ঠাকুরগাঁও: ইসলাম ধর্মের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। এই কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে পশু পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁওয়ে খামারীরা। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতি অবলম্বন করেই দেশীয় জাতের পশু পালন করছেন তারা। ভালো দাম পাওয়ার আশায় দিন-রাত পশুগুলো পরিচর্যা করছেন গৃহস্থরা।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের তথ্য সূত্রে জানা যায়, আসন্ন কোরবানী ঈদের জন্য প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার পশু বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে পালন করেছেন খামারী ও গৃহস্থরা। এর মধ্যে ৭৩ হাজার গরু ও ৫৭ হাজার ছাগল পালন করা হয়েছে। যা চলতি বছরের কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা ছাঁড়িয়েও দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো সম্ভব বলে জানান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদ।
সদর উপজেলার শিবগঞ্জ এলাকার বাবলু খামারের তত্ত্বাবধায়ক হাসেম আলী জানায়, আমাদের এখানে দেশী জাতের প্রায় অর্ধশতাধিক গরু রয়েছে। এই গরুগুলো দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করে আমরা কোরবানির বাজারে ছেড়ে দিবো তাই খুব ব্যস্ত সময় কাটছে।
তিনি আরও জানান, এবার আমরা একটু শঙ্কায় আছি গত বছরের তুলনায় এ বছর ফিট থেকে শুরু করে সব ধরনের গো খাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। আমাদের খামারের প্রতিটি গরুর জন্য দৈনিক ১২০ টাকা করে খরচ হয়। আমরা একটা গরু ৫৫ হাজার টাকা করে কিনেছি আশা করছি ন্যায্য মূল্য পেলে আমাদের ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে গরু প্রতি লাভ হবে।
জেলা শহরের বড় খোঁচাবাড়ী এলাকার পশু পালনকারী সোহেল রানা বলেন, নিয়মিত আমি বড় খাঁচাবাড়ি বাজারে দেখছি যে চাহিদার তুলনায় অধিক গরু বাজারে উঠছে দাম দরে বণাবনী না হওয়ার কারণে অনেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
আর আমাদের পশু পালনকারী ও খামারিদের মধ্যে একটা শঙ্কা কাজ করছে চাহিদার তুলনায় অধিক পশুপালন হয়েছে জেলায়। এরপরেও যদি ভারত থেকে পশু আমদানি করা হয় তাহলে আমাদেরকে ব্যাপক লোকসানের মধ্যে পড়তে হবে। আমাদের দাবি যাতে করে বর্ডার এলাকা গুলোতে করা নিরাপত্তা দেয়া হয়। ভারত যদি থেকে গরু আমদানি না করা হয় তবে আমরা ন্যায্য মূল্য পেতে পারি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের খামারী মো: ইউনুস আলী জানান, কোরবানিকে সামনে রেখে আমরা খুব ব্যস্ত সময় পার করছি। তবে, গত বছরের তুলনায় এবছর গো খাদ্যের দাম অনেক বেশি যদি কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাই তাহলে খুব একটা লাভ হবে না।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো: আবুল কালাম আজাদ বাণিজ্য প্রতিদিন কে জানান, গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান থেকে আমরা দেখেছি আমাদের জেলায় ৮০ থেকে ৮৫ হাজার কোরবানির পশু প্রয়োজন হয়। তবে এবছর আমাদের ১ লক্ষ ৩০ হাজার পশু পালন করা হয়েছে। যা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এজন্য আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি যাতে বর্ডার এলাকা গুলো থেকে অনুপ্রবেশ কারীরা কোনভাবেই অবৈধভাবে পশু আমদানি করতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ করেছি।
এসআই