চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিনা ধান-২৫ এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদে বাম্পার ফলন হওয়াতে আশার আলো দেখছেন স্থানীয় কৃষকেরা। নতুন উদ্ভাবিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বোরো জাতের বিনা ধান-২৫। বাসমতি চালের বিকল্প হিসাবে এ ধান চাষাবাদে চিকন চাল আমদানি কমাতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি অফিস।
মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে বিনা ধান ২৫ জাতের প্রদর্শনীতে সরেজমিনে দেখা যায়, ধানের শীষে সোনালী আভা। সবগুলো ধান গাছ সোজা সারি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ধান গাছের প্রতি শীষে ধরে আছে চিকন ধান। এক সপ্তাহ পরে ধান কাটার উপযোগী হবে। দুই একর জমিতে জামালপুর গ্রামের বাবুল কান্তি মজুমদার, পলাশ দত্ত, রাজু মজুমদার, সুমন চন্দ্র দে ও কমল কান্তি দে পার্টনারশিপ প্রকল্পের আওতায় এই পাঁচ কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে বিনা ধান ২৫ চাষ করেছেন। ধানের ফলন দেখে কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি দেখা গেছে।
কৃষক পলাশ দত্ত জানান, আমরা কৃষি প্রণোদনা পেয়ে দুই একর জমিতে পরীক্ষামূলক বিনা ২৫ ধানের আবাদ করেছি। এই প্রথম নতুন জাতের বিনা ধান-২৫ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান গাছের শিষ প্রতি ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টি ধান ধরেছে। অন্যান্য জাতের তুলনায় বিনা ধান-২৫ জাতে শীষ প্রতি ধানের পরিমাণও বেশি। বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ মণ ধান উৎপাদনের পাশাপাশি ধানটির বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় আমরা অধিক লাভের আশাবাদী।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার এ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনরশিপ এ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহযোগিতায় চলতি মৌসুমে মিরসরাইয়ে প্রথমবারের মতো ক্লাস্টার প্রযুক্তি প্রদর্শনী (বোরো) বিনা ধান ২৫ আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের জামালপুর গ্রাম, মিরসরাই সদর ইউনিয়নের তালবাড়িয়া ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে এই জাতের ধানের প্রদর্শনী করা হয়েছে। প্রতিটি প্রদর্শনীতে পার্টনারশীপে একাধিক কৃষককে ২ একর জমির জন্য ২০ কেজি করে মাদার সিড প্রণোদনা দেয়া হয়। পরীক্ষামূলক আবাদে এবার সুবিধাভোগী কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে এই ধানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছিল।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, বিনা ধান ২৫ জাতটি মিরসরাইয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ধান কাটা হবে। উচ্চ ফলনশীল এই ধান প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এবং সুগন্ধি। এই ধানটি আমাদের দেশে বাসমতী চালের বিকল্প পণ্য হতে পারে। রোগব্যাধি কম হওয়ায় বীজ সংরক্ষণ করার সুবিধা রয়েছে। কৃষিকে বহুমুখীকরণ ও কৃষকদের ভালো লাভের মাধ্যমে কৃষিকাজে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এই জাত আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
জেআই/এসআই
আপনার মতামত লিখুন :