• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের দশ গ্রামের মানুষের গলার কাটা এই সেতুটি


ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি মে ১৬, ২০২৪, ১১:২৭ এএম
লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের দশ গ্রামের মানুষের গলার কাটা এই সেতুটি

ছবি : প্রতিনিধি

পাবনা: নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর। দেড় বছর আগেই শেষ হয়েছে মেয়াদ। ঠিকাদার শুধু সেতুর দুটি পিলার ও দুই পাশের সংযোগ সড়কের গাইড ওয়াল তৈরি করেছে। সেতুটি নির্মাণ শুধু ছয় মাস পর থেকে কাজ বন্ধ। প্রায় তিন বছরে কয়েকটি পিলার ছাড়া কোন কাজ হয়নি। এরইমধ্যে ৫৫ ভাগ বিল তুলে নিয়ে ঠিকাদার গায়েব হয়েছে। তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঈশ্বরদীর দূর্গম চরাঞ্চলের ১০ গ্রামের মানুষ। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় নির্মাণাধীন সেতুর রডে মরিচা ধরে গেছে। সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় ঈশ্বরদীর লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুরলিয়া, চরগরগরি, মাধপুর, চরকাতরা, চরপ্রতাপপুর, কামালপুরসহ আশপাশের প্রায় ১০ গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বর্ষায় তাঁরা নৌকায় ঘাট পার হতে পারলেও শুষ্ক মৌসুমে পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন।

২০২১ সালে ৪ এপ্রিল আট কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুড়লিয়া গ্রামে পদ্মার শাখা নদীর ওপর ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকৌশল অফিস এরইমধ্যে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের সময় বাড়িয়েছে। ঠিকাদারের কাজে গাফিলতির জন্য উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে দায়ি করছেন এলাকাবাসী।

কৃষক আরব আলী বলেন, নদীর ওপারে আমার বেশ কয়েক বিঘা জমি রয়েছে। প্রতিদিনই নদী পাড়ি দিয়ে ওপারে যেতে হয়। বর্ষাকালে গামছা ও হাফপ্যান্ট পরে সাঁতরে নদী পার হতে গিয়ে দুর্ভোগের শেষ থাকেনা।

এমন পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঈশ্বরদীর দূর্গম চরাঞ্চলের ১০ গ্রামের মানুষ। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় নির্মাণাধীন সেতুর রডে মরিচা ধরে গেছে। সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় ঈশ্বরদীর লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুরলিয়া, চরগরগরি, মাধপুর, চরকাতরা, চরপ্রতাপপুর, কামালপুরসহ আশপাশের প্রায় ১০ গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বর্ষায় তাঁরা নৌকায় ঘাট পার হতে পারলেও শুষ্ক মৌসুমে পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন।

২০২১ সালে ৪ এপ্রিল আট কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুড়লিয়া গ্রামে পদ্মার শাখা নদীর ওপর ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকৌশল অফিস এরইমধ্যে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের সময় বাড়িয়েছে। ঠিকাদারের কাজে গাফিলতির জন্য উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে দায়ি করছেন এলাকাবাসী।

কৃষক আরব আলী বলেন, নদীর ওপারে আমার বেশ কয়েক বিঘা জমি রয়েছে। প্রতিদিনই নদী পাড়ি দিয়ে ওপারে যেতে হয়। বর্ষাকালে গামছা ও হাফপ্যান্ট পরে সাঁতরে নদী পার হতে গিয়ে দুর্ভোগের শেষ থাকে।

স্থানীয় ইমরান মন্ডল জানান, সেতুটি নির্মাণ শুরুর ছয় মাস পর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রায় তিন বছরে কয়েকটি পিলার ছাড়া কোনো কাজ হয়নি। উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সাথে যোগসাজেশ থাকায় ঠিকাদার নির্মাণ কাজে গাফিলতি করছে।

পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে উৎপাদিত সবজিসহ অন্যান্য ফসল এই পথ দিয়ে ঈশ্বরদী ও পাবনা শহরে আনা-নেওয়া করা হয়। সেতু না থাকায় বর্ষাকালে ঝুঁকি নিয়ে নৌকা ও ভেলায় চড়ে নদী পারাপার হতে হয়। শুকনো মৌসুমে নদীর ঢালু পাড় দিয়ে গরু/মহিষের গাড়ি ছাড়া আর কোনো যানবাহন চলতে পারে না। ফসল আনা-নেয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে লক্ষীকুন্ডার কয়েকটি গ্রাম ছাড়াও পদ্মার তীরবর্তী পাবনা সদর উপজেলার চরভবানীপুর গ্রাম ও কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের সাত গ্রামের মানুষের যাতায়াতের পথ সুগম হবে বলে এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন।

সেতু নির্মাণ বিষয়ে ঈশ্বরদী এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, যশোরের আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড সেতু নির্মাণের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হলেও সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন ফুল মিয়া, জয়, নুরুজ্জামান খোকনসহ কয়েকজন ঠিকাদার। ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সেতুটি নির্মাণের সময় নির্ধারণ হয়। এরমধ্যে ঠিকাদার সেতুর দুটি পিলার ও দুই পাশের সংযোগ সড়কের গাইড ওয়াল তৈরি করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। মেয়াদ শেষ হলেও ঠিকাদার আর কাজে আসেননি। পরে দুই দফা মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। ইতোমধ্যে ঠিকাদার কাজের ৫৫ ভাগ বিলও তুলে নিয়েছেন।
 
এ বিষয়ে কথা বলতে মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজনের দাবি, ঠিকাদার সেতুটির ৩০ শতাংশ কাজও শেষ করেননি। এর মধ্যেই এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারকে ৫৫ শতাংশ কাজের বিল দিয়েছে। একারণেই ঠিকাদার আর কাজে আসছেন না।

লক্ষীকুন্ডা ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার তরিকুল ইসলাম জানান, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে যান।

স্থানীয় ঠিকাদার ফুল মিয়া জানান, খুব শিগগির সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে। ঈশ্বরদী ও পাবনা এলজিইডি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবির বলেন, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদাররা কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। কাজের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন। আশা করছি, খুব শিগগির আবার কাজ শুরু করবেন।

পাবনা জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুর রহমান মন্ডল দাবি করেন, সেতুটির ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারকে ৫৫ শতাংশ কাজের বিল দিয়েছেন নিশ্চিত করে তিনি বলেন, শুনেছি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কাজে আসছেন না। আমরা তাদের আর সময় দেব না। খুব দ্রুতই নির্মাণকাজ শেষ করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। দ্রুত কাজ শুরু না করলে ব্যবস্থা  নেওয়া হবে।

এএ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!