামলাকারী বাকীদের গ্রেপ্তারেও চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.টি. এম, আরচিুল হক জানিয়েছেন, মামলার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। সেইসাথে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!